E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সেমিস্টার ফি বাড়ানোর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

২০১৪ জুন ০৯ ২০:৫১:৩৯
সেমিস্টার ফি বাড়ানোর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

বাকৃবি প্রতিনিধি : বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সেমিস্টার ফি প্রত্যাহারের দাবিতে আবারও আন্দোলন শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। সোমবার এ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে সব অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের (লেভেল-২, সেমিস্টার-১) শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের চার দফা দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। টানা ষষ্ঠদিনের কর্মবিরতিতে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা বিরাজ করছে।

আগে কোনো সেমিস্টার ফি না থাকলেও ২০১২-২০১৩ সেশনে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ফি ১২০০ টাকা করা হয়েছে। ইউজিসি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধির নির্দেশেই শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ফি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানান, সকাল ১০টার দিকে সব অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত ১২০০ টাকা সেমিস্টার ফি প্রত্যাহারের দাবিতে ক্লাশ-পরীক্ষা বর্জন করে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্মারক বিজয় ’৭১-এর পাদদেশে জমায়েত হয়। বেলা ১১টার দিকে তারা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিভিন্ন অনুষদ ঘুরে পুনরায় বিজয়’ ৭১-এ এসে শেষ হয়। পরবর্তীকালে সেখানে একটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবৈধভাবে সেমিস্টার ফি ধার্য করেছে। এর আগে গত বছর সেমিস্টার ফি বাতিলের প্রতিশ্রিুতি দিলেও তা রক্ষা করা হয়নি। তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে মঙ্গলবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। এ সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে দাবি আদায়ের হুমকি দেন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা।

এর আগে গত ১৪ মে পরীক্ষা ফিসহ অন্য ফির সঙ্গে অতিরিক্ত ধার্যকৃত ১২০০ টাকা সেমিস্টার ফি বাতিলের দাবিতে ক্লাস বর্জন করে ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা ও প্রক্টর কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. রফিকুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অযৌক্তিক। সেমিস্টার ফি কমানো সম্ভব নয়।

এদিকে, চার দফা দাবিতে লাগাতার ষষ্ঠ দিনের মত সোমবার কর্মবিরতি পালন করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের জোট পেশাজীবী ঐক্য পরিষদ।

টানা কর্মবিরতিতে প্রশাসনিক ও একাডেমিকসহ সব দাপ্তরিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা বিরাজ করছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্যা সমাধানে তাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়নি। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে জড়িত থাকায় প্রশাসন নিশ্চুপ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনরত কর্মকর্তা কর্মচারিরা। তবে তাদের দাবি অযৌক্তিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন উপাচার্য।

বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের চাকরির বয়সসীমা ৬০ থেকে ৬২ বৎসরে উত্তীর্ণ করা, এককালীন পেনশন ভাতা প্রদান এবং নিরাপত্তাকর্মীদের স্ব স্ব পদমর্যাদা অনুযায়ী বিভিন্ন পেশাজীবী পরিষদে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করেছে পেশাজীবী ঐক্য পরিষদ।

কর্মসূচির ষষ্ঠ দিনে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের প্রধান ফটকে একত্রিত হন তারা। পরে সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মবিরতি পালন করেন। সমাবেশে পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম-আহ্বায়ক সিরাজ উদ্দিনের সঞ্চালনায় অফিসারর্স পরিষদ, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণী এবং কারিগরি কর্মচারি সমিতির নেতা-কর্মীরা বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে প্রায় সহস্রাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারি আন্দোলনে অংশ নেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অফিসার্স পরিষদের সভাপতি ও এডিশনাল রেজিস্ট্রার (সংস্থাপন শাখা) মো. অলিউল্লাহ বলেন, ‘চাকরির বয়স ৬০ বৎসর থাকলে চলতি জুন মাসে প্রায় ১০০টিরও অধিক কর্মকর্তা-কর্মচারির পদ শূণ্য হবে। ওই সব শূণ্য পদে নিয়োগ বাণিজ্য করার জন্যই চাকরির বয়স সীমা বাড়ানোর বিষয়ে পদক্ষেপ না নিয়ে ইউজিসির উপর দায় চাপানো হচ্ছে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি বিষয়ক নীতিমালায় বয়স বাড়ানোর ক্ষেত্রে ইউজিসির কোনো ভূমিকা নেই।’

এ বিষয়ে ভিসি প্রফেসর ড. মো. রফিকুল হক বলেন, ‘তাদের দাবিগুলো অযৌক্তিক। বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার জন্যই তারা আন্দোলন করছে।’

নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘শূণ্য পদ থাকলে নিয়োগ দেওয়া হবে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে বর্তমানে কোনো শূণ্য পদ না থাকায় নিয়োগ দেওয়া হবে না।”

(ওএস/এস/জুন ০৯, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test