E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এখন দ্রুতগামী ট্রেন : শিক্ষামন্ত্রী

২০১৯ মার্চ ০২ ১৪:৪৭:৩৯
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এখন দ্রুতগামী ট্রেন : শিক্ষামন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার : শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে আগে বলা হতো এটা মালটানা রেলগাড়ির মতো। কিন্তু এখন এটি সম্পর্কে বলা হয় দ্রুতগামী আন্তঃনগর ট্রেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির এই যে অগ্রযাত্রা সেটি অব্যাহত থাকবে বলে আমি প্রত্যাশা করি।

শনিবার (২ মার্চ) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘কলেজ পারফরমেন্স র‌্যাংকিং ২০১৬ ও ২০১৭’ অ্যাওয়ার্ড ও সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সারাবিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৮ লাখ। এই বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে আগে অনেক নেতিবাচক তথ্য আমরা জানতাম। কিন্তু বর্তমান উপাচার্যের নেতৃত্বে এই বিশ্ববিদ্যালয় আজকে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। তবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক বিষয়ে মৌলিক বই রচনা করতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোতে নোট-গাইডের বেশ প্রাধান্য। সেটি আমাদের রোধ করতে হবে।

দীপু মনি বলেন, আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সারাবছর কোনো না কোনো পরীক্ষা থাকে। এতে পাঠদান ব্যাহত হয়। তাই শুধু পরীক্ষা কেন্দ্রের জন্য কেন্দ্র নির্মাণ করা যাতে পারে। যেখানে শুধু পরীক্ষাই হবে। অন্য কোনো কিছু নয়।

তিনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন যেসব কলেজ আছে সেসব কলেজের শিক্ষার্থীরা যেন বিশ্ববিদ্যালয় মানের শিক্ষা লাভ করতে পারে সেই উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজনে প্রত্যেকটি বিভাগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস করা যায় কি না সেটা নিয়েও পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় মানের শিক্ষা লাভ করতে পারবে।

শিক্ষকদের শুধু চাকরির মানসিকতা নিয়ে পাঠদান করলে হবে না জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষকদের দায়িত্ব নিয়ে পাঠদান করতে হবে। শুধু চাকরি হিসেবে কাজ করলে হবে না। বর্তমান সময় তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। শিক্ষার্থীদেরকে তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তাও শিক্ষা দান করা যায়।

অনুষ্ঠানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন অর রশীদ বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্য চ্যালেঞ্জ ছিল সেশনজট নির্মূল করা, ক্রাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে সেই সেশনজট দূর করা হয়েছে। বর্তমানে একাডেমি ক্যালেন্ডার প্রণয়ন করা হচ্ছে। সেখানে সারা বছরের ভর্তি, পরীক্ষা, ফল প্রকাশসহ একাডেমিক সকল কার্যক্রমের অগ্রিম দিন-তারিখ ঘোষণা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা-৪ বাস্তবায়নে আমরা কলেজ র্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করেছি। এতে করে দেশের কলেজগুলোর অবস্থান চিহ্নিত করা হচ্ছে। যারা খাপার করছে তারাও নিজেদের অবস্থান দেখতে সেসব কলেজেরও পয়েন্ট উল্লেখ করা হয়েছে। যারা ভালো করছে তাদের অনুসরণ করে তারা নিজেদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে এগিয়ে যেতে পারবে।

বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম ডিজিটালাইজ করা হয়েছে উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কষ্ট করে আর গাজীপুর গিয়ে ভোগান্তি পেতে হচ্ছে না। অনলাইনের মাধ্যমে সকল সুবিধা পাচ্ছেন। আটটি আঞ্চলিক অফিসের মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে। দেশের স্বাধীনতা ও ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস শেখাতে আমরা কলেজপর্যায়ে সকল শিক্ষার্থীর জন্য স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় নামে একটি বিষয় বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

এর আগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ৭১৮টি স্নাতক (সম্মান) পাঠদানকারী কলেজের মধ্যে জাতীয়ভিত্তিক স্কোরে ২০১৭ সালের ৫টি সেরা কলেজ, ১টি সেরা মহিলা কলেজ, ১টি সেরা সরকারি কলেজ ও ১টি সেরা বেসরকারি কলেজের নাম ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ। এছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়নের প্রতি দৃষ্টি রেখে বিভিন্ন র্যাংকিংয়ে সেরা অঞ্চলভিত্তিক আরও ৬৮টি কলেজের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এসব কলেজকে অ্যাওয়ার্ড, সনদ ও চেক তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

সারাদেশে পাঁচটি সেরা কলেজ হচ্ছে- রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী (৭২.৯৬), সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ, বরিশাল (৬৬.১৫), সরকারি আজিজুল হক কলেজ, বগুড়া (৬৬.১১), সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ, পাবনা (৬৫.৯৬) ও কারমাইকেল কলেজ, রংপুর (৬৫.৭৯)। জাতীয় পর্যায়ে সেরা মহিলা কলেজটি হচ্ছে লালমাটিয়া মহিলা কলেজ (৫৯.১০), সেরা সরকারি কলেজ রাজশাহী কলেজ, (৭২.৯৬) ও সেরা বেসরকারি কলেজ হচ্ছে ঢাকা কমার্স কলেজ (৬১.৮৪)।

ঢাকা অঞ্চলে সেরা হচ্ছে ঢাকা কমার্স কলেজ (৬১.৮৪), সরকারি সা’দত কলেজ, টাঙ্গাইল, (৬১.৭৮), তেজগাঁও কলেজ (৫৯.৮৯), সিদ্ধেশ্বরী ডিগ্রি কলেজ, ঢাকা (৫৯.৬৪), লালমাটিয়া মহিলা কলেজ, ঢাকা (৫৯.১০), সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ ঢাকা (৫৯.১০), সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর (৫৮.৫০), সরকারি গুরুদয়াল কলেজ, (৫৮.৩৮), হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজ, ঢাকা (৫৭.৯৩) ও আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, ঢাকা (৫৬.৮৩)।

চট্টগ্রাম অঞ্চলে সেরা সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ, কুমিল্লা, (৬২.৪৬), ফেনী সরকারি কলেজ, ফেনী (৬০.০৩), চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ, চট্টগ্রাম (৫৯.৯৪), সরকারি সিটি কলেজ, চট্টগ্রাম (৫৭.২৭), ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ (৫৬.০০), নোয়াখালী সরকারি কলেজ (৫৪.৫৬), হাটহাজারী কলেজ, চট্টগ্রাম (৫৪.৪১), সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ, চট্টগ্রাম (৫৩.৫২), চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ, (৫৩.০১) ও চাঁদপুর সরকারি কলেজ (৫২.৩৪)।

রাজশাহী অঞ্চলে সেরা হচ্ছে রাজশাহী কলেজ, (৭২.৯৬), সরকারি আজিজুল হক কলেজ, বগুড়া, (৬৬.১১), সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ, পাবনা (৬৫.৯৬), ভবানীগঞ্জ কলেজ, রাজশাহী (৫৬.৮৪), সৈয়দ আহমদ কলেজ, বগুড়া (৫৩.৭২), হাজী ওয়াহেদ মরিয়ম কলেজ, সিরাজগঞ্জ (৫৩.২৪), সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ (৫২.৯৫), দাওকান্দি কলেজ, রাজশাহী (৫২.৬৩), রাজশাহী কোর্ট কলেজ (৫১.৯০) ও এনএস সরকারি কলেজ, নাটোর (৫০.৭৮)।

খুলনায় সেরা হচ্ছে সরকারি ব্রজলাল (বিএল) কলেজ, খুলনা (৬৩.২১), সরকারি এমএম কলেজ, যশোর (৬১.৫৮), কুষ্টিয়া সরকারি মহিলা কলেজ (৬১.১৫), সীমান্ত আদর্শ কলেজ, সাতক্ষীরা (৫৭.০৭), যশোর ক্যান্টমেন্ট কলেজ (৫৫.৭৭), ঝিকরগাছা মহিলা কলেজ, যশোর (৫৫.৫৫), এমএসজোহা ডিগ্রি কলেজ, আলমডাঙ্গা (৫২.৩১), কুমিরা মহিলা ডিগ্রি কলেজ, সাতক্ষীরা (৫১.৮১) ও খানজাহান আলী আদর্শ কলেজ, খুলনা (৫১.৬২) ও যশোর সরকারি মহিলা কলেজ (৫১.৫৮)।

বরিশাল অঞ্চলে সেরা কলেজ হচ্ছে সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ, বরিশাল, ৬৬.১৫, সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ, বরিশাল (৫১.২৪), সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ, পিরোজপুর (৪৫.৪৮) ও ভোলা সরকারি কলেজ (৪৪.৮৬)।

সিলেট অঞ্চলে সেরা কলেজ হচ্ছে সিলেটে এমসি কলেজ, সিলেট, (৫৯.৫১), দক্ষিণ সুরমা কলেজ, সিলেট (৫৩.৫১), মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ (৫২.৪৩), বৃন্দাবন সরকারি কলেজ, হবিগঞ্জ (৫২.১১), সরকারি মহিলা কলেজ, সিলেট (৫০.৩৬), মদনমোহন কলেজ, সিলেট (৪৯.৭৯) ও সরকারি শ্রীমঙ্গল কলেজ, মৌলভীবাজার (৪৮.৫৫)।

রংপুরে কারমাইকেল কলেজ, রংপুর, (৬৫.৭৯), দিনাজপুর সরকারি কলেজ, দিনাজপুর (৬০.২৮), রংপুর সরকারি কলেজ, রংপুর (৫৮.৫২), উত্তরবাংলা কলেজ, লালমনিরহাট (৫৭.০২), হাতিবান্ধা আলিমুদ্দিন কলেজ, লালমনিরহাট, (৫৫.৬০), সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজ, রংপুর (৫৪.৯৩), কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ (৫১.৪৪), লালমনিরহাট সরকারি কলেজ (৫০.৫৬), গাইবান্ধা সরকারি কলেজ, (৫০.২৭), কেবিএম কলেজ, দিনাজপুর (৪৯.১৬)।

ময়মনসিংহে সেরা কলেজ হচ্ছে সরকারি আনন্দমোহন কলেজ (৬৪.৬৮), জাহানারা লতিফ মহিলা কলেজ (৫৫.০৩), মুমিনুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ (৫২.২১), ইসলামপুর কলেজ, জামালপুর (৫১.৩৫), নেত্রকোনা সরকারি কলেজ (৪৯.১৪), শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ, মুক্তাগাছা, (৪৯.০৭) ও কৃষ্ণপুর হাজী আলী আকবর পাবলিক কলেজ (৪৮.৪৫)।

(ওএস/এসপি/মার্চ ০২, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test