E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শক্তির উৎস কিশমিশ

২০১৪ আগস্ট ০২ ১১:৫৪:৩৬
শক্তির উৎস কিশমিশ

নিউজ ডেস্ক : কিশমিশ প্রাচীনকাল থেকে শক্তি বা ক্যালরির চমৎকার উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই সুস্বাদু ও মিষ্টি খাবারটি বাংলাদেশ ছাড়াও গোটা মধ্যপ্রাচ্য ও ভারতবর্ষে ব্যাপক জনপ্রিয়। বিশেষ এই শুষ্ক ফলটি এমনই একটি খাবার যা পানি বা তরল পদার্থের সংস্পর্শে এসে ফুলে যায়। আমরা সাধারণত উৎসব বা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রান্নায় কিশমিশ ব্যবহার করি। অনেকে ভাবেন এমনি এমনি কিশমিশ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। কথাটি আসলে সত্যি নয়।

স্বাস্থ্য ভালো রাখতে প্রতিদিনই কিশমিশ খাওয়া উচিত।

কিশমিশ ফলটি হজম সহায়ক, ওজন বৃদ্ধিকারক ও বলকারক। এটি বদহজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতেও বেশ কার্যকর।
এখানে শুষ্ক এই ফলটির কিছু গুণের পরিচয় দেয়া হলো।

দ্রুত শক্তি বাড়ায়
যদি দুর্বলতা অনুভব করেন তাহলে দেরি না করে কিছু কিশমিশ খেয়ে নিন। কিশমিশে রয়েছে চিনি, গ্লুকোজ ও ফরুক্টোজ। তাৎক্ষণিকভাবে তা আপনার দেহে এনার্জি সরবরাহ করবে। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের কিশমিশ থেকে দূরে থাকাই ভালো।

দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষা
শিশুরা ক্যান্ডি ও চকলেট খেয়ে দাঁত ও মাড়ির ক্ষতি করে থাকে। কিন্তু শিশুদের ক্যান্ডি বা চকলেটের বদলে কিশমিশ খাওয়ার অভ্যাস করালে দাঁতের সুরক্ষা হবে। অনেকে ভাবতে পারেন, কিশমিশে তো চিনি রয়েছে। কিন্তু চিনি থাকার পাশাপাশি কিশমিশে রয়েছে ওলিনোলিক অ্যাসিড, যা মুখের ভেতরের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে বাধা দেয়।

হাড়ের যত্ন
কিশমিশে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম, যা হাড় মজবুত করতে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। কিশমিশে আরো রয়েছে বোরন নামক মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস, যা হাড়ের ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে। প্রতিদিন কিশমিশ খাওয়ার অভ্যাস হাড়ের ক্ষয় এবং বাতের ব্যথা থেকে দূরে রাখবে।

ইনফেকশন হতে বাধা
কিশমিশের মধ্যে রয়েছে পলিফেনলস এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিইনফেমেটরি উপাদান, যা কাটা ছেঁড়া বা ক্ষত হতে ইনফেকশন সৃষ্টির আশঙ্কা দূরে রাখে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ
কিশমিশের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের দেহের কোষগুলোকে ফ্রি র‌্যাডিক্যাল ড্যামেজের হাত থেকে রক্ষা করে এবং ক্যান্সারের কোষ উৎপন্ন হওয়ায় বাধা প্রদান করে। কিশমিশে আরো রয়েছে ক্যাটেচিন যা পলিফেনলিক অ্যাসিড, এটি আমাদের ক্যান্সার মুক্ত রাখতে সাহায্য করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর
কিশমিশে রয়েছে প্রচুর ফাইবার যা আমাদের পরিপাকক্রিয়া দ্রুত হতে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে।

গর্ভাবস্থায় উপকারী
১০০ গ্রাম কিশমিশে যে পরিমাণ লৌহ আছে, তাতে একজন মানুষের দৈনিক চাহিদার ২৩ শতাংশ পূরণ করে। রক্তশূন্যতা দূর করতে এবং গর্ভাবস্থায় তাই কিশমিশ খাওয়া উচিত।

দ্রুত ওজন বৃদ্ধি
কিশমিশের ২৬ শতাংশ হলো শর্করা, ১৫ শতাংশ আঁশ, আমিষ আছে ৬ শতাংশ ও চর্বি মাত্র ১ শতাংশ। আছে পটাশিয়াম ২১ শতাংশ এবং লৌহ ১০ শতাংশ। এ ছাড়া আছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ও কপার। দীর্ঘ রোগভোগের পর শক্তি ও দ্রুত ওজন বাড়াতে কিশমিশের ব্যবহার প্রচলিত।

রক্তচাপ কমানো
যাদের রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে কিছু বেশি তারা এক মুঠো কিশমিশ খেয়ে দেখতে পারেন। কারণ সা�প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, দিনে তিনবার খানিকটা কিশমিশ খেলে রক্তচাপ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমতে পারে।

ত্বক ভালো রাখে
কিশমিশ বেশ ভালো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা আমাদের শরীরের কোষগুলোকে ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করে। কিশমিশ ত্বক ভালো রাখে। এটি নিয়মিত খেলে তারুণ্য ধরে রাখতে রাখা সম্ভব।

ফলের বিকল্প
দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে ও ত্বক উজ্জ্বল রাখতে গাজর ও নানা রকম ফল নিয়মিত খেতে বলা হয়। কারণ এগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, ক্যারোটিনয়েড সমৃদ্ধ। সঠিক পরিমাণে এগুলো পেতে হলে দিনে অন্তত তিনটি ফল খেতে হবে। এটি সব সময় সম্ভব না হলে একমুঠো কিশমিশ হতে পারে এর দারুণ বিকল্প। একমুঠো কিশমিশ বাদামের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে হাই এনার্জি, প্রোটিন এবং ফাইবার পাবেন।

খাদ্যতালিকায় রাখুন প্রতিদিন
পুষ্টিবিদদের মতে, প্রতি ১০০ গ্রাম কিসমিসে রয়েছে- এনার্জি ৩০৪ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ৭৪.৬ গ্রাম, ডায়েটরি ফাইবার ১.১ গ্রাম, ফ্যাট ০.৩ গ্রাম, প্রোটিন ১.৮ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৮৭ মিলিগ্রাম, আয়রন ৭.৭ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ৭৮ মিলিগ্রাম ও সোডিয়াম ২০.৪ মিলিগ্রাম। তাই পরিবারের সব সদস্যের প্রয়োজনে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কিশমিশ রাখুন। দিনে অন্তত তিনবার খান কিশমিশ। এটি খাওয়ার ধরা বাধা কোনো নিয়ম নেউ। তবে খুব বেশি নয়, প্রতিবার একসাথে তিন থেকে পাঁচটি কিশমিশ খেতে পারেন। একসাথে অনেক বেশি কিশমিশ না খাওয়াই ভালো।

(ওএস/এটিআর/আগস্ট ০২, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test