E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জাজিরায় বালু দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে সংযোগ সড়ক !

২০১৪ নভেম্বর ০৫ ১৮:২৪:৩৬
জাজিরায় বালু দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে সংযোগ সড়ক !

শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরের জাজিরায় অতি জনগুরুত্বপূর্ন একটি নবনির্মিত সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে শুধুমাত্র বালু আর নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে। এতে সড়কটি মোটেও স্থায়ীত্ব পাবে না বলে ধারণা করছে এলাকাবাসী। মজবুত ও টেকসই সংযোগ সড়ক নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা।

শরীয়তপুরের জাজিরা পৌর এলাকার আহাউদ্দিন মাদবরের কান্দি কীর্তিনাশা নদীর উপর নির্মানাধীন রয়েছে ৩শত ৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি আরসিসি সেতু। ২০১২ সালের ১৫ অক্টোবর থেকে শুরু হয় এই সেতু নির্মাণের কাজ। শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর। ৩ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকা ব্যয় ধরে সেতু নির্মাণের দরপত্র আহবান করা হলেও প্রায় ১ কোটি টাকা অধিক মূল্যে ঢাকার ঠিকাদার মেসার্স আতিয়ার রহমানকে ৪ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা চুক্তিমূল্যে সেতু নির্মানের কাজ দেয়া হয়।

নির্ধারিত সময়ে সেতু নির্মানের কাজ শেষ করতে না পারায় ঠিকাদারকে শরীয়তপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর আরো দুই দফায় সময় বাড়িয়ে ২০১৪ সালের ৩০ অক্টোবর এর মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ প্রদান করে। পাশাপাশি আরো ৪০ লক্ষ টাকা নির্মাণ ব্যয়ও বাড়িয়ে সর্বসাকুল্যে ৪ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা দেয়া হয় ঠিকাদারকে। সেতু নির্মাণের কাজ শেষ না করে এবং সেতুটি হস্তান্তর না করে ইতিমধ্যে সমুদয় টাকাও তুলে নিয়ে গেছে ঠিকাদার। কিন্তু ঠিকাদার যেনতেন ভাবে মূল সেতু নির্মাণের কাজ শেষ করলেও সেতুর দুই পাড়ে সাড়ে ৭ শত ফুট সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজে শুরু করেছে নানা তাল বাহানা।

সংযোগ সড়ক দুটি মাটি দিয়ে নির্মাণের কথা থাকলেও ঠিকাদার খননযন্ত্র দিয়ে স্থানীয় নদী থেকে বালু তুলে তা দিয়েই নির্মাণ করছে এই গুরুত্বপূর্ণ সেতুর সংযোগ সড়ক। সেতুর দুই পাড়ে এ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মানের জন্য প্রায় ৮ হাজারটি সিমেন্টের ব্লক ও মাত্র ৪ শত টি খুটি ব্যবহার করা হবে। ব্লক ও পাইল নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্মমানের সমাগ্রী। স্থানীয় লোকজন ঠিকাদারের লোকদের নিন্মমানের ব্লক তৈরী করতে বার বার বাধা দিলেও তারা শুনেনি। এলাকার লোকজন অভিযোগ করেছে, এলজিইডির প্রকৌশলীদের সহায়তায়ই ঠিকাদার এরকম নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী তৈরী করতে পেরেছে।

আহাউদ্দিন মাদবর কান্দি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফজলুল হক মাদবর, ৯০ বছর বয়সের বৃদ্ধ আব্দুর রহমান হাওলাদার ও শুকুর আলী শেখ বলেন, আমরা বার বার এই নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে পাইল ও ব্লক নির্মাণ করতে বাধা দিয়েছি। তারা আমাদের বাধা মানেনি। ব্লক গুলো এতই দূর্বলভাবে তৈরী করা হয়েছে যে, মাত্র ১ ফিট উপর থেকে নিচে ফেললে তা ভেঙ্গে গুড়ো হয়ে যায়। সিমেন্টের পরিমান কম ও রড দিয়ে ব্লক নির্মাণ না করার কারণে এবং রাস্তায় মাটির পরিবর্তে শুধু মাত্র বালু ব্যবহার করার কারণে এই সংযোগ সড়ক বেশী দিন স্থায়ী হবেনা। আগামী বর্ষা মৌসুমে পানি এসে ধাক্কা মারলেই রাস্তাটি ভেঙ্গে যাবে ।

ব্লক নির্মাণের কাজ সার্বক্ষনিক দেখা শুনার দায়িত্বে নিয়োজিত ঠিকাদারের সুপার ভাইজর হাবিবুর রহমান ও সাইট ম্যানেরজার আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, খারাপ নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারে তাদের কোন হাত নেই, সব কিছুই কেবল উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ জানেন। তারা আরো বলেন, ইঞ্জিনিয়ার ও ঠিকাদার যেভাবে আদেশ করেছেন আমরা সেভাইে এগুলো তৈরী করছি।

এলজিইডির জাজিরা উপজেলা প্রকৌশলী বিমলেন্দু কুমার সরকার বললেন, যে নকশা ও ডিজাইন ধরা ছিল, সেভাবেই কাজ করা হচ্ছে। কাজে কোন অনিয়ম নেই।

(কেএনআই/অ/নভেম্বর ০৫, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test