E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শাহজাদপুর হাই স্কুলে হামলা ও ভাংচুর

২০১৪ সেপ্টেম্বর ০৩ ১৮:০০:২৪
শাহজাদপুর হাই স্কুলে হামলা ও ভাংচুর

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : একদল বহিরাগত ও বখাটে ছাত্র বুধবার সকালে ক্লাস চলাকালে  শাহজাদপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করেছে। এ ছাড়া ক্লাসে ঢুকে ছাত্রদের বের করে নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলও করেছে। এখবর পেয়ে শাহজাদপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এ বিষয়ে পরস্পর বিরোধী অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, গত ১ সেপ্টেম্বর সোমবার বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন দোতলার একটি কক্ষে বহিরাগত ও বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির কিছু উশৃঙ্খল ও বখাটে ছাত্র ক্লাস বাদ দিয়ে ধুমপান ও তাস খেলছিল। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে পৌছালে তার উপস্থিতি টের পেয়ে অনেকেই দোতলা থেকে লাফিয়ে পালিয়ে গেলেও তপু ও সানজিত নামের দুই ছাত্রকে প্রধান শিক্ষক ধরে নিয়ে যায়। আগে থেকেই প্রধান শিক্ষকের কক্ষে বসে থাকা শাহজাদপুর থানার এস আই আব্দুস সালাম ওই দুই ছাত্রকে আইনের আওতায় সাজা দেওয়ার উদ্দেশ্যে তাদের হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে থানায় নিয়ে যেতে চায়। এসময় শিক্ষকের কাছে অপরাধ ও অনৈতিক কার্যকলাপ না করার মুচলিকা দিয়ে রক্ষা পায় দুই ছাত্র।

এদিকে পুলিশ দিয়ে হয়রানি ও মারপিটের অভিযোগে ২ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার প্রধান শিক্ষকের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওই ছাত্ররা প্রথম দফা হামলা চালায়। এ সময় সহকারী শিক্ষকদের হস্তক্ষেপে হামলাকারীরা ফিরে গেলেও বুধবার এ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির প্রভাবশালী সদস্য ঈশার ছেলে দশম শ্রেণীর ছাত্র সজলের নেতৃত্বে ২০/২৫ জনের বহিরাগত ও বখাটে ছাত্ররা বিদ্যালয়ে হামলা চালায়। এছাড়া এরা ক্লাসে ক্লাসে ঢুকে ছাত্রদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ক্লাস থেকে বের করে নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময়ে সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এসময় হামলাকারীদের বাধা দিলে বিদ্যালয়ের ৬ জন শিক্ষক ও কর্মচারী তাদের হাতে লাঞ্ছিত হয়।

এছাড়া প্রধান শিক্ষকের কক্ষ ব্যাপক ভাংচুর করে। লাঞ্ছিতরা হলেন সহকারী শিক্ষক ফজলুল হক, আলতাব হোসেন, রফিকুল ইসলাম, মোজাম্মেল হক, দপ্তরী রওশন আলী ও পিয়ন গোলাম মোস্তফা। এ ঘটনার পরপর বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মুস্তাক আহমেদ এর সভাপতিত্বে এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ, শিক্ষক-কর্মচারী, ছাত্র নের্তৃবৃন্দ সহ অনেক অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন। এ সভায় ঘটনার সাথে জড়িত দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নিতে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।

এদিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের পুলিশ দ্বারা হয়রানির প্রতিবাদে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম শাহু সহ বেশ কয়েকজন অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম ঈর্শ্বান্বিত হয়ে ছাত্রদের কক্ষে আটক করে হাতে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে পুলিশ দিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে। তাই এর প্রতিবাদে ও প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবীতে ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) সন্দ্বীপ কুমার সরকার, শাহজাদপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আব্দুল হাই ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা নিবেন বলে শিক্ষকদের আশ্বাস প্রদান করেন।

এদিকে ম্যানেজিং কমিটির প্রভাবশালী সদস্য ঈশা জানান, তার ছেলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য নয়।

(এআরপি/এএস/সেপ্টম্বর ০৩, ২০১৪)


পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test