E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মোরেলগঞ্জে নদী ভাঙ্গনে নি:স্ব  অনেক পরিবার

২০১৪ সেপ্টেম্বর ২০ ১৬:১৬:১০
মোরেলগঞ্জে নদী ভাঙ্গনে নি:স্ব  অনেক পরিবার

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা পুরাতন সড়কের দেড় কিলোমিটার ভাঙ্গনের ফলে দেড় শতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। দেড় কিলোমিটার রাস্তা নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষকে দেড় কিলোমিটার রাস্তার জন্য ঘুরতে হচ্ছে ১৮ কিলোমিটার পথ। ভাঙ্গনের ফলে এখানকার বাসিন্দাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে পার হয়ে উপজেলা সদরসহ জেলায় আসতে হচ্ছে।

পুরাতন এই সড়কটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে দুই উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। নদীগর্ভে বাড়িঘর হারিয়ে নি:স্ব হয়ে পড়েছে ওই সব পরিবারের সদস্যরা। তাদের এখন মাথা গোজার ঠাঁই নেই। প্রবল প্রমত্তা পানগুছি নদীটি বর্ষা মৌসুম আসলেই রুদ্র রূপ ধারন করে। গত কয়েক বছর ধরে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের গাবতলা এলাকা ভাঙ্গতে শুরু করে। তাই এই নদী ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসি।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা সদর ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে প্রবল প্রমত্তা পানগুছি নদী। এই নদীর পাশ থেকে শরণখোলা-মোরেলগঞ্জ পুরাতন সড়ক দিয়ে চলাচল করছে দুই উপজেলার জনসাধারণ। গত ২০১২ সালের ঘূর্ণিঝড় মহাসেনের পর মোরেলগঞ্জ সদর উপজেলার গাবতলা এলাকার দেড় কিলোমিটার রাস্তা নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যায়। এরপর থেকে নানা দুর্যোগ ও ভয়ঙ্কর পানগুছি নদীর জলোচ্ছাসে ভাঙতে থাকে বসতবাড়ি।


গেল দু’ বছরে প্রায় দেড়শ পরিবার এই ভাঙ্গনের শিকার হয়ে নি:স্ব হয়ে পড়েছে। ভাঙ্গন কবলিত ওই এলাকায় বিকল্প রাস্তা না থাকায় দুই উপজেলার মানুষ জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে ট্রলারে পার হচ্ছে। এছাড়া অতিবৃষ্টি ও পূর্ণিমা ও অমাবশ্যার জোয়ারের পানি বৃদ্ধির ফলে ওই এলাকার জনপদে পানি ঢুকে পড়ায় দিন দিন দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে।

গাবতলা এলাকার ভাঙ্গনে নি:স্ব মেহেরুন বলেন,‘ আমার সম্বল ছিল তিন কাঠা জমি। সেখানে ৪-৫ বছর বাস করার পর পানগুছি নদীর ভাঙ্গনে সব টুকু নদীতে চলে গেছে। এখন অন্যের বাড়ির ভিটায় আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু কোথায় যাব ছেলে মেয়ে নিয়ে। ভিক্ষা করে খেলেও মাথা গোজার ঠাই না থাকলে কিভাবে চলবো সন্তানদের নিয়ে। আমি যাতে একটু পাই সে জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই’।

তার মতো কয়েকজন এভাবে নদীতে আমাদের বাপ-দাদার ভিটাবাড়ি সব কিছু হারিয়েছি। এখন মাথা গোজাঁর ঠাই নাই। এই ভাঙ্গন রোধে সরকারে কাছে অনুরোধ জানান তারা।



নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত আব্দুল গফফার বলেন, ভাঙনে প্রায় ৫ একর জমি ও ২ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। তার পর কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমাদের মত আরও অনেক পরিবার আতংকের মধ্যে রয়েছে’।

হুমায়ুন কবির নামের সরকারি চাকুরী জীবী বলেন, দুই উপজেলার সংযোগ সড়কের গাবতলা এলাকায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা নদী গর্ভে বিলিন হওয়ায় ১৮ কিলোমিটার পথ ঘুরতে হয় আমাদের। দীর্ঘদিন ধরে হাজার হাজার মানুষ এই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে । আমরা দ্রুত এর সমাধান চাই সরকারের কাছে।

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন এলাকাবাসির দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে জানালেন, ভাঙ্গন কবলিত এলাকাটি মেরামতের জন্য জলবায়ু ট্রাস্টের অর্থায়ন থেকে বরাদ্ধ পাওয়ার জন্য উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। বরাদ্ধ পেলে নির্মাণ করা সম্ভব হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।


(একে/এএস/সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৪ )



পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test