E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ডাক্তারদের নিয়ন্ত্রক কে!

২০১৫ জুলাই ২৩ ২১:০১:৪৩
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ডাক্তারদের নিয়ন্ত্রক কে!

ঝালকাঠি প্রতিনিধি : ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের ডাক্তারদের নিয়ন্ত্রক কে! স্থানীয় রোগাক্রান্ত মানুষ, তাদের ভুক্তভুগী স্বজনসহ সচেতন মহলের মাঝে এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।

ঈদুল ফিতরের ৪ দিন পূর্ব থেকে হাসপাতালে অনুপস্থিত ডাক্তাররা ঈদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর গত ৭ দিনেও কর্মস্থলে যোগদান না করায় সকলের মাঝেই এ প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

হাসপাতালের নির্ধারিত ডাক্তারদের মধ্যে বেশীর ভাগই মাসের শুরু ও শেষে কর্মস্থলে এসে হাজিরা খাতায় উপস্থিতির স্বাক্ষর দিয়ে বেতন-ভাতা উত্তোলন পূর্বক নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যাচ্ছে বলে মারাত্মক অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সম্প্রতি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বোচ্চ এক সভায় সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত ও চিকিৎসকদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে ঝালকাঠি সদর আসনের সংসদ সদস্য শিল্পমন্ত্রী আলহাজ্ব আমির হোসেন আমু সিভিল সার্জন ডাঃ আঃ রহিম কে নির্দেশ দিলেও তিনি তার প্রতি কোন ভ্রুক্ষেপ করছেন না।

হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ঝালকাঠি ‘আধুনিক সদর হাসপাতাল’ নামক এ চিকিৎসা কেন্দ্রে কাগজ কলমে ২০ জন ডাক্তার কর্মরত থাকলেও মেডিকেল অফিসার ও ভারপ্রাপ্ত আরএমও (আবাসিক মেডিকেল অফিসার) সহ মাত্র ৪ জন ছাড়া ১৬ জন ডাক্তারই গত ১৫ জুলাই বা তারও আগে থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। গত ১৫ জুলাই থেকে প্রায় ১০ দিন ধরে এসব ডাক্তাররা কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় জেলার প্রধান হাসপাতালটির চিকিৎসা সেবা সম্পূর্ন ভেঙ্গে পড়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক পদাধিকারী সিভিল সার্জন ডাঃ আঃ রহিম রহস্যজনক কারণে এ বিষয়ে চরম উদাসীন ভূমিকা পালন করছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সিভিল সার্জনের উদাসীনতা ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় অনেক চিকিৎসক কর্মস্থলে একটানা অনুপস্থিতি, ইচ্ছামাফিক হাসপাতালে আসা-যাওয়া ও হাসপাতালে এসেও ঘন্টাখানেকের মধ্যে প্রাইভেট চেম্বারে চলে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।

সূত্রটি আরো জানায়, গত ৭ জুলাই ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের ডাঃ আরিফুর রহমান নামে একজন জুনিয়ার এ্যনেসথাসিয়ার চিকিৎসক কে সংযুক্ত করা হলেও এরপর থেকে তিনি সংযুক্ত না থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত একটানা বিচ্ছিন্ন থাকছেন। জুনিয়ার কনসালটেন্ট রেডিওলজিষ্ট পদে জনৈক ডাঃ নাজনীন আক্তার নামের ডাক্তার এ হাসপাতালে নিয়োগপ্রাপ্ত হিসাবে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করলেও অজ্ঞাত ক্ষমতার বলে ‘অন্যত্র বদলীর অজুহাতে’ তিনি একদিনের জন্যও হাসপাতালের দায়িত্ব পালন করেননি।

গাইনী বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট পদে ডাঃ মাহাবুবুর রহমান নির্ধরিত থাকলেও তিনি অন্যত্র বদলীর অজুহাতে একইভাবে কর্মস্থলে না এসে বা কোন প্রকার চিকিৎসা সেবা না দিয়ে মাসিক বেতন-ভাতা উত্তোলন ও গলধকরণ করছেন।

স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সহকারী সার্জন পদে ডাক্তার শিউলী পারভীনকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের সংযুক্ত করলেও তিনি গত ৯ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত ছুটি, ১৪ তারিখ অনুপস্থিত, ২০ থেকে ২৩ তারিখ পর্যন্ত ছুটিতে রয়েছেন।

এছাড়াও ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের অর্থোসার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ মোঃ খোরশেদ আলম, চক্ষু বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ মির্জা মাহাবুবুর রহমান, সার্জারী বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ আঃ রহিম, ডেন্টাল সার্জন বিভাগের সংযুক্ত ডাঃ তোফাজ্জেল হোসেন ও ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার পদে ডাঃ আলমগীর হোসেনকে গত ১৫ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত আরএমও মেডিকেল অফিসার ডাঃ মানষ কৃষ্ণ কুণ্ডুর সাথে আলাপকালে তিনি জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারবেন না বা তার কিছু করণীয় নেই। হাসপাতালের তত্ত্বাবধারক সিভিল সার্জন। তাই তার সাথে আলাপ করার পরামর্শ দেন তিনি। তবে সিভিল সার্জন ডাঃ আঃ রহিমকে ঝালকাঠি আধুনিক সদর হাসপাতালে তার নির্ধারিত কক্ষে ও তার সেলফোনে কয়েক দফা চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

(এএম/পিএস/জুলাই ২৩, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test