E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বুধবার রাজৈরে শুরু হচেছ ঐতিহ্যবাহী কুম্ভমেলা 

২০১৪ মে ২৭ ১৭:২৩:৪৬
বুধবার রাজৈরে শুরু হচেছ ঐতিহ্যবাহী কুম্ভমেলা 

মাদারীপুর প্রতিনিধি : প্রতিবছরের মতো বুধবার থেকে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ী দীঘিরপাড় মহামানব শ্রী শ্রী গণেশ পাগল সেবাশ্রম সংঘে শুরু হচ্ছে উপমহাদেশের অন্যতম কুম্ভমেলা।
১৬৭ একর জমিতে এক রাতের জন্য উপমহাদেশের অন্যতম দেড়শ বছরের ঐতিহাসিক কুম্ভমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ মেলায় প্রায় ২০ লাখেরও অধিক ভক্তের উপস্থিতি ঘটবে বলে আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা গেছে।

আয়োজক কমিটি ও ভক্তবৃন্দরা জানান, কথিত আছে সত্য যুগে দেবতা ও অসুরদের সমুদ্র মন্থনে যে অমৃতসুধা উঠেছিল তা চারটি কুম্ভপাত্রে হরিদ্বার, প্রয়াগ, উজ্জয়িনী ও নাসিক এ চারটি স্থানে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনার পর থেকে সাধুরা কুম্ভমেলার আয়োজন করে আসছেন। ১৩৩ বছর পূর্বে জৈষ্ঠ্য মাসের ১৩ তারিখে ১৩ জন সাধু ১৩ কেজি চাল ও ১৩ টাকা নিয়ে রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ীর দীঘিরপাড় ভারতের কুম্ভমেলাকে অনুসরণ করে এ মেলার আয়োজন করেন।
সেই থেকে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ীর দীঘিরপাড় শ্রী শ্রী গণেশ পাগল সেবাশ্রমে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এক রাতের মেলা হলেও চলে সকাল থেকে পরদিন ভোর রাত পর্যন্ত।
প্রায় ৯ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে পুরো একটি এলাকার বাড়ি-ঘর, মাঠ-ঘাট ও ক্ষেত-খামারে কোন জায়গা খালি থাকে না মানুষের পদচারণায়। সমাগম ঘটে প্রায় ২০ লক্ষাধিক মানুষের। সকাল থেকেই দলে দলে জয় ডংকা বাজিয়ে ও জয় হরিবল ধ্বনি করতে করতে সাধু সন্যাসী ও ভক্তবৃন্দরা বাসে, ট্রাকে, ট্রলারে, ও পদব্রজে আসতে থাকে মেলা প্রাঙ্গণে।
শরিয়তপুর, বরিশাল, রাজশাহী, বগুড়া, চিটাগং, রংপুর, যশোর, খুলনা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, গৌরনদীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দলে দলে মানুষ আসে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও নেপাল থেকেও বহু ভক্তবৃন্দ আসে ঐতিহ্যবাহী এ কামনার মেলায়। এ মেলায় আসা হাজার হাজার সাধু সন্ন্যাসী ও তার ভক্তরা একতারা আর দোতারায় সুর দিয়ে সারা রাত মেতে থাকেন। দেশ বিদেশ থেকে আসা এসব সাধু সন্যাসী ও ভক্তরা ধর্মীয় সঙ্গীত, নৃত্য- বাদ্য বাজনা পরিবেশনের মধ্য দিয়ে রাত অতিবাহিত করেন।
এ মেলা উপলক্ষে ৭ দিন আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসে দোকানিরা। বাঁশ বেতের শিল্প কারু কাজ খচিত গৃহস্থালী মালামাল, মৃৎ শিল্প বা মাটির তৈরি তৈজসপত্র, বাহারী মিষ্টি, দৃষ্টি আকর্ষনীয় খেলনা ও বাহারী প্রসাধণী পণ্য দিয়ে সাজাবে কমপক্ষে সহস্রাধিক বিভিন্ন ধরণের স্টল। তবে বেশি ভিড় জমে মিষ্টির হোটেলে।
মেলা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ সরকার জানান, মেলায় আগত ভক্তদের আপ্যায়নে ১৫০ মণ চিড়া, ১৩০মণ গুড় ও প্রায় ১ হাজার মণ চাল-ডালের খিচুরী প্রসাদ বিতরণ করা হবে। এ দিনটি শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে ।
রাজৈর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান জানান, মাদারীপুর ডিবি পুলিশ, র‌্যাব -৮ সদস্য ও রাজৈর থানা পুলিশের সমন্বয়ে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে ।
রাজৈর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমান জানান, মেলা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার সকল প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। এখানে আগত ভক্তদের জন্য নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা রাখার জন্য গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়াও ভক্তদের জন্য যে প্রসাদের আয়োজন করা হবে তা যেন স্বাস্থ্যসম্মত হয় সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে।
(এএসএ/এএস/মে ২৭, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test