E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

উপকূলে কাঁকড়ার মৌসুম, কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ

২০১৬ ফেব্রুয়ারি ০৩ ২১:৩১:১৫
উপকূলে কাঁকড়ার মৌসুম, কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ

পটুয়াখালী প্রতিনিধি : উপকূলে এখন কাঁকড়ার মৌসুম। যে কারণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কাঁকড়া শিকারীরা। কম পুঁজিতে বেশি লাভ আর কাঙ্খিত মাছ ধরা না পরায় অনেকেই এখন পেশা বদল করে কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করছে।

ভোররাত চারটা। পটুয়াখালীর মনোহরপুর গ্রাম থেকে একদল কাকড়া শিকারী ট্রলারযোগে যাত্রা শুরু করলো সুন্দরবন সংলগ্ন কুয়াকাটার পশ্চিমে ফাতরার বনের উদ্দেশ্যে। ভোর সাড়ে ছয়টায় গন্তব্যে পৌঁছে সকালের খাবার ওখানেই সেরে নেয়। এরপর লোহার তৈরি বিশেষ শিক আর মাটি কাটার খোন্তাসহ যাবতীয় সামগ্রী নিয়ে বনের উদ্দেশ্যে যাত্রা। শুরু হয়কাঁকড়া সন্ধানের পালা। বড় বড় গর্তে লোহার শিক দিয়ে অনুসন্ধান করে কাঁকড়ার উপস্থিতি টের পাওয়া। অভিনব এ পদ্ধতিতে কাকড়ার উপস্থিতি থাকলে ওই গর্ত থেকে বের করে আনা হয় ৫'শ-৬'শ গ্রামের এক একটি বড় বড় কাকড়া। আর এভাবেই ভোর থেকে জোয়ার আসার আগ পর্যন্ত পনের থেকে বিশটিকাঁকড়া ধরে শিকারীরা।

কাঁকড়াশিকারী সন্তোষ, গৌতম, বাদল জানান, বর্ষায় প্রজননের পর ছোট কাকড়া শীতমৌসুমে বড় হয়ে সাগরকূলবর্তি বিভিন্ন বনের বড় বড় গাছের গোড়ায় গর্ত করে আবাসস্থল তৈরি করে। নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত পূণাঙ্গ কাঁকড়ারা এভাবে থাকায় খুব সহজে ধরতে পারায় এই সময়কে কাঁকড়ার মৌসুম বলা হয়ে থাকে।

যেকারণে অনেকে পেশা বদল করে এখনকাঁকড়া শিকার করছে। পটুয়াখালীর উপকূলীয় ফাতরা, গঙ্গামতি, সোনারচরসহ অর্ধশতাধিক বনাঞ্চলে অন্তত ২০ থেকে ৩০ হাজার মানুষ এ পেশায় জড়িত। এতে অনেকেই স্বাবলম্বি হয়েছে। আবার অনেকে কাকড়া বিক্রি করে এক থেকে দেড় হাজার টাকা উপার্জন করে খুব ভালভাবেই জীবিকা নির্বাহ করছে।

তবে বিভিন্ন জাল বা চাই দ্বারা মাছ শিকার করতে গিয়ে অনেকেই ছোট কাকড়া মেরে ফেলছে। এতে করে কাঁকড়ার পরিমাণ দিন দিন কমে যাবার আশংকাও করছেন কেউ কেউ। পটুয়াখালী সরকারি কলেজ প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যক্ষ পিযূষ কান্তি হরি, কাকড়ায় প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকায় শিশুসহ সকলের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কাঁকড়ার প্রচুর চাহিদা থাকায় এটি রপ্তানিযোগ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মৎস্য পন্য হিসাবে বিবেচিত। তার মতে, বৈদেশিক মুদ্রা অর্র্জনে শুধু মাত্র চিংড়ি খাতের উপর নির্ভরশীল না হয়ে কাঁকড়ার উপর গুরুত্ব দেয়া উচিত এবং উপকূলীয় এলাকায়কাঁকড়া চাষকে জনপ্রিয় গড়ে তোলা গেলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান খাত হতে পারে এটি। কুয়াকাটার আলীপুর-মহিপুরকাঁকড়া আড়তদার হরিদাস জানান, পরিবহন সমস্যার কারণে অনেককাঁকড়া মারা যাওয়ায় সেগুলো রপ্তানিযোগ্য না হওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। তা সত্বেও পটুয়াখালীর বিভিন্ন এলাকার আড়ত থেকে প্রতিমাসে প্রায় কোটি টাকার কাঁকড়া বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে বলে তার দাবি।

(এসডি/পি/ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test