E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

'যারা অবরোধ-হরতাল দেয় তাগর তো ভাতের চিন্তা নাই'

২০১৫ জানুয়ারি ১৮ ১২:৪৩:৪৪
'যারা অবরোধ-হরতাল দেয় তাগর তো ভাতের চিন্তা নাই'

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : ‘যারা অবরোধ-হরতাল দেয় তাগর তো বাড়ি-গাড়ি সবই আছে। তাগর তো ভাত-কাপড়ের চিন্তা নাই। তাই মন চাইলেই অবরোধ ও হরতাল দেয়। কিন্তু আমরা তো গরিব মানুষ। সারাক্ষণ পেটের চিন্তা করতে হয়। টানা ১১দিন ধরে চলে অবরোধ ও হরতাল, ঢাকা থাইক্যা চাইল-ডাইলের কোনো ট্রাক আসতাছে না। তাই কোনো কাজকামও নাই। কাজ না থাকলে মালিক তো আমগরে টেহা দিব না। আমগর মতো গরিব মাইনষের সংসার কেমনে চলব, তা অবরোধ ও হরতাল যারা ডাকে তারা বুঝে না।

২০ দলের ডাকা টানা অবরোধ ১০ দিন পার হওয়ার পর গত শুক্রবার বিকালে এভাবেই এ প্রতিবেদকে ক্ষোভ প্রকাশ করে কথাগুলো বলছিলেন দিনমজুর মো. আনোয়া মিয়া (৩৫)। তিনি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা পৌর শহরের গোডাউন রোড়ের চাউলের আড়ৎতে কয়েকটি দোকানের ট্রাক থেকে বাস্তা নামানুর শ্রমিকের কাজ করেন। আনোয়ার জানান, সারা দিন কাজ করে মালিক যে মজুরি দেন তা দিয়েই কোনোমতে ৫জনের সংসার চালান। স্বাভাবিক কর্মদিবসে ৪০০ থেকে ৫’শত টাকা মজুরি পেলেও শুক্রবার বাজারের দিন হলেও কোনো মজুরি পাননি সে।

অবরোধ ও হরতালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ ও দুর্ভোগে পড়েন পরিবহন খাতের কর্মী ও যাত্রীরা। তাঁদেরই একজন মানিক (২৮)। বাড়ি রামগঞ্জ উপজেলায়। ঢাকা-রায়পুর মহাসড়কে চলাচলকারী ইকোন পরিবহনের তিনি একজন চালকের সহকারী। অবরোধ ও হরতালে বাস চলাচল বন্ধ। তাই রায়পুর বাস টার্মিনালে বসে অলস সময় কাটাচ্ছিলেন। সে বলেন, ‘হরতালে গত মাসসহ ৫ দিন গাড়ি চলে নাই। অহন আবার চলছে টানা অবরোধ। ফলে ১০দিন গাড়ি বন্ধ। গাড়ি বন্ধ থাকলে মালিক তো খোরাকির টাকা দেয় না। এভাবে চললে পাগল হইয়া যামু। আমরা এমন অবরোধ ও হরতাল চাই না, যেই অবরোধ ও হরতালে আমরার কামাই-রোজগার বন্ধ হইয়া যায়। বউ পোলাপান লইয়া খাইয়া না খাইয়া থাকতে হয়। বলতে পারেন কী কবে এই অবরোধ ও হরতাল বন্ধ ঘোষনা হবে।

এদিকে গাড়ী চালকদের আয়-রোজগার না থাকায় খেয়ে না খেয়েই চলছে তাদের পরিবার। এক বেলা খেলে অন্য বেলায় উপোস থাকতে হয়। দেশের সহিংস রাজনীতির কারনে অলসের কারণে জমানো থাকা সামান্য সঞ্চয়টুকুও শেষ। অভাব-অনটনে কী ভাবে চলবে আগামী দিনগুলো- এমন পরিস্থিতিতে দুঃচিন্তায় বিপর্যস্ত হয়ে ভালো নেই তারা। রায়পুর উপজেলার এক পরিবহন মালিক আব্দুর রশিদ বলেন, ‘গাড়ি কিনতে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হয়েছে। এভাবে দিনের পর দিন গাড়ি বন্ধ থাকলে ব্যাংকের ঋণ শোধ করব কীভাবে? এমন অবস্থার অবসান চাই।’

জেলা যুবলীগের সদস্য ও রায়পুর পৌর শ্রমীক লীগ নেতা তানবির হায়দার চৌধুরী রিংকু বলেন, অবরোধ ও হরতালে সাধারণ মানুষের নৈতিক সমর্থন নেই। কিন্তু অবরোধ ও হরতালে ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতার কারণে পরিবহনের শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। গড়ী চালকরা গত ৯-১০ দিন থেকে বেকার। কোন কাজ-কর্ম নেই। খুব খারাপ অবস্থায় আছে ওরা। সাধারণ মানুষের বিষয়টি বিরোধীদলের নেত্রীর বোঝা উচিত।

(এমআরএস/পি/জানুয়ারি ১৮, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test