E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ফেসবুক নিয়ে জাকারবার্গের পরিকল্পনা

২০১৪ অক্টোবর ২৮ ২০:০৭:০৩
ফেসবুক নিয়ে জাকারবার্গের পরিকল্পনা

নিউজ ডেস্ক, ঢাকা : ফেসবুক বিশ্বের সকল মানুষকে ইন্টারনেট সুবিধার আওতায় আনতে বিলিয়ন ডলার খরচ করতে প্রস্তুত। ফেসবুকের ভবিষ্যত্ লক্ষ্য সম্পর্কে এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে।

মেক্সিকো সিটিতে মেক্সিকান ধনকুবের কার্লোস স্লিম আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী জাকারবার্গ বলেন, ‘আমরা যে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছি তা হচ্ছে বিশ্বের সব মানুষের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করা।’ জাকারবার্গ বলেন, ‘আগামী এক দশকে ফেসবুক যদি বিলিয়ন ডলার খরচ করে সবার কাছে ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছাতে পারে, আমি বিশ্বাস করি দীর্ঘ মেয়াদে তা ফেসবুকের পাশাপাশি বিশ্বের সবার কাজে আসবে।’

ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালের শেষ নাগাদ ৩০০ কোটি মানুষের কাছে ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে যাবে। বর্তমানে ইন্টারনেট সুবিধায় আওতায় থাকা প্রায় অর্ধেক মানুষই ফেসবুক ব্যবহার করেন। বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৩০ কোটিরও বেশি। গত বছরে এশিয়া ও আফ্রিকার ইন্টারনেট সুবিধাবঞ্চিত প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষে ইন্টারনেট অর্গানাইজেশন নামের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে ফেসবুক।

জাকারবার্গ বলেছেন, ‘যখন সবার কাছে ইন্টারনেট থাকবে তখন আমাদের ব্যবসা আরও ভালো হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

জাকারবার্গের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

ফেসবুক তৈরি করেই বসে নেই মার্ক জাকারবার্গ। এখন তিনি প্রযুক্তি শিল্পে ব্যাপক এক পরিবর্তন আনার বিষয়ে ভাবছেন। নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জাকারবার্গের এ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানানো এ বছরের ২৮ থেকে ২৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় অনুষ্ঠিত ‘ওপেন কম্পিউট প্রোজেক্ট’ নামের এক সম্মেলনে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ তাঁর ভবিষ্যত্ পরিকল্পনা নিয়ে বলেন। প্রযুক্তি শিল্পে কীভাবে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা সম্ভব, বিষয়টি তুলে ধরেন ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা।

জাকারবার্গ তাঁর পরিকল্পনা সম্পর্কে জানান, যেখানে পৌঁছানোর লক্ষ্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের সাইট তৈরি করেছিলেন, গত এক দশকে সেখানে নিয়ে গেছেন ফেসবুককে। তাঁর বাকি লক্ষ্যও অর্জন হওয়ার পথে। তবে এখনই থেমে যেতে চান না তিনি।

ফেসবুকের পর এখন হাই-টেক ব্যবসাগুলোতে বিশাল পরিবর্তন আনার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। এখনকার যুগে শুধু ডেটা সেন্টারের ওপর নির্ভরশীল ব্যবসাগুলোকে পরিবর্তন আনতে কাজ করবেন তিনি। জাকারবার্গ মনে করেন, প্রযুক্তি শিল্পে পরিবর্তন আনতে তিনি কোনো প্রতিষ্ঠানের একচ্ছত্র আধিপত্যকে দূর করতে পেরেছেন। এ কাজে সাহায্য করেছে ওপেন সোর্স।

জাকারবার্গ বলেন, ফেসবুক পরিবেশ-বান্ধব জ্বালানি ব্যবহারের যে প্রকল্প হাতে নিয়েছে, তাতে পরিবেশের সুরক্ষার পাশাপাশি শক্তির অপচয় রোধ হচ্ছে। বায়ুশক্তি ও জলবিদ্যুত্ ব্যবহার করে গত বছর ফেসবুক বড় অঙ্কের অর্থ সাশ্রয় করেছে। এ ক্ষেত্রটিতে জাকারবার্গ আরও বেশি গুরুত্ব দিতে চান। ইন্টারনেট অর্গানাইজেশন প্রকল্প সম্পর্কে জাকারবার্গ বলেন, বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট সাশ্রয়ী করতে তাঁর এই উদ্যোগের সঙ্গে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান স্যামসাং, মার্কিন সেমিকন্ডাক্টার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কোয়ালকম, এরিকসন, মিডিয়াটেক, নকিয়া ও অপেরা। এ প্রকল্পের অধীনে প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতাপ্রতিষ্ঠানগুলো সাশ্রয়ী দামে উন্নত প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট সুবিধার স্মার্টফোন তৈরি করবে।

এ ছাড়াও সংস্থাটি বর্তমানে ওয়্যারলেস সিস্টেম নতুনভাবে তৈরির পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করছে। যেভাবে সার্ভার ও নেটওয়ার্ক নিয়ে গবেষণা করছে, তেমনি ফোন কোম্পানিগুলোর সঙ্গে মিলে নতুন ওয়্যারলেস সিস্টেম নিয়ে কাজ করছে ফেসবুক।

জাকারবার্গ জানান, বর্তমানে ফেসবুকের আকার আর মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতার মাপকাঠিতে দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেছে বলেই মনে করেন তিনি। তাঁর মতে, ১০ বছর আগে যখন হার্ভার্ডের ছোট ডরমেটরিতে ফেসবুক যাত্রা শুরু করেছিল, তখনো এত বড় স্বপ্ন দেখেননি তিনি। তিনি ভেবেছিলেন, ‘আমার যেটুকু তৈরি করার দরকার করে দিয়েছি, বাকিটা নতুন কেউ এসে এগিয়ে নেবে। কিন্তু সেই ভাবনায় আটকে থাকেননি তিনি। যা তিনি কল্পনাও করেননি ফেসবুক আজ সেখানে দাঁড়িয়ে আছে।

(ওএস/পি/অক্টোবর ২৮, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test