E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নন্দীগ্রামে ইরি-বোরো ধানের ফলন বেশি, দাম নেই

২০১৫ এপ্রিল ২৪ ১৭:৩৪:৩৩
নন্দীগ্রামে ইরি-বোরো ধানের ফলন বেশি, দাম নেই

এম নজরুল ইসলাম : সমতল সোনালি ক্ষেতে রোদের আসা-যাওয়া। সোনার ধানে ভরে গেছে মাঠের পর মাঠ। মনের মাঝে একরাশ স্বপ্ন বুনে ধান চাষিরা আগমনীর গান গেয়ে যাচ্ছে। হাজার বছরের ইতিহাস পেরিয়ে একই স্থানে আবারও নব-উদ্যমে মাঠে নেমেছে সোনার বাংলার সোনার চাষিরা। তারা মাথায় গামছা আর কাঁস্তে হাতে নিয়ে মাঠের সোনা রঙের ধান কাটতে এখন মহাব্যস্ত।

তারপরেও কৃষকদের শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। ন্যায্য মূল্যে ধান বিক্রি করতে না পারলে লোকশান গুণতে হবে বলে এমন মন্তব্য করেছেন চাষিরা। বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় ইরি বোরো ধান কাটা মাড়াই পুরোদমে শুরু হয়েছে। চাষাবাদি ফসলী জমির ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষান-কৃষানীরা। তবে ধানের দাম না থাকায় কৃষকেরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। গতবারের চেয়ে এবার প্রতিমণ মিনিকেট ও পারি জাতের ধানে প্রায় ১৭০টাকা কম পাচ্ছেন বলে কৃষকেরা জানিয়েছেন। এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগের শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকেরা। বর্তমান আবহাওয়ার প্রেক্ষিতে যে কোন সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশংকায় পুরো উপজেলায় মাইকিং করার পাশাপাশি ৮০/৯০ শতাংশ পেকে যাওয়া ধান কাটতে কৃষকদের উৎসাহ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।

স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে, খাদ্য উৎপাদনের অন্যতম এউপজেলায় আগাম রোপণ করা বোরো ধান কাটা শুরু করেছে। চলতি মৌসুমে একটি পৌরসভাসহ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ২১হাজার ৪৫১হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১লাখ ২৪হাজার, ৬২১মেট্রিকটন। পোকামাকড়-রোগবালাই কম, নন ইউরিয়া সারের ব্যবহার, আধুনিক সেচ, কৃষক প্রশিক্ষণ ও মনিটরিংসহ উচ্চফলনশীল জাতের ধানের আবাদ বেশি হওয়ায় এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে বোরোর বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।

তবে পৌরসভার (কালিকাপুর-ফোকপাল) ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইদুল ইসলাম মিলন জানান, আমি ৩৫বিঘা জমিতে ইরি বোরো ধানের চাষ করেছি। কাটা মাড়াইয়ের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। গতবারের ন্যায় এবারো ধানের ফলন ভাল। কিন্তু বাজারে ধানের দাম নেই। তিনি জানান, গতবার প্রতিমণ মিনিকেট ধান ৭৪০টাকা থেকে ৭৬০টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। এবার সেইধান প্রায় ১৭০টাকা কমিয়ে ৫৬০থেকে ৫৮০টাকায় বিক্রয় করতে হচ্ছে। উপজেলার বীরপলী গ্রামের মতিউর রহমান মুসা, মানিক মিয়া, বুড়ইল গ্রামের আলাউদ্দিন সরকার, রিধইল গ্রামের ফজলুর রহমান, কৈগাড়ী গ্রামের মুজিবর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক, পেংহাজারকি গ্রামের ইউপি সদস্য নিখিল চন্দ্র, ধুন্দার বাজারের ইউপি সদস্য চাঁন মিয়া জানান, শিমলা বাজার গ্রামের ইউপি সদস্য গোলাম মোস্তফা জানান, বাজারে ধানের দাম নেই বললেই চলে। গতবার প্রতিমণ পারি জাতের ধান ৬৫০থেকে ৬৭০টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। এবার ৪৫০থেকে ৪৬০টাকা দরে বিক্রি করছি। ন্যায্য মূল্যে ধান বিক্রি করতে না পারলে লোকশান গুনতে হবে।

কৃষকেরা জানিয়েছে, ধানের বাম্পার ফলন হলেও প্রাকৃতিক দূর্যোগ নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। যদি আবহাওয়া অনুকুলে থাকে ও ধানের সঠিক মূল্য পাওয়া যায়, তবে কৃষকের লোকসান গুনতে হবেনা। এপ্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি অফিসার মুহাম্মদ মশিদুল হক জানান, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সকল কর্মকর্তারা সময়ের ফাঁকে ফসলি জমির প্রতি সুদৃষ্টি রেখেছে। গতবছরের তুলনায় এবারো ইরি-বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে।

(এএস/এপ্রিল ২৪, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test