E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রাণঘাতী রোগ থ্যালাসেমিয়া

২০১৪ জুলাই ১৭ ১২:৫৫:০৯
প্রাণঘাতী রোগ থ্যালাসেমিয়া

নিউজ ডেস্ক : থ্যালাসেমিয়া একটি জীবননাশী ভয়াবহ রোগ। এটি একটি বংশগত রোগ। যদি বাবা মায়ের জীনে থ্যালাসেমিয়ার বাহক থাকে তবে সন্তানের থ্যালাসেমিয়া হওয়ার আশংকা থাকে অনেক বেশি। এই রোগে দেহে রক্ত উৎপাদন হয় না। রোগীকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে আজীবন শরীরে রক্ত দিয়ে যেতে হয়। যা অনেক বেশি ব্যয়বহুল একটি পদ্ধতি।

থ্যালাসেমিয়া হওয়ার মূল কারণ
রক্তের সব চাইতে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে হিমোগ্লোবিন। আমরা শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে যে অক্সিজেন গ্রহন করি তা পুরো দেহে বহন করে নিয়ে যায় রক্তের হিমোগ্লোবিন। হিমোগ্লোবিন তৈরী হয় দুটি প্রোটিন দিয়ে যার নাম আলফা প্রোটিন ও বিটা প্রোটিন। যখন এই প্রোটিন গুলোর উৎপাদন দেহে কমে যায় তখন দেহে হিমোগ্লোবিনের উৎপাদনও কমে যায়। এবং থ্যালাসেমিয়া রোগটি দেখা দেয়। আলফা ও বিটা প্রোটিন প্রধানত তৈরী হয় মানুষের জীন হতে। যখন বাবা মায়ের জীনে থ্যালাসেমিয়ার বাহক থাকে তখন বাবা-মায়ের কাছ থেকে সন্তানেরা বংশানুক্রমে একই জীন পায়। এবং তখনই মূলত থ্যালাসেমিয়া হতে দেখা দেয়। সুতরাং থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রোগ। এবং এটি প্রতিরোধের কোনো উপায় নেই। কারো কারো ক্ষেত্রে জীনের ত্রুটি খুবই সামান্য থাকে যে থ্যালাসেমিয়ার কোন লক্ষণই দেখা যায় না। তারা থ্যালাসেমিয়ার রোগী নন কিন্তু তাদেরকে থ্যালাসেমিয়ার বাহক বলা হয়। এক্ষেত্রে কোন চিকিৎসার প্রয়োজন হয়না। কিন্তু, ভবিষ্যতে বিয়ের ব্যাপারে অনেক বেশি সাবধান থাকতে হয়। কেননা দুইজন থ্যালাসেমিয়া বাহকের বিয়ে হলে সন্তানকে এই রোগ নিয়ে জন্মাতে দেখা যায়।

থ্যালাসেমিয়ার লক্ষন সমূহ
- রোগী অবসাদ অনুভব করে থাকেন।
- রোগী সাধারনত শ্বাসকষ্ট রোগে ভুগে থাকেন।
- অন্যান্য কোনো কারণ ছাড়াই পেট ফুলে যায় থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীর।
- হিমোগ্লোবিনের অভাবে রক্তাভ ভাব কমে যায় এবং মুখ-মন্ডল ফ্যাকাশ হয়ে যায়।
- ত্বক হলদেটে হয়ে যায় এবং গাঢ় রঙের প্রস্রাব হয়। অর্থাৎ জন্ডিসের লক্ষণ দেখা দেয়।
- শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি কমে যেতে থাকে। এবং মাত্রাতিরিক্ত দুর্বল হয়ে পড়েন রোগী।
- মুখের হাড়ের বিকৃতি ঘটে। নাকের হাড় বসে যায় ভেতরের দিকে।

বাংলাদেশে এর পরীক্ষা
যদি কারো মধ্যে এই ধরণের লক্ষণ দেখা দেয় এবং এর সাথে অন্য কোনো রোগের সংযোগ না থাকে তবে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন। প্রথমে রক্ত পরীক্ষা করান। এতে যদি অ্যানিমিয়া অর্থাৎ রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শে পরীক্ষা করিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন এটি আসলেই থ্যালাসেমিয়া কিনা। থ্যালাসেমিয়া শনাক্তকরণের জন্য যে রক্ত পরীক্ষা করতে হবে তার নাম হচ্ছে হিমোগ্লোবিন ইলেকট্রোফোরেসিস।

(ওএস/অ/জুলাই ১৭, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test