E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কালিয়ায় আদর্শ গ্রাম প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়মের অভিযোগ

২০১৪ জুলাই ১০ ১৪:৫৯:৪৫
কালিয়ায় আদর্শ গ্রাম প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়মের অভিযোগ

কালিয়া (নড়াইল) প্রতিনিধি : নড়াইলের কালিয়ায় ইউনিসেফের অর্থায়নে বেসরকারি সংস্থা ইপিআরসি কর্তৃক পাঁচকোটি টাকার আদর্শ গ্রাম প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক অনিয়ম ও অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।

নিয়ম নীতি লঙ্ঘন, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় না করা, এক বছরেও কাজের অগ্রগতি না থাকা এবং অর্থ জমা নেয়ার অভিযোগে প্রকল্পের কাজ স্থগিত করেছিল কর্তৃপক্ষ। ওই ঘটনায় সরকারি কর্মকর্তা ও জন প্রতিনিধিদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

ইপিআরসির কালিয়া অফিস সুত্রে জানা যায়, মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিকের উপস্থিতির কারণে ২০১৩ সালে অক্টোবর মাসে ইউনিসেফের অর্থায়নে আর্সেনিকমুক্ত পানির সুব্যবস্থার জন্য ইপিআরসি নামের একটি বেসরকারি সংস্থা কালিয়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন জয়নগর, হামিদপুর, খাশিয়াল, পহরডাঙ্গা ও ইলিয়াছাবাদ ইউনিয়নে ৫ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারন করে আদর্শ গ্রাম প্রকল্প নামে একটি প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়।

প্রকল্প গুলোর মধ্যে রয়েছে, ২০০ টি গভীর নলকুপ স্থাপন, ২০ টি স্কুলে গভীর নলকুপ ও ল্যাট্রিন স্থাপন ও ৫টি ইউনিয়নের হাটবাজার গুলোতে পাবলিক টয়লেট স্থাপন ও পানির পাইপ লাইন স্থাপন। এক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক আক্রান্ত ইউনিয়ন বাদ দিয়ে তুলনা মূলক কম আর্সেনিক আক্রান্ত ইউনিয়ন বেছে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিয়মানুযায়ী সভা ও সেমিনারের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টিসহ স্থানীয় প্রশাসন ও ইউপি চেয়াম্যানদের মতামতের ভিত্তিতে বিনামূল্যে ওইসব গভীর নলকুপ ও ল্যাট্রিন স্থাপনের কথা থাকলেও পাবলিক নলকুপ স্থাপনের স্থান নির্ধারনের নামে নলকুপ পেতে আগ্রহীদের কাছ থেকে নলকুপ প্রতি ৫ হাজার টাকা হারে আদায় করার অভিযোগ রয়েছে।

পহরডাঙ্গা ইউপির চেয়ারম্যান লাবু শিকদার ও খাশিয়াল ইউপির চেয়ারম্যান ফরিদ শিকদার বলেছেন, তাদের সাথে ইপিআরসি কোন সমন্বয় করেনি। কোন সভা সেমিনারও করেনি।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মো. আকরাম হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, উপজেলার কলাবাড়িয়া, বাঐশোনা ও সালামাবাদ ইউনিয়নে আসেনিকের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশী হলেও সেগুলো বাদ রেখেই ইপিআরসি তাদের কর্মক্ষেত্র নির্ধারন করেছে। সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা ছাড়া যা খুশি তাই করা ঠিক নয়। ইপিআরসির প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. আমজাদ হোসেনের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রকল্পের কাজ স্থগিত হওয়া ও টাকা আদায়ের সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, টাকা নেওয়ার নিয়ম না থাকলেও সংস্থার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই টাকা নেয়া হচ্ছে এবং ইপিআরসির হিসাব রক্ষক ও উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের যৌথ ব্যাংক হিসাবে জমা করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা পড়েছে।
সহকারি প্রকল্প সমন্বয় কর্মকর্তা তুষার কান্তি সরকার বলেছেন, টাকা সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে কন্ট্রিবিউশান হিসাবে নেয়া হচ্ছে। এটা প্রকল্পে যোগ করা হবে। কালিয়ার ইউএনও মো. শাহিন হোসেন বলেছেন, স্থানীয় প্রশাসন ও জন প্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় না করা ও টাকা পয়সা নেয়ার অভিযোগ ওঠায় কাজ স্থগিত করা হয়েছিল।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিউটি বেগম বলেছেন, হিসাব খোলার জন্য তার কাছ থেকে স্বাক্ষর নেয়া হলেও তাকে আর কিছু জানানো হয়নি। উপজেলা চেয়ারম্যান খান শামীম রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ওই প্রকল্পের ব্যাপারে তাকে কিছুই জানানো হয়নি। নিয়ম নীতি লঙ্ঘন করে ইউনিয়ন নির্ধারন ও টাকা আদায় করার বিষয়ে তিনি খোজ খবর নিতে গিয়ে ইপিআরসির কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কোন সন্তোষজনক জবাব পাননি।

(এমএইচএম/জেএ/জুলাই ১০, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test