E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রোজার স্বাস্থ্য উপকারিতা

২০১৯ মে ০১ ১৮:২২:০০
রোজার স্বাস্থ্য উপকারিতা

স্বাস্থ্য ডেস্ক : রোজা রাখার মধ্যে রয়েছে যথেষ্ট শারীরিক উপকারিতা। বিশেষ করে বছরে এক মাস অভুক্ত থাকলে তা স্বাস্থ্যরক্ষায় বেশ ভূমিকা রাখে। এ জন্য প্রাপ্তবয়স্ক সক্ষম মানুষের উচিত রোজা রাখার অভ্যাস করা। লিখেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল

হার্ট ভালো থাকে

রোজা দেহের অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায়। এতে রক্তনালিতে জমে থাকা চর্বির উপাদানগুলো কমতে থাকায় হার্ট ব্লকের মতো ঝুঁকি কমে যায়। তাই যাঁদের ওজন বেশি, যাঁদের রক্তে চর্বির পরিমাণ বা কোলেস্টেরল লেভেল বেশি, তাঁরা রোজা রেখে শারীরিক ওজন কমানোসহ নানা উপকার পেতে পারেন। এতে শরীরের চর্বি এবং মেদ-ভুঁড়ি কমানো যায়, যদি না ইফতার ও সাহরিতে মাত্রাতিরিক্ত গুরুপাক, তৈলাক্ত খাবার খাওয়া হয়।

মস্তিষ্কের কার্যক্রম বৃদ্ধি

রোজা মস্তিষ্কের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অধিক খাদ্য গ্রহণে শরীরের ওপর যেমন চাপ বৃদ্ধি পায়, তেমনি এই চাপ মস্তিষ্কের ওপরও পড়ে। বিজ্ঞানীরা গবেষণায় দেখেছেন, রোজার মাধ্যমে যে মানসিক পরিবর্তন আসে, তাতে মস্তিষ্ক থেকে এক ধরনের নিউরোট্রিফিক ফ্যাক্টর নিসৃত হয়, যা অধিক নিউরন তৈরিতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ হয়

গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য রোজা যথেষ্ট উপকারী। কারণ রোজা রাখা অবস্থায় দেহে নানা ধরনের ইনসুলিন তৈরি হয়, যা ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য বেশ উপকারী।

কিডনি ভালো থাকে

কিডনির মাধ্যমে শরীরে প্রতি মিনিটে এক থেকে তিন লিটার রক্ত সঞ্চালিত হয়। কিডনির কাজ হলো শরীরের বর্জ্য পদার্থগুলো প্রস্রাব আকারে মূত্রথলিতে প্রেরণ করা। রোজা অবস্থায় কিডনি বিশ্রাম পায়। ফলে এ সময় কিডনি বেশ সক্রিয় হয়ে ওঠে।

লিভারের ওপর প্রভাব

রোজার সময় সাহরিতে যে খাবার গ্রহণ করা হয়, তা থেকে ও লিভারে সঞ্চিত গ্লাইকোজেন থেকে সারা দিনের উপোসের সময় রক্তে প্রয়োজনীয় খাদ্য-উপাদান সঞ্চালিত হয়। লিভারের গ্লাইকোজেন স্টোরেজ শেষ হয়ে গেলে লিভার ও অ্যাডিপোজ টিস্যুতে জমা চর্বি বিপাকের মাধ্যমে রক্তে গ্লুকোজ সরবরাহ হয়। ফলে রমজানে একজন রোজাদারের জন্য লিভারের ফ্যাট ও শরীরের বাড়তি ওজন কমার সুযোগ তৈরি হয়। যাঁদের লিভারে ফ্যাট জমা হয়েছে, তাঁদের জন্য রোজা রাখা উত্তম।

ধূমপান ছেড়ে দেওয়া যায়

ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকে ধূমপান ছাড়তে পারেন না। তাঁদের জন্য রমজান মাস উত্তম সময়। এই মাসে ধূমপানের মতো ক্ষতিকর ও বদ-অভ্যাসগুলো ত্যাগ করুন বা কমিয়ে দিন।

পরিপাক প্রক্রিয়া কার্যকর হয়

রোজার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ সময় ক্ষুধা নিবারণ হয় না; বরং ধীরে ধীরে ক্ষুধার প্রশিক্ষণ হয়। ফলে রমজান শেষে ক্ষুধার মাত্রাও কমে আসে। খাদ্যনালির পরিপাক প্রক্রিয়া আরো কার্যকর হয়ে ওঠে, খাদ্যদ্রব্য থেকে বেশি পুষ্টি উপাদান সংগ্রহ সম্ভব হয়।

তা ছাড়া রোজা রাখার ফলে আগের চেয়ে আরো দক্ষভাবে কাজ করতে শুরু করে পাকস্থলী। সবল হয় হজমযন্ত্র। ইফতারে পুষ্টিকর উপাদানগুলোকে খুব সহজেই গ্রহণ করে শরীর। অ্যাডিপোনেকটিন নামের হরমোন বৃদ্ধি পায়, যা মাংসপেশিগুলোকে খাবার থেকে আরো বেশি পুষ্টিকর উপাদান শোষণে সক্ষম করে তোলে।

জটিলতা এড়ানো যায়

রোজা একজন মানুষের শুধু পাকস্থলী বা হৃৎপিণ্ডকে সক্রিয়ই রাখে না; বরং অন্য অনেক রোগের জন্যও উপকারী। বিশেষ করে রোজার সময় ধূমপান ও নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন বন্ধ থাকে বিধায় ক্যান্সার, হার্ট ফেইলিওর, স্ট্রোকের মতো জটিল রোগগুলোর আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

তাই যাঁদের শারীরিক সামর্থ্য ও ইচ্ছা রয়েছে, তাঁরা রমজান মাসের রোজাগুলো নিয়মমতো রাখতে পারেন।

(ওএস/এসপি/মে ০১, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

৩০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test