E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

আতঙ্কের জেলা নারায়ণগঞ্জ : ১ বছরে ৪২ লাশ

২০১৪ মে ০১ ১৫:৪৬:০৮
আতঙ্কের জেলা নারায়ণগঞ্জ : ১ বছরে ৪২ লাশ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জ জেলা এখন আতঙ্কের অপর নাম। মানুষ জীবিত অবস্থায় গুম-অপহরণ হচ্ছে আর ফিরছে লাশ হয়ে। গত এক বছরে নারায়ণগঞ্জ থেকে শিশু, ছাত্র, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ শতাধিক ব্যক্তি অপহরণ ও গুমের শিকার হন। মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী থেকে শুরু করে গতকাল বুধবার পর্যন্ত ৪২ জন লাশ হয়ে ঘরে ফিরলেন।

গত বছরের ৬ মার্চ শহরের শায়েস্তা খান রোডের বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বির ছেলে মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। এর দুদিন পর তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গত ২১ জানুয়ারি সোনারগাঁও উপজেলার কাঁচপুর এলাকা থেকে অপহৃত হয় স্কুলছাত্র জাহিদুল ইসলাম ও সাকিন আলম। ২২ জানুয়ারি একই এলাকার ভারগাঁও বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে জাহিদুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করা হয়। ২৬ জানুয়ারি বেহাকৈর মোল্লাবাড়ির বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় বস্তাবন্দি সাকিন আলমের গলাকাটা লাশ। অপহরণকারীরা তার পরিবারের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল।

আরো জানা যায়, ২৯ জানুয়ারি বন্দর উপজেলার কামতাল এলাকা থেকে স্কুলছাত্র রকিবুল ইসলাম ইমনকে (১৪) অপহরণ করা হয়। ঘটনার ৩৫ দিন পর একটি ডোবা থেকে তার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়। ১ ফেব্রুয়ারি রূপগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভিংরাব এলাকা থেকে স্কুলছাত্র নাঈম মিয়ার (১৪) গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ৬ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার সস্তাপুর এলাকা থেকে একটি মোবাইল ফোনের জন্য স্কুলছাত্র মোস্তফা মিয়াকে (১২) অপহরণ করা হয়। দুদিন পর পিঠালীপুর এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

গত ১৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জ শহরের গোপচর মর্সিনাবন্ধ এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর শাখা খাল থেকে স্কুলছাত্র সাব্বিরের (১১) হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ৩০ মার্চ রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসভার রূপসী স্লুইসগেট এলাকা থেকে স্কুলছাত্র আল আমিনের (১৬) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গত বছরের ১৩ জুন সদর উপজেলার ফতুল্লার দুর্গম চরাঞ্চল বক্তাবলী ইউনিয়নের চররাধানগরে পূর্বশত্রুতার জের ধরে স্কুলছাত্র ইমনকে ৯ টুকরো করে নৃশংসভাবে হত্যা করে তারই আত্মীয়রা। ৩ জুলাই রূপগঞ্জের সিনহা স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মৌসুমী আক্তারকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।

৯ জুলাই ফতুল্লার পাগলা উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র নাজমুল হোসেনকে সন্ত্রাসীরা কুপিয়ে হত্যা করে। ২২ জুলাই আড়াইহাজারে স্কুলছাত্র মাহাবুবকে হত্যার পর তার নাক ও কান কেটে এবং চোখ উপড়ে ফেলা হয়। ৭ সেপ্টেম্বর সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকার জালকুড়ি পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র রমজান শিকদারকে অপহরণের পর খুন করা হয়। মাত্র ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে তাকে খুন করা হয়।

৮ নভেম্বর রাতে বন্দরের মদনগঞ্জ শান্তিনগর এলাকায় ডাকাতিকালে ডাকাতদের গুলিতে স্কুলছাত্র সালমান ঘটনাস্থলে নিহত হয়। ২৩ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ নগরীর মাসদাইরে কবুতর কেনার কথা বলে ১১ হাজার টাকা নিয়ে ফেরত না দেওয়ায় বিচার চেয়েছিলেন শিশু সিয়ামের বাবা। এর জের ধরে সিয়াম আহমদকে হত্যা করা হয়।

এছাড়াও এখনো অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন অথবা মুক্তিপণের বিনিময়ে বা রহস্যজনকভাবে কোনো দাবি আদায় ছাড়াই ফিরে এসেছেন অনেকে। সম্প্রতি বেলা’র নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানার স্বামী আবু বকর সিদ্দিক অপহৃত হন। অপহরণের ৩৫ ঘণ্টা পর কোনো রকম মুক্তিপণ ছাড়াই ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে।

(ওএস/এটি/মে ০১, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test