E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

অগ্ন্যাশয় ক্যান্সারের ওষুধ আবিষ্কার করলেন বাঙালি বিজ্ঞানী

২০১৯ জুলাই ০৯ ১৮:৩০:০২
অগ্ন্যাশয় ক্যান্সারের ওষুধ আবিষ্কার করলেন বাঙালি বিজ্ঞানী

স্বাস্থ্য ডেস্ক : প্যানক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার খুব সহজে ধরা পড়ে না। কিন্তু যখন ধরা পড়ে, তখন দেখা যায়-অনেক দেরি হয়ে গেছে। চিকিৎসার আর বিশেষ সময়ই থাকে না।

এবার জটিল এই রোগ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ আবিষ্কার করে বিশ্বকে চমকে দিলেন এক বাঙালি বিজ্ঞানী।

ওই বিজ্ঞানীর নাম অনিমেষ ধর। তার দাবি, তার আবিষ্কৃত ওষুধ ইতোমধ্যে সাদা ইঁদুর ও মানুষের কোষে প্রয়োগ করা হয়েছে। এতে সফলও হয়েছেন তিনি।
হলুদের অন্যতম উপাদান কুরকুমিন, এক ধরনের ফুলের উপাদান হারমিন এবং এক ধরনের ওষুধি গাছের উপাদান আইসোভ্যানিলিনের সংমিশ্রণে তিনি এ ওষুধ তৈরি করেছেন। ১৫ বছর ধরে গবেষণা করে তিনি এ ওষুধ আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন।

অনিমেষ ধর বর্তমানে আমেরিকার ক্যানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারের ক্যানসার বায়োলজি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর। অন্য দুই বাঙালি বিজ্ঞানী চান্দ্রেয়ী ঘোষ ও শান্তনু পাল এবং অন্য তিন ভারতীয় বিজ্ঞানী প্রসাদ দণ্ডবতে, শ্রীকান্ত অনন্ত ও ধর্মলিঙ্গম সুব্রহ্মণ্যম গবেষণায় তার সঙ্গী। ওই গবেষণায় সাহায্য করেছেন শ্রীলঙ্কার সুমেধা গুণবর্ধনে এবং আমেরিকার ক্যামেরুন ওয়েস্টও।

আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘অঙ্কোটার্গেট’-এ তাদের গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।

অনিমেষ জানান, অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার সহজে চিহ্নিত করা যায় না। সাধারণ হাল্কা মানের জন্ডিস এই ক্যানসারের প্রধান উপসর্গ। কিন্তু হাল্কা জন্ডিস হলে কেউই অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের পরীক্ষা করান না। ফলে তা ধরা পড়ে না। যখন ধরা পড়ে, অনেকটাই ছড়িয়ে যায় ক্যানসার। ছড়ায় মূলত ফুসফুস আর যকৃতে।

“এখন অনেক ক্ষেত্রে অন্য রোগ নির্ণয়ের সময় অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার ধরা পড়ে যাচ্ছে। কিন্তু তাকে আটকে রাখার কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ ছিল না,’’ বলেন অনিমে।

তিনি জানান, তারা ১৫ বছর ধরে মার্কিন মুলুকে গবেষণা চালাচ্ছেন। তার ওষুধ পরীক্ষা করা হয়েছে সাদা ইঁদুর, মানুষের কোষের উপরেও। দেখা গেছে, হলুদের অন্যতম উপাদান কুরকুমিন, এক ধরনের ফুলের উপাদান হারমিন এবং এক ধরনের ওষধি গাছের উপাদান আইসোভ্যানিলিনের সংমিশ্রণে তৈরি ওষুধটি অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার দমন করতে পারছে।

অনিমেষ বলেন, “ক্যানসার হলে এক ধরনের ‘ক্লাস্টার অব জিন’ বা জিন-মণ্ডলী খুব সক্রিয় হয়ে ওঠে। তার প্ররোচনায় ক্যানসার-আক্রান্ত কোষ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। দীর্ঘদিনের পরীক্ষায় দেখা গেছে, আমাদের ওষুধ ক্যানসার-আক্রান্ত কোষের বৃদ্ধি আটকাতে সমর্থ। তা যকৃৎ বা ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়ছে না। কষ্টও কমছে।”

ওই বিজ্ঞানীর দাবি, আমেরিকায় খাদ্যের মধ্যে পুষ্টি হিসেবে তার ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছে। তার ফর্মুলা নিয়ে ভারতীয় সংস্থাও এই ওষুধ বানাতে পারবে। তার কথায়,“আমরা অনেক নথিপত্র ঘেঁটে দেখেছি, আমাদের প্রাচীন ইউনানি চিকিৎসায় কুরকুমিন, হারমিন এবং আইসোভ্যানিলিনের মতো উপাদান ব্যবহারের উল্লেখ রয়েছে।”

ক্যানসার বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায় বলেন, “ধরা পড়তে দেরি হয় বলে অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কমে যায়। অনিমেষবাবুর আবিষ্কৃত ওষুধ অন্য প্রাণীর সঙ্গে মানুষের শরীরেও প্রয়োগ করে দেখতে হবে। তা যদি সফল হয়, এই আবিষ্কারকে স্বাগত জানানো উচিত। এর উপাদানগুলিও কম খরচে পাওয়া যায়। ভারতের মতো দেশে সুবিধাই হবে রোগীদের।”

(ওএস/এসপি/জুলাই ০৯, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test