E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শাঁখারি বাজারের শাঁখাশিল্প প্রায় বিলুপ্তির পথে

২০১৪ অক্টোবর ১৫ ০৭:১৮:১৭
শাঁখারি বাজারের শাঁখাশিল্প প্রায় বিলুপ্তির পথে

বিশেষ প্রতিবেদক : শাঁখারি বাজারে হাজার বছর ধরে জন্ম নেয়া শাঁখাশিল্প আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। এর একমাত্র কারণ- শাঁখা তৈরীর কাঁচামালের অধিক মূল্যবৃদ্ধি। তবে এর পাশাপাশি সরকারের এ শিল্পের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপও একে বিলুপ্তির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

১৬০৮ খ্রিস্টাব্দে শাখাঁরি বাজারে শাঁখাশিল্পের গোড়াপত্তন হয়। ধারণা করা হয়, প্রায় দেড় হাজার বছর আগে বল্লাল সেনের শাসনামলে শাঁখারি বাজারের পূর্ব পুরুষরা এসেছিল দক্ষিণ ভারত থেকে। প্রথমে তারা বসতি গড়ে তুলেছিল ঢাকার বিক্রমপুরে। পরে তারা এই শাঁখারি বাজারে বসতি স্থাপন করেন। যার পূর্ব নাম ছিল শাঁখারিপট্টি।

শাঁখারি বাজার সরেজমিনে দেখা গেছে, বহু শাঁখাশিল্পী এখন বেঁচে থাকার জন্য অন্য মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছেন। হাজার বছরের পুরনো হওয়া সত্ত্বেও কেন এই শাঁখাশিল্পের এতো করুণ অবস্থা সেই বিষয়ে উত্তরাধিকার৭১ নিউজ কথা বলেছিল কয়েকজন শাঁখাশিল্পীর সাথে। এই ক্ষেত্রে শাঁখা শিল্পীরা সরকারের অসহযোগিতা এবং কাঁচামালের অধিক হারে মূল্য বৃদ্ধিকেই দায়ী করেছেন।

এই শিল্পের প্রতি সরকারের অসহযোগিতার কথা উল্লেখ করে শাঁখারি বাজারের এক স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে এই শিল্পের জন্য রাষ্ট্রীয় কোনো অনুদান পাওয়া যাচ্ছে না। আবার অতিরিক্ত কর আরোপ তো আছেই।

তিনি বলেন, সরকার যদি শাঁখাশিল্পকে কুটির শিল্পের মর্যাদা দেয় তাহলে তা খুব শীঘ্রই উৎকর্ষ লাভ করবে। শুধু তাই নয়, এই শিল্প বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পের আওতায় দেশে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে অবদান রাখতে পারবে। কেননা বাংলাদেশের কারুশিল্পের ঐতিহাসিক নির্দশন হচ্ছে এই শাঁখা শিল্প।

এছাড়া তিনি আক্ষেপ করে আরো বলেন, সরকার এবং সাধারণ জনগণের কাছে এই শিল্পের এখন আর কোনো কদরই নেই। বরং শিল্পটি অবহেলিত।

শাঁখা তৈরীর কাঁচামালের অধিক মূল্যের কথা উল্লেখ করে শাঁখারি বিদ্যুৎ কুমার নাগ বলেন, শাঁখা শিল্পের মূল উপাদান হচ্ছে শঙ্খ। এদের মধ্যে- তিতপুটি, রামেশ্বরি, ঝাঁজি, দোয়ানি, মতিছালামত, পাটি, গারবেশি, কাচ্চাম্বর, ধলা, জাডকি, কেলাকর, জামাইপাটি, এলকারপাটি, নায়াখাদ, খগা, সুর্কিচৌনা, তিতকৌড়ি, জাহাজি, গরবাকি, সুরতি, দুয়ানাপটি এবং আলাবিলাই প্রধানত ব্যবহৃত হয়। আর এই শামুকগুলো শ্রীলঙ্কার জাফনা ও ভারতের চেন্নাই থেকে আমদানি করতে হয় চড়া দামে।

তিনি জানান, এগুলোর মধ্যে তিতকৌড়ি সবচেয়ে বেশি দামি। এরপরেই জাডকি এবং পাটি শঙ্খের স্থান। আর আলাবিলা শঙ্খ হচ্ছে সবচেয়ে নিম্নমানের। ১৯১০ সালে ১৫০টি তিতকৌড়ি শঙ্খের মূল্য ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ১৯৯৯ সালে এর মূল্য বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকায়। আর বর্তমানে এর মূল্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার টাকারও বেশী।

(এমএম/এনডি/অ/অক্টোবর ১৫ ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test