E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শরীয়তপুরে কঠোর ব্যবস্থার মধ্যেও ইলিশ শিকার করেই চলেছে জেলেরা

২০১৪ অক্টোবর ১৩ ১৬:৫৫:১৮
শরীয়তপুরে কঠোর ব্যবস্থার মধ্যেও ইলিশ শিকার করেই চলেছে জেলেরা

শরীয়তপুর প্রতিনিধি : ইলিশের প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষার জন্য শরীয়তপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে দিন রাত চলছে প্রশাসনের সাড়াশী অভিযান। সরকারি কঠোর ব্যবস্থার মধ্যেও জেলেরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরছে শরীয়তপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীতে। বিপুল পরিমানের জাল আটক ও  জেল জরিমানার পরেও থামছেনা মা ইলিশ মাছ ধরা।

গত ৫ অক্টেবর থেকে আগামী ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের প্রজনন মৌসুম। এ সময়ে সারা দেশে এই ১১ দিন মা ইলিশ ধরা, বিপনন, সরবরাহ ও মজুদ করা সরকার আইন করে নিষিদ্ধ করেছে। শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ ও গোসাইরহাট উপজেলার পদ্মা ও মেঘনা নদীর ২৫ কিমি এলাকা জুড়ে মা ইলিশের প্রজননের জন্য অভয়ারন্য ঘোষনা করা হয়েছে। এ ছাড়াও জাজিরা থেকে গোসাইরহাট উপজেলার জালালপুর পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিমি এলাকা জুড়ে পদ্মা ও মেঘনা নদীতে রয়েছে ইলিশের বিচরণ।

চলতি মাসের ৫ তারিখ থেকে ১১ দিন মা ইলিশ রক্ষায় মৎস্য বিভাগ, কোষ্ট গার্ড, র‌্যাব ও পুলিশের অভিযান সহ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হচ্ছে। ৫ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত ৪৫ টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছে শরীয়তপুরের নড়িয়া, জাজিরা, ভেদরগঞ্জ ও গোসাইরহাট উপজেলার জলসীমায় পদ্মা ও মেঘনা নদীতে। এসময় তারা ১১০টি অভিযান পরিচালিত করে ৭১ লক্ষ টাকা মূল্যের সাড়ে ৮ লক্ষ মিটার জাল আটক, ১ হাজার ৬ শত কেজি মা ইলিশ আটক, ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা ও ৯২ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

জেলার চারটি উপজেলা ঘুরে ও জেলা মৎস বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুরের চার উপজেলার পদ্মা ও মেঘনা নদীতে মৎস কর্মকর্তা, র‌্যাব , পুলিশ সকাল থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত টহল পরিচালনা করে। শুধু ভেদরগঞ্জ উপজেলায় পদ্মা নদীর নৌসীমায় কোষ্টগার্ড অভিযান চালাচ্ছে ২৪ ঘন্টা। গোসাইরহাটের পদ্মা ও মেঘনা নদীতে সন্ধ্যার পরই পুলিশ অভিযান শেষ করে দেয়। এর পর শত শত জেলে নৌকা নিয়ে নদীতে সারা রাত মা ইলিশ শিকারের মহাউৎসবে মেতে উঠে। তাদের শিকার করা মাছ গুলো কোন আরতে না নিয়ে রাতের অন্ধকারেই নদী থেকে বিক্রি করে দিচ্ছে পাইকারদের কাছে।

ভেদরগঞ্জ উপজেলার উত্তর তারাবুনিয়ার জেলে হাশেম বেপারী বলেন, আমরা অভাবের কারণে আইন অমান্য করে মাছ ধরি। এ জন্য আমাদের অনেককে তো জেল খানায়ও যেতে হচ্ছে। সরকার যদি এ সময় আমাদের জন্য কোন সাহায্যের ব্যবস্থা রাখতো তা হলেতো আমরা চুরি করে মাছ শিকার করতামনা।

গোসাইরহাট উপজেলার চরজালালপুর এলাকার জেলে হযরত আলী সরদার বলেন, আমরা নদী ভাঙ্গায় সর্বস্ব হারানো লোক। মাছ ধরাই আমাদের একমাত্র পেশা। ঘরে ভাত না থাকলে নদী ছারা আর কোথায় যাবো আমরা। সরকার আগামী দিনে যেন আমাদের সহায়তার ব্যবস্থা করে ।

শরীয়তপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কাজী ইকবাল আজম বলেন, জেলার বিশাল জলসীমায় যে কয়জন কর্মী নিয়ে অভিযান পরিচালনা করছি তা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল। তার পরেও অসাধু জেলেরা সুযোগ পেলেই মাছ ধরতে নামছে। আমাদের এই সীমিত জনবল এ বৃহৎ এলাকায় অভিযান চালানোর জন্য যথেষ্ট নয়।

(কেএনআই/এএস/অক্টোবর ১৩, ২০১৪)


পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test