E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কিশোরগঞ্জে শ্রেণিকক্ষের অভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত

২০১৪ নভেম্বর ১৭ ১৫:৩৩:২২
কিশোরগঞ্জে শ্রেণিকক্ষের অভাবে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জ শহরের বত্রিশে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদেরকে শ্রেণিকক্ষের অভাবে বারান্দায় ক্লাস করতে হচ্ছে। এছাড়া বিদ্যালয়ের সামনের মাঠ অনেক নিচু থাকায় বর্ষাকালে সেখানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। তখন শিক্ষক ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাটু পানি ভেঙে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। আর গরমের দিনে বারান্দায় ক্লাস করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা রোদেপুড়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে।

বিদ্যালয়ে উপস্থিতির তুলনায় রয়েছে শিক্ষকদেরও সংকট। এ ব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষ যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট বেশ কয়েকবার লিখিতভাবে জানানোর পরেও কোন কাজ হয়নি। বর্তমানে বিদ্যালয়ের নানাবিধ সমস্যায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠ কার্যক্রম চরমভাবে হচ্ছে।

জানা গেছে, ১৯৭২ সালে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা মিলে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। বিগত জাতীয় পার্টি ও বিএনপি সরকারের আমলে এই বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত কোন উন্নয়ন হয়নি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে ১টি একতলা ভবন নির্মাণ করে। ১৯৯৮ সালের ১৪ মার্চ বর্তমান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ভবনটি ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন করেন। ভবনের ৪টি কক্ষের মধ্যে একটি অফিস ও অন্য তিনটি শ্রেণিকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩২২ জন।

এছাড়া প্রাক-প্রাথমিকে রয়েছে আরো ৩৯ জন। এসব শিক্ষার্থীদের মাত্র ৪ জন শিক্ষক দিয়ে পাঠদানসহ দাপ্তরিক কাজ চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ের ভবনের বিমে ফাটল দেখা দিয়েছে। বর্ষাকালে ছাদ দিয়ে পানি পড়াসহ ভবনটি বর্তমানে ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বিদ্যালয়ে সমাপনী পরীক্ষায় প্রতি বছরই পাশের হার শতভাগ। সম্প্রতি সদর সহকারী শিক্ষা অফিসার বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে শ্রেণিকক্ষ বাড়ানোসহ অবকাঠানো উন্নয়ন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে সুপারিশ করেছেন। সম্প্রতি সরেজমিনে গেলে অভিভাবক সালমা, রোকেয়াসহ স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়টির করুণ অবস্থা সম্পর্কে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর অবগত থাকলেও এত বছর পেরিয়ে গেলেও এখানে নতুন ভবন নির্মাণ হচ্ছে না। বিষয়টি খুবই হতাশাজনক। অথচ শহর ছাড়িয়ে অনেক জায়গায় ইতোমধ্যে নতুন ভবন নির্মিত হয়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনি রানী সরকার জানান, বিদ্যালয়ে তিনিসহ মাত্র ৪ জন শিক্ষক থাকায় এবং স্কুলভবনে স্থান সংকুলান না হওয়ায় পাঠদান বিঘ্ন হচ্ছে। তিনি জরুরী ভিত্তিতে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আরজু মিয়া জানান, একাত্তরের পর মুক্তিযোদ্ধারা মিলে বঙ্গবন্ধুর নামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। বিগত বিএনপি সরকারের আমলে এটির নাম পরিবর্তন করতে বলা হয়েছিল। তা না করায় সেসময় অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার পরও বিদ্যালয়ের এমন করুণ দশা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম মাওলা জানান, জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যালয়ে ৬ তলা ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আবারো উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলেও তিনি এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।

(পিকেএস/এএস/নভেম্বর ১৭, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test