E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নাটোর সদর হাসপাতাল নামেই আড়াইশ শয্যা !

২০১৫ মে ০৫ ১৮:৪৪:৫০
নাটোর সদর হাসপাতাল নামেই আড়াইশ শয্যা !

নাটোর প্রতিনিধি : নাটোর সদর অধুনিক হাসপাতাল আড়াইশ শয্যায় উন্নীত করা হলেও মাত্র পঞ্চাশ শয্যার জনবল নিয়ে স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হচ্ছে।  এতে জেলার প্রায় ১৭ লাখ মানুষ আধুনিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এদিকে দীর্ঘদিন যাবত সংস্কার না করায় জরাজীর্ণ হয়ে স্বাস্থ্যসোবা দিতে গিয়ে হাসপাতালটি ক্রমেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। নিরাপত্তার অভাবসহ দালালদের খপ্পরে পড়ে রোগী ও অভিভাবকরা হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত।

৫০ শয্যার নাটোর সদর হাসপাতাল ১৯৯৫ সালে একশ’ শয্যায় এবং ২০১১ সালে আড়াইশ’ শয্যায় উন্নীত করার ঘোষনা করা হয়। কিন্তু জনবলের অভাবে নাটোরের মানুষ আধুনিক স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। হাসপাতালটির শয্যা সংখ্যা দু’দফা বাড়ানোর ঘোষনা দেওয়া হলেও ৫০ শয্যার জনবল নিয়েই চলছে হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা। উপরন্তু জনবল আরো কমেছে।

জেলা সদরের এই হাসপাতালে প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। উপচে পড়া ভীরের কারনে বর্হিবিভাগে রোগীদের টিকিট নিতেই দিনের অর্ধেক বেলা পেড়িয়ে যায়। ততক্ষণে রোগীদের চরম দুভোর্গ পোহাতে হয়। অপরদিকে আন্তঃবিভাগের রোগীদের সিংভাগ ঔষধ কিনতে হয় বাহির থেকে। দুর্গন্ধে বাথরুমগুলো ব্যহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ছাদের পলেস্তরা খসে পড়ছে। সিঁড়িতে ফাটলসহ জানালা দরজা ভেঙ্গে পড়ায় রোগীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে । এছাড়াও রয়েছে দালালদের দৈারাত্ব। বিদ্যুত না থাকায় কুপি দিয়ে চলছে রোগীদের রান্নার কাজ।

রোগীদের অভিযোগ,হাসপাতালে দালাল ও সিঁচকে চোরের উপদ্রব প্রকট। অবহেলার কারনে অনেক সময় ডাক্তাররা লাঞ্ছিত হওয়ায় তাদের নিরাপত্তায় হাসপাতাল চত্বরে পুলিশ নিয়োগ করা হলেও রোগীদের নিরাপত্তা নেয়। বর্হিবিভাগে ভিরের মধ্যে প্রায় রোগী ও তার অভিভাবকদের টাকা ও মোবাইল খোয়া যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়না। অপরদিকে অর্ন্তবিভাগের রোগীরা জানায়, অধিকাংশ ওষধ বাহির থেকে কিনতে হয়। হাসপাতালে ইসিজি মেসিন থাকলেও দালালদের খপ্পরে পড়ে বাহির থেকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হয়। কখনও কখনও বাহিরের ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের ইসিজি মেসিন হাসপাতালের ওয়ার্ডে এনে দিনভর ইসিজি করা হয়। কর্তৃপক্ষের চোখের সামনে হলেও তাদের নজরে পড়েনা। বিষয়টির প্রতিবাদ করলে দালাল চক্রের হুমকির মুখে পড়তে হয়।

হাসপাতালের বাবুর্চি জানান, রান্না ঘরে বিদ্যুত লাইনের সমস্যার জন্য বারবার লাগানোর পরও রান্না ঘরের বাল্ব কেটে যায়।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আবুল কালাম আজাদ ২০১১ সালে আড়াইশ’ শয্যায় উন্নীত করার ঘোষানা করা হলেও ৫০ শয্যার জনবল নিয়ে হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম চালানোর সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি জানান ১৯৯৫ সালে নির্মানের পর বড়ধরনের সংস্কার হয়নি। বিদ্যুত সমস্যাসহ বাড়তি চাপে হাসপাতালের বাথরুমগুলো ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে। বর্হিবিভাগে প্রতিদিন একহাজার থেকে ১৫শ’ এবং অর্ন্তবিভাগে প্রতিদিন প্রায় দুইশ’জন রোগী ভর্তি হচ্ছে।

সকাল ৮ টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ইইসজি মেসিন চালু থাকে। পরে প্রয়োজন হলো কেউ কেউ বাহির থেকে নিজেদের ইচ্ছায় ইসিজি করেন। ভিরের কারনে পকেটমার ও দালালের উপস্থিতির কথা স্বীকার করে জানান,বিষয়টি আইন শৃংখলা বাহিনীকে জানানো হয়েছে। হাসপাতালের প্রধান সমস্যা আবাসন সংকট। এই সমস্যাগুলো সমাধানে হাসপাতালের কোন কর্তৃত্ব নেই। এগুলো দেখার দায়িত্ব এইচইটি বিভাগের। বিষয়গুলো তাদের সার্বক্ষনিক অবগত করা হয়। ঔষধ সল্পতার অভিযোগ সঠিক নয়।

(এমআর/এএস/মে ০৫, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test