E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিক্ষার্থীদের সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে মূল্যায়নের পরামর্শ শিক্ষাবিদদের

২০২০ সেপ্টেম্বর ২৩ ১৬:০৩:৪৫
শিক্ষার্থীদের সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে মূল্যায়নের পরামর্শ শিক্ষাবিদদের

স্টাফ রিপোর্টার : মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম। কবে খোলা হবে তাও অনিশ্চিত। এ কারণে সিলেবাস সম্পন্ন না হওয়ায় চলতি বছরের শিক্ষাবর্ষ পিছিয়ে যাচ্ছে। তবে ক্লাস চালু করা গেলে শিক্ষার্থীদের সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে মূল্যায়নের পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষাবিদরা।

করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে পরীক্ষা ছাড়াই পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণের চিন্তাভাবনা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এখনো অটোপাস বা অটো প্রমোশনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। একেবারেই কোনো পরিস্থিতিতে পাঠ সম্পন্ন করে মূল্যায়নের সুযোগ না থাকলে বিকল্প চিন্তা হবে অটোপাস। তবে এখনি সেটি করতে প্রস্তুত নয় সরকার।

শিক্ষাবিদরা বলছেন, একেবারে শেষ উপায় হিসেবে অটো প্রমোশনের বিষয়টি থাকতে পারে। শুরুতে শিক্ষার্থীদের জন্য ক্লাস চালু করা গেলে সংক্ষিপ্ত উপায়ে একটি মূল্যায়ন পরীক্ষা নেয়া যেতে পারে। আর যদি খোলা না যায় তাহলে পূর্বের ক্লাসগুলোতে শিক্ষার্থীর অবস্থান বিবেচনায় রাখা যেতে পারে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. একরামুল কবির বলেন, অটোপাস দিলে শিক্ষাক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে। দেখা যাবে একজন শিক্ষার্থী অষ্টম শ্রেণি পাসের যোগ্য নয়, কিন্তু সে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হলো। আবার কেউ নবম থেকে দশমে উঠলো। কিন্তু সে মূল পাবলিক পরীক্ষায় নিজেকে কোয়ালিফাই করতে পারছে না। এতে করে নিচের ক্লাসগুলোর চেয়ে উপরের ক্লাসগুলোতে প্রভাব বেশি পড়বে। কারণ নিচের ক্লাসগুলোতে অটোপাস দিলেও শিক্ষার্থী নিজেকে তৈরি করে নিতে পারবে। কিন্তু অষ্টম থেকে উপরের ক্লাসগুলোতে এর প্রভাব বেশি থাকবে। এতে করে পাবলিক পরীক্ষায় ফেলের সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করেন এই শিক্ষাবিদ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, শিক্ষার্থীদের একেবারে অটোপাসের মধ্য দিয়ে ছেড়ে দেয়া উচিত হবে না। যতটুকু সম্ভব বিকল্প ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। যদি কিছুদিনের জন্য হলেও প্রতিষ্ঠান খোলা যায় তাহলে তাদের সব বিষয় না হলেও মেজর কিছু সাবজেক্ট ধরে সংক্ষিপ্ত পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের মূল্যায়ন করা যায়। তবে প্রতিষ্ঠান একেবারেই খোলা না গেলে তখন অবশ্যই অটোপাসের চিন্তা করতে হতে পারে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর আগের ক্লাসগুলোতে তার অবস্থান বিবেচনায় রাখতে হবে। এছাড়া মূল্যায়নের জন্য সাক্ষাৎকারের মাধ্যমও রাখা যেতে পারে।

শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, পুরো বিশ্ব এখন পরিস্থিতির শিকার। সরকার এ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা যাতে ঝুঁকিতে না পড়ে সে বিষয়ে যথেষ্ট চেষ্টা করছে। এইচএসসি বিষয়ে এখনো অনেক চিন্তাভাবনা করতে হচ্ছে। পিইসি, জেএসসি বাতিল করেছে। পরিস্থিতি যদি এমন হয় যে একেবারেই নিয়ন্ত্রিত নয়, তাহলে অটোপাসের বিকল্প নেই। তবে এক্ষেত্রে বিকল্প এসেসমেন্টের সুযোগ থাকলে অবশ্যই সেটি গ্রহণ করা যেতে পারে। যেমন- মূল বিষয়গুলো আলাদা করে সংক্ষিপ্ত পরীক্ষা নেয়া, সার্বিক বিষয়ের ওপর মূল্যায়ন ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে।

শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, পরিবেশ পরিস্থিতি অনুকূলে না আসলে অটোপাস দিতে পারে। সরকার সর্বশেষ স্তর হিসেবে এ সিদ্ধান্তে যেতে পারে। কিন্তু পরবর্তীতে যখন শিক্ষার্থী পরের ক্লাসে ভর্তি হবে তখন তার জন্য একটা অ্যাসেসমেন্টের ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। যেটি ভর্তি পরীক্ষা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন স্কুলে নেয়া হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে তাকে মূল্যায়ন করা যায়। এটি শিক্ষার্থীর খুব বেশি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে না।

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test