E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ববি উপাচার্যের দুঃখ প্রকাশ, শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল

২০১৯ মার্চ ৩০ ০৮:৫৫:০৮
ববি উপাচার্যের দুঃখ প্রকাশ, শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল

স্টাফ রিপোর্টার : শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে গালি দেওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম ইমামুল হক।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাতে ঢাকার কলাবাগানে বিশ্ববিদ্যালয়ের লিয়াজু অফিসে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় এ দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। এসময় তিনি কথাটি ওইভাবে বলে দাবি করেন।

সভা শেষে রাত সাড়ে ১০ টায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান মোবাইল ফোনে এ কথা জানিয়েছেন।

উপাচার্যের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা যেভাবে বলছেন, উপাচার্য কথাটি সেভাবে বলেননি। তারপরও যদি কেউ এতে কষ্ট পেয়ে থাকেন, তাহলে সেজন্য উপাচার্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত। তিনি যে অর্থে কথাটা বলেছিলেন শিক্ষার্থীদের কাছে তার উল্টো ব্যাখা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান অচলাবস্থা নিরসনে খুব শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেননা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের লেখা পড়ার অনেক ক্ষতি হচ্ছে। ক্লাস ও পরীক্ষাগুলো পিছিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনিতেই শিক্ষক অনেক কম, তার ওপর যদি ক্যাম্পাস ও ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকে। তবে সেটা বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। এসব চিন্তা থেকেই স্যার দ্রুত এর সমাধান চান। তাই তার কথায় যদি ছাত্র বা অভিভাবক কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন স্যার এজন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ভিসি তার বক্তব্য তুলে ধরেছেন। যেখানে তিনি বলেছে, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা কর্তৃক ২০১১ সালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় দক্ষিণবঙ্গের উচ্চশিক্ষার একটি সমৃদ্ধ ও সর্ববৃহৎ বিদ্যাপীঠ হিসেবে তার একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বিগত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটি কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে আমার প্রদত্ত বক্তব্যের একটি বাক্যকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে কিছু ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে। আমি এ বিষয়ে দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রাজাকার সম্বোধন করিনি বরং যারা মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনের অনুষ্ঠানে বাঁধা সৃষ্টি করতে চায়, তাদের এহেন কার্যক্রম রাজাকার সাদৃশ মর্মে মন্তব্য করেছি। কথাটি কোনোভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে বলিনি আমি। এরপরেও যদি আমার বক্তব্যে কেউ কোনো কষ্ট পেয়ে থাকেন তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে চলমান রাখার স্বার্থে আমি সব শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা কামনা করছি।’

২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ না জানানোয় এর প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেওয়ার অভিযোগ উঠে উপাচার্যের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে ওইদিন থেকেই ক্যাম্পাসে ভিসির পদত্যাগ সহ ১০ দফা দাবি আদায়ে বিক্ষোভ করে আসছে শিক্ষার্থীরা।

ক্যাম্পাসে উদ্ভূতকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে গত ২৭ মার্চ দিনগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস অনুনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেন।

তবে ববি কর্তৃপক্ষের নির্দেশ উপক্ষো করে ক্যাম্পাসে কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে আন্দোলনকারীরা। সর্বশেষ শুক্রবার সন্ধ্যায় ভিসি’র অপসারণ দাবিতে ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল এবং পরবর্তীতে ভিসি’র কুশপুত্তলিকা দাহ করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি তার শনিবার (৩০ মার্চ) এর আন্দোলন কর্মসূচিও ঘোষণা করেছেন। যেখান শনিবার বিকেল ৪ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

(ওএস/অ/মার্চ ৩০, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test