E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সুন্দরবনকে বাঁচাতে প্রয়োজন অয়েল সুইপার জলযান!

২০১৪ ডিসেম্বর ১৩ ১৭:১৩:৩২
সুন্দরবনকে বাঁচাতে প্রয়োজন অয়েল সুইপার জলযান!

বাগেরহাট প্রতিনিধি : পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না পাওয়ায় সুন্দরবনে ছড়িয়ে পড়া কালো ফার্নেস তেল অপসারণে কাজ করতে পারছে না কাণ্ডারি-১০। তবে কান্ডারি-১০ যে পরিমান ক্যমিকেল রয়েছে তা দিয়ে মাত্র এক ভাগ তেল ডুবিয়ে দেয়া সম্ভব। এতেও রয়েছে বিশেষঞ্জদের আপত্তি। সুন্দরবন বিভাগের উদ্যোগে তেল অপসারণে ১০০ নৌকায় করে স্থানীয় কয়েক’শ শ্রমিক কাজ করছেন।

শনিবার সকাল ৯টা থেকে তেল অপসারণে কাজ শুরু করা হয়। সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আমির হোসাইন চৌধুরী জানিয়েছেন, দ্রুত তেল অপসারণে ২০০ শ্রমিক কাজ করছে। শনিবার সারা দিন কাজ চলবে। তবে, প্রথম দিন তোলা সম্ভব হয়েছে ৫ হাজার লিটার। এভাবে হাতুড়ে উপায়ে তেল তোলা হলে সময় লাগবে ৭৮ দিন। এখন প্রয়োজন ভাসমান অয়েল সুইপার জলযানের। তেল দ্রুত চুষে নিতে সক্ষম এই অয়েল সুইপার জলযান রয়েছে এশিয়ার অনেক উন্নত দেশে। সিঙ্গাপুর মালেশিয়া বা আরব আমিরাত সরকারের সাহায্য নিয়ে সেখান থেকে দ্রুত অয়েল সুইপার জলযান আনা প্রয়োজন। পরিবেশ অধিদফতর থেকে কাণ্ডারিকে রাসায়নিক ছিটানোর অনুমতি না দিলে কালও তেল অপসারণে কাজ করানো হতে পারে। জোয়ারের সময় খালগুলোতে যেন ফার্নেস অয়েল যেতে না পারে সে জন্য বৃহস্পতিবার ১৮টি খালের মুখে নেট দেওয়া হয়েছে। গত পাঁচ দিনেও দেখা মেলেনি ডলফিনের। শনিবার দুর্ঘটনা স্থল পরির্দশনে এসে নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান জানান, দ্রুত তেল আপসার ও সুন্দরবনের ক্ষয়খতি কমিয়ে আনতে রবিবার আন্তঃমন্ত্রনলায়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। শ্যালা নদীতে ডুবে যাওয়া জাহাজের তেলের প্রভাবে সুন্দরবনের গুরুত্বর কোনো ক্ষতি হবে না বলে নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান আশাবাদ ব্যক্ত করেন। মন্ত্রী বলেন, “আমরা বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছে এতে মারত্মক ক্ষতি হবে না।” সুন্দরবনে ট্যাংকার ডুবির ঘটনায় চাঁদপাই রেঞ্জ পরিদর্শনকালে শনিবার দুপুরে সংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। ভাসমান তেল আহরণে সরকারের গৃহিত পদক্ষেপের উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, স্থানীয় জনগনকে সম্পৃক্ত করে তেল অপসারণ অত্যন্ত কার্যকর একটি পদক্ষেপ। তিনি সরেজমিনে সুন্দরবনের নদী-খাল থেকে তেল আহরণের কাজ পরিদর্শন করেন। মন্ত্রী বলেন, তেল অপসারণে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। মন্ত্রী জানান, পরিবেশের ছাড়পত্র না পাওয়ায় তেল অপসারণে ক্যামিকেল ব্যবহার করা হচ্ছে না। তাছাড়া ভাসমান তেলের ঘনত্ব কমে যাওয়ায় এখন ক্যামিকেল পাউডার ব্যবহারের বাস্তবতা নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন। নৌ-মন্ত্রী আরও বলেন, তেলের কারণে সুন্দরবনে এখনও পর্যন্ত খুব বেশি প্রভাব পড়েনি। জলজ প্রাণীর তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। ঘষিয়াখালী চ্যানেলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে শ্যালানদীর রুটটি ব্যবহার করতে হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। আন্তজাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে ঘষিয়াখালীর চ্যানেলের খনন কাজ শুরু হয়েছে, আগামী এক বছরের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বর্তমান শ্যালানদীর রুটটি বন্ধ করে কচিখালী বা’ সুপতি হয়ে বিকল্প রুট চালু করার বিষয়টি সরকার খতিয়ে দেখছে বলে তিনি জানান। তাঁর মতে, কচিখালী বা’ সুপতির বড় নদী হয়ে আপাতত নৌযান চলাচল করলে ঝুঁকি অপেক্ষাকৃত কম থাকবে। পরিদর্শন কালে মন্ত্রীর সাথে ছিলেন, পরিবেশ ও বন মন্ত্রনালয়ের তদন্ত টীমের প্রধান মো: নুরুল করিম, মংলা বন্দরের চেয়ারম্যার কমডোর হাবিবুর রহমান ভুঁইয়া, নৌমন্ত্রনালয়ের তদন্ত টীমের প্রধান যুগ্ম-সচিব নূরুন রহমান, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মু: শুকুর আলী, পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্যা, কোষ্টগার্ড মংলাস্থ ঘাটির সিও ক্যাপ্টেন কাজী মেহেদী মাসুদ প্রমুখ।

আবারও সুন্দরবনের ভিতরে নৌরুট!

সুন্দরবনের শ্যালা নদীর ভিতর দিয়ে চলা অবৈধ নৌরুটে অয়েল ট্যাংকার ডুবির পর ওই রুটটি বন্ধ করে দেয় বিআ্ইডাব্লুটিএ। অয়েল ট্যাংকার ডুবে সুন্দরবনের ফার্নেস অয়েল ছড়িয়ে পরায় মহা বিপর্যয়ে পড়েছে সুন্দরবন। এই অবস্থার মধ্যে বিআইডাব্লুটিএ সুন্দরবনের সুপতি-কচিখালী নদী দিয়ে নতুন করে নৌযান চলাচলের জন্য সিধান্ত নিতে যাচ্ছে। রবিবার এ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রনালয়ের বৈঠকে বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে সিধান্ত গ্রহন করা হবে বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান। শনিবার সুন্দরবন পরিদর্শন শেষে জয়মনি এলাকায় সাংবাদিকদের সাথে আলাপ কালে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। মন্ত্রী আরো জানান, আগামী ১ বছরের মধ্যে মংলা ঘষিয়াখালী নৌরুটের ড্রেজিং কাজ শেষ হবে সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে নৌচলাচল বন্ধ করা হবে। তবে প্রস্তাবিত এই নৌরুট নিয়ে রয়েছে সুন্দরবন বিভাগের চড়ম আপত্তি।

মংলায় আটকা ২ শতাধিক লাইটারেজ জাহাজ

সুন্দরবনের অয়েল ট্যাংকার ডুবির পর বন্ধ করে দেয়া হয় অবৈধ ভাবে চলা শ্যালা নদীর চ্যানেলটি। ফলে মংলা বন্দরে আটকা পড়েছে ২ শতাধিক লাইটারেজ জলযান। এসমব জলযানের মাস্টার ও ক্রুরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। সারা দেশের সাথে মংলা বন্দরের নৌযোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মংলা বন্দরে অবস্থানরত ১১টি জাহাজে পন্য উঠানামার কাজ দারুন ভাবে ব্যহত হচ্ছে। মংলা বন্দর হারবার মাস্টার খান মোঃ আখতারুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চত করেছেন।


চাই অয়েল সুইপার জলযান দেশের দক্ষিন উপকুলের প্রায় তিন কোটি মানুষের প্রাকৃতিক মা হিসাবে খ্যাত সুন্দরবনকে বাঁচাতে এখনই দরকার অয়েল সুইপার জলযান। নদী, সমুদ্র বা জলাভূমি থেকে ভাসমান তেল দ্রুত চুষে নিতে সক্ষম এই অয়েল সুইপার জলযান রয়েছে এশিয়ার অনেক উন্নত দেশে। সিঙ্গাপুর মালেশিয়া বা আরব আমিরাত সরকারের সাহায্য নিয়ে সেখান থেকে দ্রুত অয়েল সুইপার জলযান আনা প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের ধারনা সুন্দরবনকে রক্ষা করা এখন বাংলাদেশের জন্য চ্যলেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অয়েল সুইপার জলযান আনা হলে দ্রুতই রক্ষা করা সম্ভব হবে সুন্দরবনকে।

পাঁচ দিনেও দেখা মেলেনি ডলফিনের

কয়েক বছর আগেও প্রানী বিজ্ঞানীদের কাছে ইরাবতি ছিল হারিয়ে যাওয়া ডলফিন। বিশ্বের সবাই জানতো ইরাবতি ডলফিন পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বাংলাদেশের একদল প্রানী বিজ্ঞানী কয়েক বছর আগে সুন্দরবনসহ উপকুলে খুজে পায় হারিয়ে যাওয়া ওই ইরাবতি ডলফিনসহ ৬ প্রজাতির ডলফিনের। হারিয়ে যাওয়া ডলফিন ইরাবতি সুন্দরবনে রয়েছে এ খবরে তখন সারা বিশ্বে তোলপার সৃষ্টি করে। সুন্দরবনে শ্যালা নদীতে মঙ্গলবার ফার্নিস অয়েল বোঝাই ট্যাংকার ডুবির পর তেল ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। মঙ্গলবার থেকে শ্যালা নদীতে ডলফিনের অভয়াশ্রমে আর দেখা মিলছে না ইরাবতিসহ ৬ প্রজাতির ডলফিনের। সুন্দরবন বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবীদ ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম জানান, ইরাবতিসহ সুন্দরবনের ৬ প্রজাতির ডলফিন খুবই স্পর্সকাতর। তারা যখন বুঝেছে তাদের অভায়শ্রম আক্রান্ত হয়েছে তারা দ্রুতই স্থান ত্যাগ করেছে এমনটিই মনে হচ্ছে। গত ৫ দিনে শ্যালা নদীসহ তার আশপাশের কোথাও কেউ ডলফিনের দেখা পায়নি। সুন্দরবনের বিস্তৃর্ন এলাকায় ফার্নিস অয়েল ছড়িয়ে পড়ায় ডলফিন যদি সুন্দরবন ত্যাগ করে তবে বিচিত্র হবার কিছু নেই। তিনি আরো জানান, সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী সুন্দরবনে ৪শ ৪৪টি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মধ্যে ৬৩টি বাস এই শ্যালা নদী এলাকায়। এ রয়েল বেঙ্গল টাইগারেরও দেখা মিলছে না। আমাদের এ সম্পাদ হারানোর জন্য নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়সহ যারাই দায়ী তাদের একদিন জাতির কাছে জবাবদীহি করতে হবে এমনটাই মনে করেন এই পরিবেশবীদ।

শ্যালা রুট বন্ধে বিআইডাব্লুটিএ’কে ৩ বছরে ৭টি চিঠি

সুন্দরবনের শ্যালা নদী দিয়ে নৌচলাচল বন্ধ করতে সুন্দরবন বিভাগ গত ৩ বছরে ৭ বার চিঠি দেয় বিআইডাব্লুটিএ’কে। সুন্দরবন বিভাগের ওই সব চিঠিতে জাহাজ চলাচলে শ্যালা নদীতে বিলুপ্তপ্রায় ইরাবতি ডলফিনসহ ৬ প্রজাতির ডলফিনের অভয়াশ্রম ও সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য বা ইকো সিষ্টেমে বিরূপ প্রভাব পড়ছে বলে জাহাজ চলাচল বন্ধ করতে বলা হয়। সুন্দরবনকে বাঁচাতে ২০১১ সালের ২১ আগষ্ট থেকে ৩বছরে এসব চিঠিতে কর্ণপাত না করে অবৈধ ভাবে জাহাজ চলাচল অব্যাহত রাখে বিআইডাব্লুটিএ। এতথ্য জানিয়েছেন, পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগের ডিএফও আমির হোসাইন চৌধুরী।

তেল ছড়িয়েছে ১ লাখ হেক্টর ম্যানগ্রোভ বনে

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই ও শরণখোল রেঞ্জের ১শ’ কিলোমিটার বন ও নদীতে ছড়িয়ে পড়েছে ফার্নেস অয়েল। এমধ্যে এদুটি রেঞ্জের ১লাখ হেক্টর ম্যানগ্রোভ বনের সুন্দরীসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ পালা ও লতা গুলমে শ্বাসমূলে কালো ফার্নেস অযেলের আস্তরন পড়েছে । ম্যানগ্রোভ বনের চরিত্র হচ্ছে গাছগুলো তাদের শ্বাসমূল দিয়েই অক্সিজেন নিয়ে থাকে। গাছেরএ শ্বাসমূলে তেলে মোটা আস্তরন পড়ায় এ বিশাল বন এলাকার গাছের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন সুন্দরবন বিভাগ। ইতিমধ্যে কোন কোন গাছ বিবর্ন হতে চলেছে।

এক’শ নৌকায় হাতুড়ে পদ্বতিতে তেল উত্তোলন

‘ঝড়-জলোচ্ছাস থেকে মায়ের মতো আগলে রাখা সুুন্দরবন’কে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে বনসন্নিহিত লোকালয়ের মানুষসহ জেলে ও বনজীবীরা। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের ব্যবস্থাপনায় দ্বিতীয় দিনে এক‘শ নৌকা নিয়ে ২১টি খালে নেমে পড়েছে কয়ে‘শ জেলে-বনজীবী। এতথ্য নিশ্চিত করেছেন রেঞ্জার গাজী মতিয়ার রহমান। শুক্রবার বনসন্নিহিত লোকালয়ের মানুষসহ জেলে ও বনজীবীরা খালে ছড়িয়ে পড়া তেল আহরন করেছে প্রায় ৫ হাজার লিটার। ৩০ টাকা লিটার দরে আহরিত ওই তেল সুন্দরবনে বসেই কিনে নিয়েছে পদ্ম অয়েল কোম্পানী। শনিবার এক‘শ নৌকা নিয়ে নেমে পড়া কয়ে‘শ জেলে-বনজীবীরা আরো অধিক পরিমান ভাসমান তেল আহরন করতে পারবে বলে আসা করছে বন বিভাগ। সর্ব শনিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত এভাবে সর্বমোট ৮ হাজার লিটার আহরিত তেল কিনেছে পদ্ম অয়েল কোম্পানী। পদ্ম অয়েলের সহকারী ব্যবস্থাপক ইব্রাহিম হামিদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

তেল মিশ্রিত লোনা পানিতে করমজলের ৭ কুমির ছানা আক্রান্ত

সুন্দরবনের করমজলে অবস্থিত দেশের একমাত্র কুমির প্রজনন কেন্দ্রটির কুমিরও আক্রান্ত হয়েছে শ্যালা নদীর ছড়িয়ে পড়া তেলে। প্রজনন কেন্দ্রর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করমজল ফরেষ্ট রেঞ্জার ও কুমির বিশেষঞ্জ আব্দুর রব এতথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, প্রতিদিনের ন্যায় বৃহস্পতিবারও কুমির খামারের পানি পরিবর্তন জন্য নদীর পানি তোলা হয়। শুক্রবার বিকেলে কুমির প্রজনন কেন্দ্রের ৭টি কুমিরের বাচ্চার মুখে ক্ষত দেখা দিয়েছে। তিনি শুক্রবার থেকে তেল মিশ্রিত নদীর পানি প্রজনন কেদ্রের চৌবাচ্চায় ওঠানো বন্ধ রেখেছেন। তিনি এখন ওই ৭টি কুমির ছানা নিয়ে উদ্বিগ্ন। একেদ্রের ১৮টি চৌবাচ্চায় ৪ মাস ৬ বছর বয়ষী ২৫৫টি লবণ পানির কুমির রয়েছে।

সংকটে সুন্দরবনের ৩৫ প্রজাতির ম্যানগ্রোভ গাছ

সারা বিশ্বে ছড়িয়ে ছটিয়ে থাকা ৫০ প্রজাতির ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদের মধ্যে ৩৫টি প্রজাতি রয়েছে আমাদের সুন্দরবনে। তবে সুন্দরবনের থাকা ৩শ ৩৪ প্রজাতির গাছপালার মধ্যে মাত্র ৩৭ প্রজাতিই ম্যানগ্রোভ প্রজাতির উদ্ভিদ। সুন্দরবনে ৬ হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনে বাংলাদেশ অংশে স্থল ভাগের পরিমান ৪ হাজার ১শ ৪৩ বর্গ কিলোমিটার। আর ৪শ ৫০টি ছোট-বড় নদী ও খাল নিয়ে জল ভাগের পরিমান ১ হাজার ৮শ ৭৪ বর্গ কিলোমিটার। অনিস্ত্রিভাবে গাছ চুরির কারনে ৩৭ বছরে সুন্দরবনের আয়তন কমেছে ১শ ৪৪ কিলোমিটার। সুন্দরী গাছ কমেছে ২৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

কান্ডারিতে রয়েছে এক শতাংশ তেল নষ্ট করার ক্যামিকেল

চট্রগ্রম থেকে আসা বিআইডাব্লুটিএ জাহাজ কান্ডারী-১০ যে ১০ হাজার গ্যালন কেমিকেল মজুদ রয়েছে তাদিয়ে সুন্দরবনের ভাসমান তেলের মাত্র এক শতাংশ নষ্ট করা সম্ভব।যদিও বিশেষজ্ঞদের অভিমত অয়েল স্পিল ডিসপারসেন্ট নামের এই রাসয়নিক পদার্থ ভাসমান তেলের উপর স্প্রে করলে নদীর তলদেশের ইকো সিস্টেম সম্পুর্ণ নষ্ট হয়ে যাবে। এতে করে শ্যালা নদীতে বিলুপ্তি প্রায় ইরাবতী ডলফিনসহ ৬ প্রজাতির ডলফিন,মাছসহ জলজ প্রাণী ও সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যে দীর্ঘমেয়াদী বীরুপ প্রভাব ফেলবে। সেকারনে বনবিভাগের আপত্তিতে অয়েল স্পিল ডিসপারসেন্ট স্প্রে বন্দরাখা হয়েছে।


সুন্দরবন রক্ষায় মানববন্ধন

সুন্দরবনের অভ্যন্তর রুট দিয়ে জাহাজ চলাচল স্থায়ীভাবে বন্ধ, ডুবে যাওয়া জাহাজ থেকে ছড়িয়ে পড়া তেল দ্রুত অপসারণ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের দাবিতে শনিবার দুপুরে বাগেরহাটের শরণখোলায় মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুন্দরবন সহ-ব্যাবস্থাপনা কমিটি (আইপ্যাক) শরণখোলা রেঞ্জের উদ্যোগে এ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচীতে সুশীল সমাজ, শিক্ষক, সাংবাদিক, উন্নয়ন কর্মীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ অংশগ্রহন করেন। মানববন্ধন শেষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন সহ-ব্যস্থাপনা কমিটির সহসভাপতি ও রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলন, সুন্দরবন রক্ষা কমিটি সভাপতি নজরুল ইসলাম, মৎস্যজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান ফরাজী ও পিপল্স ফোরামের সভাপতি তুহিন বয়াতি প্রমূখ।


(একে/পি/ডিসেম্বর ১৩, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test