E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ইছামতীতে বালি উত্তোলন, ভাঙনের কবলে বেড়িবাঁধ

২০১৪ ডিসেম্বর ০৭ ১৮:২৫:০০
ইছামতীতে বালি উত্তোলন, ভাঙনের কবলে বেড়িবাঁধ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী ইছামতী নদী থেকে ইজারা বর্হিভুত স্থানে বালি তোলা হচ্ছে। ফলে নদীর স্রোত ভারতীয় সীমানার উপর দিয়ে প্রবাহিত না হয়ে বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কালীগঞ্জের কামদেবপুর ও খারহাট এলাকার বেড়িবাঁধ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত ও নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে রবিবার সকাল সাতটার দিকে কালীগঞ্জ উপজেলার ভাড়াসিমলা ইউনিয়নের সুইলপুর,খারহাট, কামদেবপুর, চক গোবিন্দপুর ও কামদেবপুর এলাকায় যেয়ে দেখা গেছে ইছামতী নদীতে ভাটা মুরু হয়েছে। ইছামতী নদীর আন্তজার্তিক জল সীমানা বরবর কয়েকটি বালির চর জেগে উঠেছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জ থানাধীন ঘোষপাড়া ও কালীগঞ্জের চক গোবিন্দপুর এর মধ্যবর্তী স্থানে জেগে ওঠা চরের বাংলাদেশের অংশে কমপক্ষে ২০টি নৌকায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে।


জানতে চাইলে নৌকা মালিক কামদেবপুর গ্রামের আব্দুল বারি, রাম চন্দ্র সাহা, বসন্তপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস, জগন্নাথ সাহা, আবুল কালাম জানান, বসন্তপুরের জুলফিকার আলী ভুট্টো চলতি বাংলা সনের বৈশাখ মাস থেকে সুইলপুর মৌজার মধ্যে ১০ একর চরের বালি উত্তোলন করার ইজারা পেয়েছেন। সেখানে পর্যাপ্ত বালি উত্তোলনে সমস্যা দেখা দেওয়ায় খারহাট ও চক গোবিন্দপুর চরের বালি তোলার কথা বলেছেন। বালি তোলা ও বহনের জন্য তারা তারা নৌকা প্রতি গড়ে (ছোট ও বড়) প্রতিদিন ৬০০ টাকা পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া প্রতি নৌকায় পাঁচ থেকে ছয়জন করে শ্রমিক রয়েছে।


সীমান্তবর্তী কামদেবপুর গ্রামের ছাদেক আলী জানান, খারহাট ও চক গোবিন্দপুরের নদী চরের বাংলাদেশের অংশে বালি উত্তোলন করার ফলে নদীর স্রোত এদেশের সীমান্তের বেড়িবাঁধে আঘাত হানছে। ফলে প্রতি বছর বেড়িবাঁধ ভেঙে বা পানি উপচে বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। গত দু’ বছরে কামদেবপুর বেড়িবাঁধ সংলগ্ন তার দু’বিঘা জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। একইভাবে অপরিকল্পিতভাবে বালি উত্তোলনের ফলে ভাড়াসিমলা ইউনিয়নের খারহাট , কামদেবপুর, চক গোবিন্দপুরসহ কয়েকটি গ্রামেরশতাধিক বিঘা জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার কথা বলেন, খারহাটের জয়দেব দাস, সনৎ দাস, অসীম হালদার, কামদেবপুরের আব্দুল হামিদ, ফতেমা খাতুন ও আব্দুল গফফার। তারা অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদার জুলফিকার আলী স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে সুইলপুরের পরিবর্তে খারহাট ও চক গোবিন্দপুরের চরে বালি উত্তোলন করে জনস্বার্থ বিরোধী কাজ করে চলেছেন। এতে বেড়িবাঁধ সংলগ্ন বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কারাধীন বেড়িবাঁধের কাজ হুমকির মুখে পড়েছে। কামদেবপুর ও খারহাটের কয়েক’শ ফুট বেড়ি বাঁধ ভাঙনের মুখে। হুমকির মুখে কৃষি ক্ষেত্র ও চিংড়ি ঘেরসহ কয়েকটি গ্রামের জনপদ। নিরুপায় হয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে। তাতেও বন্ধ হয়নি অবৈধ বালি উত্তোলন।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের ঠিকাদার জুলফিকার আলী ভুট্টো জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারি ভূমি কর্মকর্তার নির্দেশ মত তিনি বালি উত্তোলন করছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক আহম্মদ জানান, খারহাটে শফিউর রহমান ও সুইলপুরে জুলফিকার আলী বালি কাটার ইজারা নিয়েছে। জুলফিকার আলী নিজের ইজারা বহির্ভুত জায়গায় বালি কাটাচ্ছেন অভিযোগ পেয়ে কয়েকবার ঘটনাস্থলে যেয়ে প্রমান পাননি। তবে ইজারা বর্হিভুত জায়গায় বালি উত্তোলন করলে তাদেরকে ধরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে কারাদণ্ড প্রদানের হুশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

(আরকে/এএস/ডিসেম্বর ০৭, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test