E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দ্বিগুণ মূল্যে কালোবাজারে টিকিট

২০১৪ জুলাই ১৯ ০৭:৪১:২০
দ্বিগুণ মূল্যে কালোবাজারে টিকিট

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : ঈদে নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে ঘরে ফেরার জন্য অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হলেও রেল ও বাসের কোনো টিকিট নেই। থাকলেও অধিকাংশ টিকিট কালোবাজারে চলে গেছে যা দ্বিগুণ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে।

ক্ষুব্ধ টিকিটপ্রত্যাশীদের অভিযোগ, এ বিষয়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় কিংবা বাস মালিক সমিতির কেউ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। শুক্রবার বন্দরনগরী চট্টগ্রামের রেল ও বাস স্টেশনগুলো ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

যাত্রীরা জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চট্টগ্রাম থেকে চলাচলকারী দূরপাল্লার বিভিন্ন সড়কে রেল ও বাসের টিকিট অগ্রিম বিক্রি শুরু হয় সোমবার থেকে। নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে ঘরে পৌঁছাতে অগ্রিম টিকিট নেওয়ার জন্য ওই দিন থেকে কাউন্টারগুলোতে ভিড় জমান যাত্রীরা। কিন্তু কাউন্টারে এসে দেখা যায় সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে রেল ও বাসের টিকিট। টিকেট নেই শুনে হতাশ হয়ে ফিরে যেতে হয়েছে অনেককে। আবার কালোবাজারিদের হাতে চড়ামূল্যে টিকেট বিক্রি হতে দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছেন অনেকে।

সরেজমিন দেখা গেছে, চট্টগ্রাম কদমতলি রেল স্টেশন, বিআরটিসি, স্টেশন রোড, সিনেমা প্যালেস, গরিব উল্লাহ শাহ, একে খান, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, শাহ আমানতসহ সবকটি বাস কাউন্টারে ঈদের অগ্রিম টিকিট কিনতে আসা যাত্রীদের লম্বা লাইন।

চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে আসা সরকারি কর্মকর্তা মো. ইব্রাহীম হোসেন জানান, পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ উৎসব পালনের আশায় ২৭ রোজার দিনে শ্রীমঙ্গলের টিকেট কেনার জন্য শুক্রবার ফজরের নামাজ পড়ে রেল স্টেশনের কাউন্টারে আসি। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। ২৭ রোজার টিকেট চাইলে ‘নেই’ বলে জানানো হয় কাউন্টার থেকে। শুধু তাই নয়, ২৬, ২৭, ২৮ ও ২৯ রোজার টিকিটও নেই বলে জানান টিকেট বিক্রেতা।

দূরপাল্লার বাসগুলোর সব টিকিট শেষ হয়ে গেছে অনেক আগেই। মো. ইব্রাহীম হোসেন অভিযোগ করেন, কাউন্টারে টিকিট না থাকলেও কালোবাজারিরা ঠিকই টিকিট বিক্রি করছে। তবে তা দ্বিগুণ মূল্যে। যাত্রীরা এর প্রতিবাদ করলে সেখানে কর্মরত এক পুলিশ কর্মকর্তা তাদের বলেন, ‘ঈদের সময় এ রকম হয়েই থাকে। এটা বন্ধ করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’

‘টিকিট কালোবাজারি’ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্টার ম্যানেজার আবুল বাশার বলেন, ‘এখানে কোনো কালোবাজারি নেই। যাত্রীদের অভিযোগ সত্য নয়। কেউ যদি কালোবাজারি করে থাকে তাহলে পুলিশ তো আছে। তবে এটা সত্য যে, ২/১ জনকে কিছু টিকিট দেওয়া হয়েছে, তবে এত বেশি টিকিট দেওয়া হয়নি যা কালোবাজারে বিক্রি হবে।’

নিয়মের বাইরে টিকিট দেওয়া হলো কেন- জানতে চাইলে আবুল বাশার বলেন, ‘আমাদের আসলে কিছুই করার নেই। কারণ ওরা কর্মকর্তাদের খুব কাছের লোক। এ ছাড়া বিভিন্ন মহল থেকে ফোনও আসে। তাই তাদের টিকিট দিতে বাধ্য হই আমরা। ফলে চাহিদা অনুযায়ী যাত্রীদের টিকেট দেওয়া সম্ভব হয় না।’

রাজশাহীর যাত্রী শরাফত আলী বলেন, চট্টগ্রাম থেকে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ করতে যাব। ২৭ রোজার টিকিট কিনতে এসেছি। কিন্তু শ্যামলী পরিবহণের অগ্রিম টিকিট নিতে এসে দেখি টিকিট নেই।

তিনি অভিযোগ করেন, শুধু শ্যামলী নয়, এস আলম, হানিফ, সৌদিয়া থেকে বিআরটিসি পর্যন্ত কোন বাস সার্ভিসে ওই দিনের টিকিট নেই। অথচ চড়ামূল্যে ওই দিনের টিকেট বিক্রি হচ্ছে কালোবাজারে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শ্যামলী বাস কাউন্টারের ব্যবস্থাপক শাহ আলম বলেন, চট্টগ্রাম থেকে রাজশাহী-বেনাপোল পর্যন্ত প্রত্যেক পরিবহন থেকে শুধুমাত্র একটি বাস ছাড়া হয়। এসব বাসে সিট আছে ৩৬টি। এর মধ্যে আমাদের বাসের ছয়টি টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। চারটি টিকিট বুকিং করেছেন সিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। ১০টি টিকিট বরাদ্দ আছে মালিকপক্ষের জন্য। বাকি টিকিটগুলো বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন দিয়ে বুকিং দিয়ে রেখেছেন ভিআইপিরা। তাই সাধারণ যাত্রীদের জন্য টিকিট অবশিষ্ট নেই।

(ওএস/এস/জুলাই ১৯, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test