E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

বংশানুক্রমিক রোগ থ্যালাসেমিয়া

২০১৯ মে ১৪ ১৩:৩৪:১০
বংশানুক্রমিক রোগ থ্যালাসেমিয়া

স্বাস্থ্য ডেস্ক : থ্যালাসেমিয়া একটি বংশানুক্রমিক রোগ, যাতে রক্তের হিমগ্লোবিন তৈরি হতে ব্যাপক সমস্যা থাকে। এ সমস্যা খুব বড় আকার ধারণ করে যখন কেউ মারাত্মক থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়।

থ্যালাসেমিয়া মেজর খুব অল্প বয়সেই দেখা দেয় এবং এরপর নিয়মিত রক্ত সঞ্চালন করতে হয়। এসব শিশু-কিশোরের অধিকাংশই কাঙ্ক্ষিত দৈহিক উচ্চতা অর্জনে ব্যর্থ হবে। আবার ২০-৩০ শতাংশ রোগী হরমোনের ঘাটতিতে ভুগবে।

এ ছাড়া যেসব থ্যালাসেমিয়া মেজর রোগী একটু পরে এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে, তারা ক'বছর পর বয়োঃসন্ধি লাভ করতে পারে। এ দলে যেসব শিশু-কিশোরের কম পরিমাণে রক্ত সঞ্চালন করতে হয়, তারাও আছে।

থ্যালাসেমিয়ার কারণে সংঘটিত অন্যতম মারাত্মক সমস্যা হলো– হাইপোগনাডিজম। এখানে পুরুষের টেস্টোস্টেরন নিঃসরণ শূন্যের কাছাকাছি পৌঁছে যায় এবং নারীর ক্ষেত্রে ইস্ট্রোজেন ব্যাপকভাবে কমে যায়, যা প্রাকৃতিকভাবে বাড়ানোর আর কোনো সুযোগ থাকে না। ছেলেদের অন্ডকোষে আয়রন জমে টেস্টোস্টেরন তৈরি হওয়ার আগেই গ্রন্থিটি এর কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলতে পারে। অন্যান্য গ্রন্থির মতো অগ্ন্যাশয়ের আইলেট্‌স কোষগুলোতেও আয়রন জমতে থাকে এবং এর কার্যকারিতা হ্রাস পেতে থাকে। ফলে থ্যালাসেমিয়ার রোগীরা দ্রুত প্রি-ডায়াবেটিস থেকে ডায়াবেটিস রোগীতে পরিণত হয়।

থ্যালাসেমিয়ার রোগীর কমপক্ষে অর্ধেক ডায়াবেটিসে ভোগে। থ্যালাসেমিয়া মেজরের ক্ষেত্রে আক্রান্ত গ্রন্থিগুলোর মাঝে আয়রন জমে কার্যকারিতা হারানোর তালিকায় থাইরয়েড গ্রন্থিও আছে। একই সঙ্গে অটোইমিউনিটি, যেটি থ্যালাসেমিয়া এবং থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতার সমস্যা দুটিই করতে পারে। এ ছাড়া হাইপো-প্যারা-থাইরয়েডিজম, অ্যান্ড্রেনাল গ্রন্থির কার্যকারিতা হ্রাস, হাড় ক্ষয় সমস্যা হতে পারে।

সুতরাং থ্যালাসেমিয়া দ্রুত শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে হবে, যেখানে দরকার সেখানে রক্ত পরিসঞ্চালনা করতে হবে; কিন্তু শুরু থেকেই অন্তক্ষরা গ্রন্থিগুলো গাঠনিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। শুরু থেকেই রক্ত পরিসঞ্চালন এবং আয়রন জমা হবার দিকে নজর রেখে নিয়মিত তা পরিমাপ করতে হবে। প্রথম বছর থেকেই বিভিন্ন হরমোনের মাত্রা নিরূপণ করে তা ফলোআপের চেষ্টা করতে হবে। যখনই কোনো একটি হরমোনের ঘাটতি নজরে আসবে অতি দ্রুত তা পূরণের চেষ্টা করতে হবে।

একই সঙ্গে আর কোন কোন গ্রন্থির কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে, সেটি বিবেচনায় রেখে নিয়মিত তা ফলোআপের চেষ্টা করতে হবে। সব ক্ষেত্রেই প্রাতিষ্ঠানিক সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা গেলে ফল বেশি ভালো হওয়ার সম্ভবনা থাকবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

লেখক: ডা. শাহজাদা সেলিম, সহকারী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test