E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গ্রহের রং বেছে এ বার প্রাণ খুঁজবেন বিজ্ঞানীরা!

২০১৬ মে ২৮ ১৩:০৯:৩৪
গ্রহের রং বেছে এ বার প্রাণ খুঁজবেন বিজ্ঞানীরা!

ডেস্ক :কোন কোন ভিন গ্রহে প্রাণ রয়েছে বা রয়েছে প্রাণ-সৃষ্টির উপাদান, তা জানার জন্য গোটা মহাকাশ ঢুঁড়ে বেড়ানোর কাজটা বোধহয় এ বার একটু সহজ হতে চলেছে!

এ বার রং দেখেই চেনা যাবে, বোঝা যাবে ভিন গ্রহদের জাত। বিচার করা যাবে তাদের ঠিকুজি-কোষ্ঠী। বহু বহু দূর থেকেই ঠাওর করা যাবে সেই ভিন গ্রহে প্রাণ রয়েছে কি না, বা রয়েছে কি না প্রাণ-সৃষ্টির উপাদান (বায়ো-সিগনেচার)। এমনকী, সেই সেই ভিন গ্রহে কোন কোন ধরনের অণুজীব বা অণু-উদ্ভিদ (মাইক্রো-অরগ্যানিজম) রয়েছে, মোটামুটি ভাবে সেটাও আন্দাজ, অনুমান করা যাবে।

আর তা করার জন্য আলাদা ভাবে এই প্রথম বানানো হয়েছে একটি ডেটা-বেস। আমাদের এই বাসযোগ্য গ্রহে রয়েছে যে ১৩৭ টি প্রজাতির অণুজীব ও অণু-উদ্ভিদ, তারই ভিত্তিতে বানানো হয়েছে ওই যুগান্তকারী ডেটা-বেস। সূর্যের আলো ওই প্রজাতির অণুজীব ও অণু-উদ্ভিদরা কী ভাবে কতটা প্রতিফলিত করতে পারে, তারই ভিত্তিতে বানানো হয়েছে ওই ডেটা-বেস। যেটি বানিয়েছেন মার্কিন মুলুকের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পেল ব্লু ডট্স ইনস্টিটিউটের অধিকর্তা, বিশিষ্ট জ্যোতির্বিজ্ঞানী লিসা ক্যালটেনেগার ও অনাবাসী ভারতীয়, ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটের জ্যোতির্বিজ্ঞানী সিদ্ধার্থ হেগড়ে।

সিদ্ধার্থ বলছেন, ‘‘আমরা দেখেছি, বিভিন্ন অণুজীব সূর্যালোককে বিভিন্ন আলোর তরঙ্গে প্রতিফলিত করে। তার ফলে, কখনও সেই প্রতিফলিত আলোর তরঙ্গের রং হয় লাল বা নীল, কখনও-বা খয়েরি, সবুজ বা বাদামি। ওই প্রতিফলিত আলোর সূত্র ধরেই বোঝা যায়, সেই জায়গায় কোন কোন অণুজীব বা অণু-উদ্ভিদের অস্তিত্ব রয়েছে বা তাদের প্রাধান্য রয়েছে। যেমন, আমাদের পৃথিবীকে যদি ভিনগ্রহীরা মহাকাশের কোনও প্রান্ত থেকে দেখে, তা হলে তারা দেখবে আমাদের এই বাসযোগ্য গ্রহটির রং নীলাভ সবুজ। আমাদের গ্রহের অনেকটা অংশ জুড়ে থাকা সবুজ গাছপালা, উদ্ভিদের জন্যই রংটা সবুজ লাগে। আর এই গ্রহের রঙে যে নীল আভা থাকে, তার কারণ, সাগর-মহাসাগরের জলরাশি। তাই মহাকাশের অন্য প্রান্ত থেকে আমাদের পৃথিবীকে নীলাভ সবুজ দেখবে ভিনগ্রহীরা। ঠিক তেমনই, আমরাও ভিন গ্রহগুলোর রং-বেরং দেখে আন্দাজ-অনুমান করতে পারব, সেই সেই গ্রহে প্রাণ রয়েছে কি না। বা রয়েছে কি না প্রাণ-সৃষ্টির উপাদান বা ‘বায়ো-সিগনেচার’। আমরা এ-ও দেখেছি, একই প্রাণীর বিভিন্ন প্রজাতিরা যে আলোর প্রতিফলন ঘটায়, তারও ভিন্নতা রয়েছে। খুব সামান্য হলেও রয়েছে। তা আমাদের ডেটা-বেসের বর্ণালীতে ধরা পড়ে। গ্রহের পিঠ থেকে ঠিকরে বেরিয়ে আসা আলোই গ্রহের বর্ণালী বা তার রং। তাকে আমরা যে রঙে চিনি, যে রঙে দেখি। যেমন, মঙ্গলের রং লাল। শনির রং নীলাভ। বৃহস্পতি কিছুটা হলদেটে। আমরা এখন আমাদের পৃথিবীর অণুজীবরা যে যে রঙের আলোর প্রতিফলন ঘটায়, তার সঙ্গে ভিন গ্রহগুলো থেকে ঠিকরে বেরিয়ে আসা আলোর মিল রয়েছে কি না, থাকলে কতটা, কতটা ফারাক রয়েছে, সেটাই খুঁজে বের করার চেষ্টা করব। যদি মিলে যায়, অন্তত এটা অনুমান করা যাবে, ওই ভিন গ্রহে কোন কোন ধরনের বা প্রজাতির অণুজীব রয়েছে। আমরা এটুকু দেখেছি, প্রত্যেকটি অণুজীবই আলাদা আলাদা রংয়ের (তরঙ্গ-দৈর্ঘ্যের) আলোর প্রতিফলন ঘটায়।’’

মুম্বইয়ের ‘টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ’ (টিআইএফআর)-এর বিশিষ্ট জ্যোতির্বিজ্ঞানী দেবেন্দ্র ঝা বলছেন, ‘‘যদি একই জায়গায় অনেক ধরনের বা প্রজাতির অণুজীব মিলেমিশে থাকে, তা হলে সে ক্ষেত্রে আলোর ওই বর্ণালী ততটা স্পষ্ট হবে না। তাতে কোন জায়গায় কোন কোন ধরনের প্রাণী কতটা পরিমাণে রয়েছে, তা বুঝে উঠতে যথেষ্টই অসুবিধা হবে।’’আনন্দবাজার



(এইচআইকে/এস/মে২৮,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test