E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বিআইডব্লিউটি’র ডুবুরীদের মানবেতর জীবন যাপন

২০১৪ ডিসেম্বর ৩১ ১৪:৩২:৪৩
বিআইডব্লিউটি’র ডুবুরীদের মানবেতর জীবন যাপন

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : প্রতিটি নৌ-দুর্ঘটনায় কৃতিত্বের সাথে কর্মদক্ষতার স্বীকৃতি স্বরূপ সরকারিভাবে একাধিকবার পুরস্কারপ্রাপ্ত হলেও চাকুরী স্থায়ী না করায় আর্থিক দৈন্যতায় পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন বিআইডব্লিউটি-এর দৈনিক মুজুরী ভিত্তিক ডুবুরীরা।

অসংখ্যবার আবেদন নিবেদন করা সত্বেও দীর্ঘদিনেও তাদের স্থায়ীভাবে নিয়োগ না দেয়ায় গত সাত বছর ধরে এসব ডুবুরী, লাইসম্যান ও কমপ্রেসার অপারেটররা দৈনিক মজুরীভিত্তিক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, নৌ-দুর্ঘটনায় উদ্ধারকাজের জন্য সরকারি জাহাজ হামজা, রুস্তুম, নির্ভিক ও প্রত্যয়ে অস্থায়ী (দৈনিক মজুরী ভিত্তিক) দু’জন ডুবুরী, একজন লাইসম্যান ও দু’জন কমপ্রেসার অপারেটর রয়েছেন। এছাড়াও সরকারিভাবে (নিয়মিত) ডুবুরী রয়েছেন মাত্র তিনজন। সূত্র মতে, ২০০৮ সালে বিআইডব্লিউটি’র ঢাকা ও নায়ারণগঞ্জে বিভিন্ন ইন্টারভিউর পর ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে ডুবুরী হিসেবে মো. ইমাম হোসেন ও নুরুল ইসলাম হাওলাদার, লাইসম্যান হিসেবে রিন্টু সিকদার, কমপ্রেসার অপারেটর হিসেবে সোহরাব হোসেন ও স্বপন হাওলাদারকে ২৩৪ টাকার দৈনিক মজুরী ভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়। শুরুতেই নিয়োগপ্রাপ্তরা উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা ও রুস্তুমে কর্মরত ছিলেন।

পরবর্তীতে ২৩৪ টাকার স্থলে দৈনিক মজুরী বৃদ্ধি করে জনপ্রতি ৩৩৮ টাকা করে ২০১৪ সালে ইমাম হোসেন, নুরুল ইসলাম, রিন্টু সিকদারকে নির্ভিক এবং কমপ্রেসার অপারেটর সোহবার হোসেন প্রত্যয় ও স্বপন হাওলাদারকে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজায় বদলী করা হয়। সূত্রে আরো জানা গেছে, দৈনিক মজুরী ভিত্তিক অনিয়মিতদের বাহিরে সরকারীভাবে স্থায়ী নিয়োগকৃত হিসেবে রয়েছেন মাত্র তিনজন ডুবুরী। এরমধ্যে হামজায় সবির সরদার ও প্রত্যয়ে আব্দুর রাজ্জাক এবং মাসুদ হোসেন কর্মরত রয়েছেন। এদেরমধ্যে সবির সরদার অসুস্থ থাকায় উদ্ধার কাজে তিনি অংশ নিতে পারছেন না ।

দৈনিক মজুরী ভিত্তিক (অস্থায়ী) ডুবুরী হিসেবে উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভিকে কর্মরত মো. ইমাম হোসেন জানান, তিনিসহ অন্যান্যরা তাদের চাকুরী স্থায়ী করার জন্য একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে আবেদন করেও কোন সুফল পাননি। তিনি আরো জানান, ২০০৮ সালে কর্মক্ষেত্রে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে অদ্যবধি প্রতিটি নৌ-দুর্ঘটনায় তার কর্মদক্ষতার স্বীকৃতি স্বরূপ সরকারিভাবে একাধিকবার তাকে পুরস্কার প্রদান করা হলেও আর্থিক দৈন্যতায় তিনিসহ অন্যান্যরা পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন। একাধিকবার পুরস্কারপ্রাপ্ত অপর অস্থায়ী ডুবুরী হিসেবে কর্মরত নুরুল ইসলাম হাওলাদার জানান, দৈনিক মজুরী ভিত্তিক টাকায় নিজের খাওয়া ও চিকিৎসার (স্বাস্থ্য পরীক্ষা) ব্যয়ভার বহনকরা তাদের জন্য এখন দুরুহ হয়ে উঠেছে।

তাই তারা তাদের অস্থায়ী চাকুরি স্থায়ী করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, নৌ-মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। ডুবুরী মো. ইমাম হোসেন বলেন, জীবন বাঁজি রেখে গভীর সমুদ্র ও নদীতে উদ্ধার কাজে অংশ নেই। আমরা আজ অর্থসংকটে চিকিৎসাতো দূরের কথা নিয়মিত খাবার পর্যন্ত ঠিকমত খেতে পারছিনা। সরকার আমাদের দৈনিক ভিত্তিতে যে বেতন দিচ্ছে তা দিয়ে পরিবার সামলিয়ে আমাদের অভূক্তই থাকতে হচ্ছে।


ডুবুরীদের চাকুরী নিয়মিতকরণের বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ডুবুরীরাই উদ্ধারকারী জাহাজের প্রাণ। তাদের নিয়মিত করনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আগামী ৪/৫মাসের মধ্যে বিষয়টি চুড়ান্ত হয়ে যাবে। এব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান মো. সামসুদ্দোহা খন্দকারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

(টিবি/এএস/ডিসেম্বর ৩১, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test