E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মেঘনায় ইলিশ ধরা বন্ধ

রায়পুরে জেলে পরিবারের ঈদ কেটেছে চোখের জলে

২০১৪ অক্টোবর ০৮ ১৩:৪৩:৫২
রায়পুরে জেলে পরিবারের ঈদ কেটেছে চোখের জলে

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : একমাত্র উপার্জনের পথ বন্ধ থাকায় লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় প্রায় ১০ হাজার জেলে অলস সময় পার করছেন।

সরকারি নির্দেশের কারণে গত ৫ থেকে ১৫ অক্টোবর টানা ১১দিন পর্যন্ত নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। এতে জেলেরা কোরবানি দেয়াতো দূরের কথা দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেও অনেক জেলের চুলোতে আগুন না জ্বলায় কোনো উৎসব-আয়োজন ও আনন্দ ছিলো না জেলে পরিবারগুলোতে। ঈদের সময়ও নদীর কূলে নিজের জাল বুনে অলস সময় পার করছেন তারা। কেউবা বসে পুরাতন জাল বুনছেন। অথচ এ ব্যাপারে সরকারি কোনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।

জেলেরা জানান, অর্ধাহারে অনাহারে পরিবার পরিজন নিয়ে এই ১১দিন তাদের কাটাতে হবে। উপজেলার ১০টি জেলেপাড়ার ১০ হাজার ৫৬৩ জন জেলে পরিবার দিন কাটছে কোনো রকমে খেয়ে না খেয়ে। নদীতে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় জেলে পরিবারে নেমে এসেছে হাহাকার। গত ৫ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ প্রজনন স্থানগুলোসহ দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, পরিবহণ, বাজারজাতকরণ ও মজুদ করা, ক্রয়-বিক্রয় দন্ডনীয় অপরাধ। ভয়ে আয়-উপার্জন বন্ধ থাকায় বর্তমানে আর্থিক সংকট, দুশ্চিন্তা আর মহাজনের ঋণের বোঝায় হতাশ এখানকার হাজার হাজার জেলে। তার ওপর ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারিতে ঈদে তাদের কষ্ট আরও বেড়ে গেছে।

রায়পুর মেঘনা উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় আড়াই হাজার জেলে পরিবারে ১৭ হাজার সদস্য রয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ১০ হাজার ৫৬৩ জেলে নদীতে মৎস্য আহরণ করে জীবন যাপন করেন। ইলিশের মৌসুমে এবং সারা বছর তারা ইলিশ ধরা ছাড়াও আরো অন্যান্য মাছ নদী থেকে আহরণ করে বাজারে বিক্রি করে থাকেন। কিন্তু সরকারের নিষেধাজ্ঞার কার তারা ১১ দিনের জন্য বেকার হয়ে গেলেন।
হতদরিদ্র এই জেলে পরিবার গুলো মৌসুমের অন্য সময় জীবন যাপন করতে গিয়ে স্থানীয় দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দাদন নিয়ে থাকেন। ফলে সব সময় তাদের একটা টানা পোড়েনের মধ্যদিয়ে চলতে হয়। সরকারি এই নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে তারাও একমত পোষণ করেন। কারণ এই সময়ে শতকরা ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মা ইলিশ ডিম ছাড়ে। জেলেরাও চান এই মাছ বেঁচে থাকুক, ডিম ছাড়ুক। কিন্তু পেটে খেলে পিঠে সয়।
এ প্রসঙ্গে পশ্চিম খাসের হাট জেলে কাবু মিয়াসহ অনেকে জানান, সরকার যখন এই নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত নিলেন তখন তারা ভাবলেন না এই গরীব জেলে পরিবারগুলো ১১ দিন কিভাবে বাঁচবে? প্রত্যেক জেলে পরিবারে গড়ে ছয়-সাত জন সদস্যের খাবার কোথা থেকে আসবে? অভুক্ত থেকে কিভাবে আইনকে শ্রদ্ধা করবে?
ইলিশ ধরা বন্ধের সময় সরকারের কোনো বরাদ্ধ আছে কি-না জানতে চাইলে রায়পুর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, জেলেদের জন্য সরকারি কোনো বরাদ্দ নেই।

(এমআরএস/জেএ/অক্টোবর ০৮, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test