E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ডেক্সামেথাসোনের কিছু ক্ষতিকর দিক

২০২০ জুন ১৯ ১০:২৪:০৮
ডেক্সামেথাসোনের কিছু ক্ষতিকর দিক

স্বাস্থ্য ডেস্ক : ব্রিটেনের গবেষকরা জানিয়েছেন, জেনেরিক স্টেরয়েড ডেক্সামেথাসোন করোনা সংক্রমণে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। দেখা গেছে, সংকটাপন্ন কোভিড-১৯ রোগীদের ক্ষেত্রে এই ওষুধে সুফল পাওয়া গেছে। এই ওষুধ প্রয়োগে প্রতি আটজন রোগীর মধ্যে একজনকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। সেই সঙ্গে এই ওষুধের সহজলভ্যতা ও কম দাম রাতারাতি করোনা চিকিৎসায় সাড়া ফেলে দিয়েছে।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন একবার করে টানা ১০ দিন ডেক্সামেথাসোন প্রয়োগের ফলে সংকটাপন্ন রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কা উল্লেখজনক হারে কমে। ইংল্যান্ডের প্রধান স্বাস্থ্য অধিকর্তা অধ্যাপক ক্রিস হুইটি এক বিবৃতিতে জানান, ভেন্টিলেশনে থাকা এবং অক্সিজেনের সাহায্যে নিঃশ্বাস নেওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে ফলদায়ী এই ওষুধ।

ডেক্সামেথাসোনের সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে মানুষের অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি থেকে নিসৃত প্রাকৃতিক হরমোনের, যা অনেক সময় প্রদাহ সারাতে ব্যবহার করা হয়। করোনাভাইরাসের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ের জেরে কোষের অভ্যন্তরে প্রদাহ দেখা দেয়, যা সারাতে কাজে লাগে ডেক্সামেথ্যাসোন। আসলে মানুষের শরীরে থাকা জন্মগত রোগ প্রতিরোধ শক্তি অত্যধিক পরিশ্রম করলে মৃত্যুর আশঙ্কা ঘনায়। তা ঠেকাতেই এই স্টেরয়েড কার্যকরী হয়।

শুধু তাই নয়, বিভিন্ন রকম আর্থ্রাইটিস এবং ত্বক, রক্ত, কিডনি, চোখ, থাইরয়েড ও পাকস্থলিজনিত সমস্যার চিকিৎসায় এই ওষুধ ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া কয়েক রকম অ্যালার্জি ও অ্যাজমা সারাতেও তা ফলদায়ী।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকায় ১৯৭৭ সাল থেকেই রয়েছে ডেক্সামেথ্যাসোন এবং তার নানান রকম যৌগ। ওষুধটি বিভিন্ন নামে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই সহজলভ্য।

তবে ডেক্সামেথাসোনের বেশ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে, যদিও তা নির্ভর করে ওষুধের পরিমাণ, অনেকগুলো পরিস্থিতি ও শারীরিক অবস্থার ওপরে।

এই স্টেরয়েডের সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে সাধারণত দেখা যায়, ওজন বৃদ্ধি, উচ্চ রক্তচাপ, হজমের গন্ডগোল, মাথাঘোরা, পটাশিয়ামের অভাব দেখা দেয়া, সেরাম গ্লুকোজ মাত্রা বৃদ্ধি, বিশেষ করে যাদের ডায়াবিটিস রয়েছে, ঘুমের সমস্যা, পেশি দুর্বল হয়ে পড়া, ঋতুস্রাবের সমস্যা, হঠাৎ খিদে পাওয়া, মেজাজের আচমকা পরিবর্তন, শিশুদের ক্ষেত্রে বেড়ে ওঠার সমস্যা, ত্বকের ঘনত্ব কমে গিয়ে শরীরে ক্ষত তৈরি হওয়া, এমনকি মানসিক অবসাদ।

রোগীর যদি কোনও বিষয়ে অ্যালার্জির প্রবণতা থাকে, তাহলে ওষুধ খাওয়ার আগে তা চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীদের জানাতে হবে।

এ জন্যই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, জীবন রক্ষাকারী এই ওষুধটি শুধু সেসব কোভিড রোগীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা উচিত, যাদের অবস্থা গুরুতর।

বুধবার এমন নির্দেশনা দেন সংস্থাটির প্রধান অ্যাধানম গেব্রিয়েসাস। তিনি বলেন, অবশেষে করোনাভাইরাস চিকিৎসায় আশার আলো দেখাচ্ছে গবেষণা, যখন কি-না এই ভাইরাসটি কেড়ে বিশ্বের চার লাখেরও বেশি প্রাণ। আক্রান্ত হয়েছে ৮০ লাখের বেশি।

(ওএস/এসপি/জুন ১৯, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test