E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রাথমিকের উপবৃত্তি লোপাট, ৭ মাসেও হয়নি শাস্তি

২০১৭ জুলাই ২৬ ১২:৫৯:১৭
প্রাথমিকের উপবৃত্তি লোপাট, ৭ মাসেও হয়নি শাস্তি

নিউজ ডেস্ক : বিভিন্ন জেলায় প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা লোপাট করার অভিযোগের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষের নেয়া শাস্তি উদ্যোগ থমকে আছে।

উপবৃত্তির কয়েক লাখ টাকা আত্মসাতের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গত সাত মাস ধরে ফাইলবন্দি অবস্থায় রয়েছে।

দোষীদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিলেও তা বাস্তবায়ন নিয়ে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে।

সূত্র জানায়, গত বছরের অক্টোবরে বিভিন্ন জেলায় প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে। পরে বিষয়টি তদন্তে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। কমিটি অনুসন্ধান করে সিরাজগঞ্জ, মাদারীপুর ও কুমিল্লা জেলার বেশ কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পায়। সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা অর্থ আত্মসাতের ঘটনার মূল হোতা বলেও তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার জামতৈল উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবু শামার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

এছাড়া কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার মেটাংঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম ও হোসনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম মাসুমা সারোয়ার ও মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার নবগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রানী বালা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

অভিযুক্ত এসব শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়ে মন্ত্রনালয় তার প্রতিবেদনে বলা হয়, ভবিষ্যতে উপবৃত্তির টাকা বিতরণের সময় প্রতি জেলায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে দুইজন কর্মকর্তার সমন্বয়ে ভিজিল্যান্স টিম গঠন করে টাকা বিতরণের ব্যবস্থা করতে বলা হয়।

প্রতিবেদনে উপবৃত্তি প্রকল্প পরিচালককে আরও সক্রিয় হতে সুপারিশ করা হয়। যাতে প্রতি জেলায় কর্মরত মনিটরিং কর্মকর্তা স্ব স্ব দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন।

প্রতিবেদনের আরও বলা হয়, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার/উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বিতরণ কার্যক্রম তদারকির জন্য আরও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। যে জেলায় সুষ্ঠুভাবে উপবৃত্তির টাকা বিতরণ হবে, সেই জেলার কর্মকর্তাদের দেশ/বিদেশ প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। যেখানে উপবৃত্তি বিতরণে অনিয়ম হবে, সেখানের সংশ্লিষ্ট উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ মনিটরিং কর্মকর্তাকে ব্যক্তিগতভাবে দায়ী করা যেতে পারে এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।

পরবর্তীতে গত বছরের ২৯ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রালয়ের যুগ্ম সচিব নেছার আহমদের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জরুরিভাবে দোষীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করার নির্দেশনা দেয়া হয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতরকে। কিন্তু সাত মাস পার হলেও অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান, মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অর্থ আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় পর্যায়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, উপবৃত্তির একটি প্রকল্প রয়েছে। তারাই মূলত উপবৃত্তি সংক্রান্ত সবকিছু পরিচালনা করে। প্রকল্প পরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।

তিনি আরও বলেন, তদন্তকাজ একটি চলমান প্রক্রিয়া। কেউ অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে অধিদফতর থেকেও আলাদা তদন্ত করা হবে।

(ওএস/এসপি/জুলাই ২৬, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test