E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কুষ্টিয়ায় নদী গর্ভে কোটি টাকার প্রকল্প

২০১৪ আগস্ট ২২ ১২:৩২:২৪
কুষ্টিয়ায় নদী গর্ভে কোটি টাকার প্রকল্প

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভেড়ামারার চর গোলাপনগর আশ্রয়ন প্রকল্প এখন পদ্মা নদী গর্ভে। অব্যাহত ভাঙ্গনের মুখে পড়ে আশ্রয়নের ৬০টি পরিবারের ৪ শতাধিক মানুষ এখন খোলা আকাশের নিচে জীবনযাপন করছে। অসহায় মানুষ খাদ্য ও বাসস্থানের তীব্র সংকটে দিশেহারা। সরকারি সাহায্যে সহযোগিতা এখনও কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, কয়েক দিনের অব্যহত ভাঙ্গন রোধে স্থানীয় প্রশাসন কার্যত কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে কয়েক হাজার বিঘা জমিসহ আশ্রয়ন প্রকল্প। অসহায় নারী পুরুষ এবং ছিন্নমুল মানুষগুলো এখন অসহায়ের মতো খোলা আকাশের নিচে জীবনযাপন করছে।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদীর মাঝখানে জেগে ওঠা চরে ২০০৫ সালে নির্মাণ করা হয় গোলাপনগর আশ্রয়ন প্রকল্প।
তৎকালীন সময়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ৮ টি ব্যারাক কোটি টাকা ব্যয়ে মাটি ভরাট করে নির্মাণ করেন। প্রতি ব্যারাকে ১০টি করে ঘর রয়েছে। ৮০ টি ঘরে রয়েছে ৮০ টি পরিবার। কমপক্ষে ৫ শতাধিক মানুষের আবাসস্থল ছিল এই আশ্রয়ন প্রকল্প। এই আশ্রয়ন প্রকল্প ঘিরেই সরকার বাস্তবমুখী নানা প্রদক্ষেপ গ্রহন করেছিল। কিন্তু অপরিকল্পিত উপায়ে আশ্রয়ন প্রকল্প নির্মানের কারনে পুরো আশ্রয়ন প্রকল্পই এখন নদী গর্ভে বিলীন হতে চলেছে। ইতোমধ্যে আশ্রয়ন প্রকল্পের ৬টি ব্যারাকের ৬০টি ঘর নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।
চর গোলাপনগর আশ্রয়ন প্রকল্পের সভাপতি আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, ৮ টি ব্যারাকে ৮০ টি পরিবারের ৫ শতাধিক মানুষ বসবাস করতো। কিন্তু কয়েক দিনের তীব্র ভাঙ্গনে কয়েক শত বিঘা জমিসহ আশ্রয়ন প্রকল্পের ৬টি ব্যারাকের ৬০টি ঘর এখন নদী গর্ভে। চরম আতঙ্কে আরো ২০টি পরিবার দিনাতিপাত করছে। যে কোন সময় ওই ঘরগুলোও নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যেতে পারে। এখানকার মানুষ গৃহহীন হয়ে খোলা আকাশের নীচে মানববেতর জীবন যাপন করছে। আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা কুলসুম, জয়তন, ইব্রাহিম, শাহিদা, শিমু, সরল খাঁ, জাইরুদ্দী, জুলেখা, রুপালী, করিম গাজী, লোকমান, মজনু মাতব্বর এদেও সবারই ঘর ছিল আশ্রয়ন প্রকল্পে। পদ্মা নদীতে বিলিন হয়ে গেছে তাদের শেষ সম্বল বসতবাড়ি।
তারা জানান, পদ্মা নদী ভয়ঙ্কর রুপ ধারন করে একের পর গ্রাস করে নিতে থাকে আশ্রয়ন প্রকল্পের হাজার হাজার বিঘা আবাদী জমি। চোখের সামনেই নদী গর্ভে বিলীন হতে দেখেছেন নিজের বসতবাড়ি।

তারা অভিযোগ করেন, কয়েক বছর ধরেই আশ্রয়ন প্রকল্পের এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছিল। কিন্তু ভাঙ্গন রোধে স্থানীয় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি। আশ্রয়ন প্রকল্প বিলীন হওয়ার পর তারা এসে তালিকা নিয়ে গেছে। তারা অফসোস করে বলেন, কবে সাহয্যে আসবে, আর কবে মাথা গুজার ঠাঁই মিলবে তার কোন হিসাব নেই।
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শান্তি মনি চাকমা জানিয়েছেন, পদ্মা নদী ভয়ঙ্কর রুপ ধারন করে আশ্রয়ন প্রকল্প গ্রাস করে নিয়েছে। ৮ টি ব্যারাকের মধ্যে ৬টি ব্যারাকই এখন পদ্মা নদীতে। ভাঙ্গন রোধে কার্যত কোন ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং জেলা প্রশাসনকে বিস্তারিত জানিয়েছি। বরাদ্ধ এলেই ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যে সহযোগিতা দেওয়া হবে।

(কেকে/জেএ/আগস্ট ২২, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test