E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জীব বৈচিত্র হারাতে বসেছে গোপালগঞ্জের চান্দার বিল

২০১৫ অক্টোবর ২৬ ১৬:২৫:৪৩
জীব বৈচিত্র হারাতে বসেছে গোপালগঞ্জের চান্দার বিল

গোপালগঞ্জ থেকে মোজাম্মেল হোসেন মুন্না : গোপালগঞ্জের চান্দার বিল নিয়ে রয়েছে নানা কল্প কাহিনী। এ বিলের মধ্যে রয়েছে ৪৪টি গ্রাম আর অর্ধ লক্ষাধিক লোকের বসবাস। আধুনিকতার এ যুগেও এ অঞ্চলের বাসিন্দারা তেমন এগুতে পারেনি।

নেই বিদ্যুৎ ও ভালো কোন যোগাযোগ ব্যবস্থা। এক সময়ে নানা প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর ছিল এ বিল। জীব বৈচিত্রে ভরপুর এ বিলের বাসিন্দারা কৃষি ও মৎস্য সম্পদ আহরণ করে জীবন ধারন করে থাকেন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে চান্দার বিল তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। আর বিলাঞ্চলের মানুষের ও দুখ-কষ্ট বাড়ছে।

কথিত আছে এই বিলেই নাকি এক সময় চাঁদ সওদাগরের নৌকা ডুবি হয়েছিল। যে কারনে বিলের নাম চান্দার বিল হয়েছে। এক সময়ে কাশিয়ানী, মুকসুদপুর ও গোপালগঞ্জ হয়ে কোটালীপাড়া পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল এ বিল। প্রাকৃতিক সম্পদে ছিল ভরপুর। কালের বিবর্তনে তা হারিয়ে যেতে বসেছে। চারিদিকে শুধু পানি আর পানি। আধুনিকতার কোন ছাপ নেই বিলের মধ্যে বসবাসকারীদের মধ্যে।

চারিদিকে শুধু বিলের পানি থৈ থৈ করছে। যাতায়াত বলতে শুধুমাত্র নৌকাই ভরসা। বছরের ৭/৮ মাসই পানিতে ডুবে থাকে এসব এলাকা। এলাকার শিক্ষার্থীদেরকে পড়তে হয় নানা অসুবিধায়। নৌকা চালিয়ে স্কুলে যাওয়া আবার একইভাবে বাড়ি ফেরা এ যেন তাদের নিত্য দিনের কাজ। এলাকায় বিদ্যুৎ পৌছেনি এখনো। কেউ অসুস্থ হলে তাকে নিয়ে উপজেলা বা জেলা সদরে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকে না।

প্রায় ১১ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকার বৃহত্তর জলাভূমি চান্দার বিল। জীব বৈচিত্রে ভরা এ বিল। এ বিলে রয়েছে প্রচুর প্রাকৃতিক মাছ, শাপলা-শালুক, শামুকসহ প্রাকৃতিক সম্পদ। হাজার হাজার মানুষ এ বিলকে ঘিরে তাদের জীবন জীবিকা চালান। কিন্তু, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এবং বিলে লবন পানি প্রবেশ করা, খাল-নালা ভরাট হয়ে যাওয়া, অবাধে শামুক নিধন, অবৈধ যন্ত্র পাতি দিয়ে মৎস্য আহরনসহ নানা কারনে এসব প্রাকৃতিক সম্পদ হারিয়ে যেতে বসেছে। এ বিলে মৎস্য শিকার, শাপলা ও শামুক কুড়িয়ে তা বাজারে বিক্রি করে হাজার হাজার পরিবার তাদের জীবন জীবিকা চালান।

স্কুল শিক্ষার্থীরা জানায়, আমাদের গ্রাম গুলোকে দ্বীপের মতো মনে হয়। নৌকা চালিয়ে স্কুলে আসতে হয়। পড়া লেখার জন্য একটু কষ্টতো করতেই হয়।

মুকসুদপুর উপজেলার বেদগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুল বিশ্বাস জানান, যাতায়াত ব্যবস্থা ভাল না থাকায় বর্ষাকালে কয়েক মাস স্কুলে শিক্ষার্থীদের আসতে কষ্ট হয়। যে কারনে স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কম থাকে।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (বিসিএএস)-এর গবেষনা কর্মকর্তা, বিধান চন্দ্র টিকাদার জানান, গোপালগঞ্জের বৃহত্তম জলাভূমি চান্দার বিল। এ বিলাঞ্চল বছরের বেশিরভাগ সময় জলমগ্ন থাকে। চান্দার বিল এলাকার মানুষের সমস্যার অন্ত নাই। চান্দার বিলের খাল-নালা পুনঃখনন, মৎস্য অভয়াশ্রম গড়ে তোলা, অবাধে শামুক নিধন ও অবৈধ যন্ত্র পাতি দিয়ে মৎস্য আহরণ বন্ধসহ জীব বৈচিত্র রক্ষার্থে সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

(এমএইচএম/এএস/অক্টোবর ২৬, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test