E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রবাস জীবনের খেরো খাতা-০২

২০১৭ মে ০৯ ১৭:২৬:৫৯
প্রবাস জীবনের খেরো খাতা-০২

প্রবীর বিকাশ সরকার


২০০৯ সালে মাসিক দশদিক ম্যাগাজিনে একটি ছোট্ট ফিচার লিখেছিলাম। সেটার একটা কপি রেখে দিয়েছিলাম ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে।

অবশ্য মূল প্রবন্ধটি আছে আমার ‘রবীন্দ্রনাথ এবং জাপান: শতবর্ষের সম্পর্ক’ গ্রন্থে। এখানে সেই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ফিচার লিখেছিলাম। বিষয়টি ছিল বিদেশিদের রবীন্দ্রভাবনা বা রবীন্দ্রগবেষণা। বিদেশি রবীন্দ্রভক্তরা যেভাবে তাঁকে ভেবেছেন, লিখেছেন তার সঙ্গে আমাদের ভিন্নতা রয়েছে বইকি! তবে খুব কম বিদেশিরই মূল্যায়ন হয়েছে ভারতে বা বাংলাদেশে। তা ছাড়া আর ক’জন বিদেশিভক্তের কথাই বা আমরা জানি!

এশিয়ার তিনটি দেশ জাপান, চীন এবং কোরিয়াতে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে শতবর্ষ ধরেই গবেষণা হয়ে আসছে। ১৯২৯ সালে জাপানে বসে রবীন্দ্রনাথ কোরিয়ায় আলোড়ন তুলেছিলেন সেই দেশটিকে স্বচক্ষে না দেখেই ছোট্ট একটি কবিতার মাধ্যমে! কবিতাটির নাম The Lamp of the East. সেই কবিতাটি আজকে কোরিয়ার স্কুলের পাঠ্যবইতে অন্তর্ভুক্ত।

প্রকৃতপক্ষে, ১৯১৬ সাল থেকেই কোরিয়ায় রবীন্দ্রভক্তের আবির্ভাব ঘটে। তারা ছিলেন জাপান প্রবাসী কোরিয়ো ছাত্র। তারা ১৯১৬ সালে রবীন্দ্রনাথ যখন প্রথম জাপানে আসেন তাঁর বক্তৃতা শুনে অভিভূত হয়েছিলেন! এশিয়ায় প্রথম নোবেল বিজয়ী ভাবতেই পারা যায় না! কতিপয় ছাত্র কবিকে কোরিয়ায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ব্যস্ততার কারণে তাদের অনুরোধ রক্ষা করতে পারেননি।

১৯৬১ সালে জাপানে ‘টেগোর মেমোরিয়াল অ্যাসোসিয়েশন’ গঠন হয়েছিল। এরপর ১৯৭১ সালে বিশ্বভারতীর অধ্যাপক জাপানশীর্ষ রবীন্দ্রগবেষক কাজুও আজুমার উদ্যোগে ‘টেগোর সমিতি-জাপান’ গঠিত হয়ে আজকে তার পরিবর্তিত নাম ‘জাপান-ভারত টেগোর সংস্থা’।

অধ্যাপক কাজুও আজুমার সমসাময়িক কোরিয়ান রবীন্দ্রভক্ত ও গবেষক শ্রীমতী কিম ইয়াং শিক কর্তৃক ১৯৮১ সালে ‘রবীন্দ্র সংস্থা’ গঠিত হয়েছে। অধ্যাপক আজুমার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল। আজুমা স্যারের মতো রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর রচনা নিয়ে ব্যাপক গবেষণা ও বিপুল কর্মকাণ্ড শ্রীমতী কিমের না থাকলেও প্রচুর কাজ তিনি করেছেন কোরিয়ায়। তিনি এই অবদানের জন্য ‘পদ্মশ্রী’ অর্জন করেছেন ভারত সরকারের। কিন্তু অধ্যাপক আজুমাকে কেন এই সম্মানে ভূষিত করা হলো না সে এক অনুত্তর বিস্ময় আমার কাছে! চরম অবহেলাই করা হয়েছে তাঁর প্রতি।

তারপরও ক’জন বিদেশি রবীন্দ্রগবেষককে ভারত বা বাংলাদেশ সম্মানিত করেছে? বাংলা একাডেমী তো বিদেশিদের পুরস্কৃতই করে না, নিয়ম নাকি নেই! একুশ শতকে এটা ভাবাই যায় না!

লেখক : জাপান প্রবাসী।

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test