E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বর্ধমান বিস্ফোরণে যুক্তদের অন্যতম উদ্দেশ্য, বৃহত্তর বাংলাদেশ গড়া

২০১৪ নভেম্বর ০৭ ২২:৫৮:০২
বর্ধমান বিস্ফোরণে যুক্তদের অন্যতম উদ্দেশ্য, বৃহত্তর বাংলাদেশ গড়া

আন্তর্জািতিক ডেস্ক :বর্ধমান বিস্ফোরণে যুক্তদের অন্যতম উদ্দেশ্য, বৃহত্তর বাংলাদেশ গড়া ।এ লক্ষে আল-কায়দা যে তাদের একটা বড় নেটওয়ার্ক তৈরির ছক কষছিল, সেটি আগেই বুঝতে পেরেছিলেন তদন্ত কর্মকর্তারা। তবে বর্ধমানের ঘটনার পর স্পষ্ট হয়ে গেল তাদের নেটওয়ার্ক তৈরির  বিস্তারিত। বর্ধমান বিস্ফোরণের ঘটনার পরই, ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেইশন এজেন্সি বা এনআইএ আল কায়দার  এই ছক সম্পর্কে জানতে পেরেছে।

বিস্ফোরণের তদন্ত করতে গিয়ে যে তথ্য উঠেছে সেই তথ্য দিয়ে ৩৮৭ পাতার প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ,বৃহত্তর বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যই ছিল বর্ধমান বিস্ফোরণে যুক্তদের অন্যতম উদ্দেশ্য।

প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্যগুলো দুদিন আগেই ঢাকাকে জানিয়েছে দিল্লি।

এনআইএয়ের সূত্র উদ্ধৃত করে ভারতের গণমাধ্যম জানিয়েছে,পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয়সহ ভারতের বেশ কিছু সীমান্তবর্তী রাজ্যের বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষে থাকা এলাকাগুলো নিয়ে 'বৃহত্তর বাংলাদেশ' রাষ্ট্র তৈরির এজেন্ডা হাতে নিয়েছে আল-কায়দা।

২০১২ সাল থেকে লক্ষ্য বাস্তবায়নে ওই রাজ্যগুলোর সীমান্তবর্তী অঞ্চলে জঙ্গীঘাঁটি তৈরি করে জঙ্গি সংগ্রহ অভিযানও চালাচ্ছে তারা।

জঙ্গি রিক্রুটের আসল ঘাঁটি আসামের বড়পেটায়। এই 'বৃহত্তর বাংলাদেশ' অনেকটা ইসলামী স্টেট অফ ইরাক অ্যান্ড সিরিয়ার সংক্ষেপে আইএসআইএস-এর মতো। এরা সুবা বাংলার মানচিত্র নক্সা প্রনয়ণের কাজ ও শেষ করেছে।

আল-কায়দার ভারতীয় অংশীদার ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন এবং বাংলাদেশের অংশিদার জামাতউল-মুজাহিদিন বা জুম এই পরিকল্পনা রুপায়নের কাজে নিয়োজিত রয়েছে।বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন জামাত উল মুজাহিদিন (জুম) এবং চার সংগঠন আনসার উল্লাহ্ বাংলা টিম, জামাত উল মুসলিম, হেফাজত-এ ইসলাম এবং তানজিম তামিরুদ্দিনও এই পরিকল্পনায় সামিল।এই পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে করাচিতে। ৬নভেম্বর শুক্রবার ভারতীয় গণমাধ্যম এমন চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আল কায়দার ভারতীয় সংস্করণ আনসার উল তৌহিদও এই প্রজেক্টের অন্যতম মদদদাতা। মূলত পাকিস্তানের সরকারি গোয়েন্দা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টিলিজেন্স বা আইএসআই-এর পরিকল্পনা। এই অপারেশনটির নাম দিয়েছে 'অপারেশন পিন-কোড'।

পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলা মালদা, নদীয়া, মুর্শিদাবাদসহ উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা ছাড়াও আসামের করিমগঞ্চ দুবরী এবং বড়পেটা জেলাকেও বৃহত্তর বাংলাদেশ-এর অংশ করার পরিকল্পনা রয়েছে 'অপারেশন পিন কোড'-এ।

বর্ধমান ও বীরভূমে যে জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবির চলে মূলত তা বাংলাদেশি জঙ্গিরই প্রতিষ্ঠিত। এনআইএ-এর নিজস্ব প্রতিবেদনে জানানো হয়, বাংলাদেশ থেকে রাহিল ফারুক নামে এক যুবক পাকিস্তান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ভারতে অণুপ্রবেশ করে। গত একবছর ধরে লালগোলা মাদ্রাসায় ছিল ফারুক।বিস্ফোরণের পর গা-ঢাকা দেওয়া মোফাজ্জল হোসেনও বাংলাদেশি নাগরিক। মোফাজ্জলই জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরের মূল অর্থযোগান দাতা। এছাড়াও ওস্তাদ সাজিদ ও তার স্ত্রী ফাতেমা বিবিও লালগোলার শিমূলপুরের মাদ্রাসায় নারী জঙ্গীদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এরা সবাই এখন পলাতক।

তবে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রাক্তন অধিকর্তা গদাধর চট্টোপাধ্যায়ের ভাষ্য, জঙ্গিরা কোনভাবেই বাংলাদেশ ও ভারতের সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি তা মানতে পারছে না। এটা ভাঙার জন্য বহু পরিকল্পনা হয়েছে হবেও। তাই আমাদের সকলের দায়িত্ব সম্প্রতি অক্ষুণ্ন রাখা। তাহলে যত পরিকল্পনাই করুক আল কায়দা বা জামাত উল মুজাহিদিন কোনটাই কাজে আসবে না।

ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফের প্রাক্তন এক ডিআইজি আশা প্রকাশ করেন, শেখ হাসিনা সরকার ধর্ম নিরপেক্ষ সরকার। স্বাভাবিকভাবেই এসব পরিকল্পনা করে তার সৎ উদ্দেশ্যটাকে ভন্ডুল করতে চাইবে দেশি-বিদেশি জঙ্গিগোষ্ঠী। কিন্তু আমাদের দুই দেশের মানুষই সচেতন।ফলে জঙ্গীদের এ কাজ কোনোভাবেই সফল হবে না ।

(ওএস/এসসি/০৮নভেম্বর২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test