E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আপনি কি জানেন,গান শুনে সিজোফ্রেনিয়া ভাল হয়?

২০১৬ জানুয়ারি ৩০ ১৩:২২:০৬
আপনি কি জানেন,গান শুনে সিজোফ্রেনিয়া ভাল হয়?

সাইফুল বিন হানিফ

 

শ্বাস প্রশ্বাস ব্যায়ামের মাধ্যমে মৃদু লয়ের বাঁশী, সন্তুর, সারেঙ্গী, বেহেলা অষ্টপ্রহর মেনে নিয়মিত শুনলে পাশাপাশি ক্ষতি বিহীন সিজোফ্রেনিয়া ভাল হয়। সেই সাথে স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি পায় ও কর্মস্পৃহা বেড়ে যায়।
এখন আমরা জেনে নিব, সিজোফ্রেনিয়া কি ও কত প্রকার ?
কারণ ও লক্ষণ ।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের অন্য কি কি মাধ্যমে সিজোফ্রেনিয়ার চিকিৎসা হয়
সিজোফ্রেনিয়া /Chizophrenia ( কোন কিছু মনে না রাখতে পারা বা স্মৃতিভ্রষ্ট )
________________________________________

সুইডেনের মনোচিকিৎসক ইউজেন ব্লিউলার ১৯১১ সালে সিজোফেন্সনিয়া শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। শব্দটি এসেছে মূলত গ্রিক ভাষা থেকে। এর প্রথম অংশটিকে বলা হয় ‘সাইজো’ বা ‘সিজো’, যার অর্থ ভাঙা বা টুকরো। দ্বিতীয় অংশ হলো ‘ফেন্সনিয়া’ অর্থাৎ মন। কাজেই সিজোফেন্সনিয়ার পুরো শাব্দিক অর্থ দাঁড়ায় ভাঙা মন বা যে মন টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। মনোচিকিৎসক ব্লিউলারের থিউরি অনুসারে যখন আমাদের মস্থিস্কের কর্ম পদ্ধতি বোধশক্তি এবং বাস্তবতা কে চিন্তা শক্তিতে নিয়ে এককরে মিল রাখতে পারেনা তখন ই সিজোফেন্সনিয়ার অসুখটির শুরু হয় যাকে আমরা স্মৃতিভ্রষ্ট বলে জানি৷ অর্থাৎ এই রোগ হলে মানুষ কোন কিছু মনে রাখতে পারে না৷
কত বয়সে হতে পারে ?

যে কোন বয়সে হতে পারে তবে ৯৬% যাদের বয়স ১৫ -৩০-এর মধ্যেই বেশী হয় । বয়স ৪০-এর ওপরে গেলেও সিজোফেন্সনিয়া হতে পারে ৬% বেলায় । শিশুদের হয়ে থাকে তবে বেশী হয়ে থাকে মায়ের গর্ভে থাকাকালীন অবস্থায় – তখন মা এবং সন্তান দুজন ভোগতে পারে । মুলত অসুখ টি সমাজের যে কোনো শ্রেণীর মানুষের হতে পারে এবং প্রতি একশ জনের মধ্যে একজন সিজোফ্রেনিয়া তে আক্রান্ত হয়ে থাকেন ( মাইনর বা মেজর ) । ২০১৩ হিসাব অনুসারে পৃথিবীতে ২৯ মিলিয়নের মত মানুষ সিজোফ্রেনিয়াতে আক্রান্ত হয়েছেন এবং দিন দিন অসুখটি বৃদ্ধি পাইতেছে জীবন যাত্রার মান কঠিন হওয়ার কারনে । (সিজোফ্রেনিয়ার মত অজানা আচরণ প্রত্যেক মানুষের জীবনে সাময়িক সময়ের জন্য দু একবার ঘটলে ও একে সিজোফ্রেনিয়া বলা ঠিক হবেনা ) তবে মদ গাজা ,যে কোন ধরণের ড্রাগস সেবনকারী এবং আঘাত জনিত কারনের বেলায় বয়সের উপর নির্ভর করেনা ।

কারন ঃ-
সিজোফ্রেনিয়া অসুখটি মস্তিস্ক বা ব্রেনের একটি বায়োলজিক্যাল বা জৈব রাসায়নিক পদাথের গোলাযোগ পূর্ণ সমস্যা এবং বেশির ভাগ জিন গঠিত বিষয় বা ক্রোমোজোম কে ও দায়ী করা হয় ৬০% বেলায় – অর্থাৎ ব্রেইন কেমিস্ট্রি এবং ব্রেইন স্ট্রাকচার দুটি তেই পরিবর্তন দেখা যায় ।

মানব মস্তিষ্কে নিউরন বা স্নায়ুকোষের পরিমাণ অনির্দিষ্ট, এ সংখ্যাটি বিলিয়ন বিলিয়ন হতে পারে। প্রত্যেকটি স্নায়ু বা নিউরনের শাখা-প্রশাখা থাকে, যার সাহায্যে সে অন্য স্নায়ু বা মাংসপেশি বা অন্য কোনো গ্রন্থি থেকে উদ্দীপনা গ্রহণ করতে পারে। নিউরন বা স্নায়ুকোষের শেষাংশে বা টার্মিনাল থেকে কিছু রাসায়নিক পদার্থ নি:সৃত হয়। এগুলোকে নিউরোট্রান্সমিটার বা রাসায়নিক দূত বলা হয়ে থাকে ( যার অন্য নাম ডোপামিন এবং গ্লোটামিন ) । এগুলোর সাহায্যে মূলত নানা ধরনের উদ্দীপনা স্নায়ুকোষ থেকে স্নায়ুকোষে পরিবাহিত হয়। যে কোন কারনে মস্তিষ্কের ভিতরে একটা ভারসাম্মহিন কেমিক্যাল প্রতিক্রিয়ায় নিউরোট্রান্সমিটার ( বেশী পরিমাণ ডোপামিন এবং গ্লোটামেইটের মাত্রারিক্ত ক্ষরনের ফলে সহানুভূতিশীল হয়ে বেশী নিঃসৃত হয় ) নিঃসৃত হওয়ায় একজন সুস্থ মানুষের সঠিক কিছু বুজার উপলব্ধি নষ্ট হয়ে যায় বা উলঠ পালটা অনুভূতি প্রেরন করে থাকে স্নায়ুকোষ সমূহ । তখন একজন মানুসজ নিজের অজান্তে যা করে তাই সিজোফ্রেনিয়া । অর্থাৎ মানসিকভাবে অসুস্ত – রোগীর চিন্তা-চেতনা, অনুভূতি ও তার কাজকর্মে বা আচরণে ধরা পরে । চিন্তা-ভাবনাগুলো যেন মস্তিষ্কে উল্টা-পাল্টা খেলায় মেতে ওঠে। কখনো এগুলো মস্তিষ্কে ঠাসাঠাসিভাবে ওয়েভ ট্রাফিক জ্যামের মতো জ্যাম সৃষ্টি করে – তখন একজন মানুষ ভুল পথ কে সঠিক পথ মনে করে – ( পাগলামি বলা হয় ) — মুলত তাই —

সিজোফেন্সনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্বাভনা কাদের বেশী ? ঃ–
১- পারিবারিক এবং বংশগত কারনে হতে পারে ঃ-
বংশগত ( জীন টেক ) ঃ-সিজোফ্রেনিয়া রোগটি ৪৫-৬০% বংশগত এবং এর জন্য বেশির ভাগ ডি এন এ এবং ক্রোমোজোম কেই দায়ী করা হয় । সম্প্রতি বিজ্ঞান অনুসারে প্রমান করা হয়েছে – প্রতি একশত জনে একজন সিজোফ্রেনিয়ায় ভোগার সম্বাভনা থাকলেও যাদের পরিবারের বাবা , মা আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাদের বেলায় ৪০% বেশী আক্রান্ত হতে পারেন এবং সেকেন্ড ডিগ্রী সম্পর্ক ( চাচা, ফুফো, দাদা ) তাদের বংশানিক্রমিক জীন থেকে ১০% সম্বাভনা আছেই সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার । অন্য দিকে আরেক গবেষণায় বাস্থব প্রতীয়মান হয় যে যদি উভয় শিশুরা যমজ হয়ে থাকে এবং তাদের বাবা মা কেউ সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত থাকেন তা হলে ৫০% সম্বাভনা থেকেই যায় যমজ ভাই বোন ডি এন এ এর ধারা প্রবাভিত হওয়ার ।

সে জন্য উক্ত পরিবারের সদস্যরা যদি উপযোক্ত পরিবেষ এবং নিয়ম মাফিক সবকিছুতে আগে ভাগে সতর্ক থাকেন এবং প্রকৃতির কু-সঙ্কস্কার পরিত্যাগ করে চলেন তা হলে শতভাগ আশা করা যায় সিজোফ্রেনিয়া থেকে মুক্ত থাকার ।

২- পরিবেষ ও পুষ্টি জনিত কারনে ঃ-
অনেক সময় পরিবেষ ও সামাজিক বিভিন্ন অমর্যাদা জনক যে কোন কারনে মধ্য বয়সী পুরুষ / নারী সিজোফ্রেনিয়ায় ভোগতে পারেন ।
সামাজিক ঃ- মুলত প্রথমে মানসিক আঘাতের কারনে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যকলাপ বিঘ্নিত হয়ে পরবর্তীতে আস্থে আস্থে সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হতে দেখা যায় । বিশেষ করে আত্ম মর্যাদা , দুঃসংবাদে অথবা প্রিয় কিছু হারানোর ভয়ে হতে দেখা যায় (যেমন ঃ- বিশেষ ভাবে যারা সম্মানহীন এবং বন্ধুহীন ও আত্মীয়হীন জীবন যাপন করেন। শিক্ষার সুযোগ হারান, চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত থাকেন, ।সামাজিক বন্ধন ছিঁড়ে যায়, রাজনৈতিক জীবনে ও তাদের দৈনন্দিন ব্যক্তিজীবনে পর্যন্ত বিপর্যস্ত ও বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে। সর্বোপরি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়া ব্যাক্তি যখন ভাবেন – ভবিষ্যৎ জীবন বলে কিছুী অবশিষ্ট রইল না ইত্যাদি ) মুলত তারাই সিজোফ্রেনিয়ায় ভোগতে পারেন বেশী । যদি ও প্রথমে বুজা যায়না অসুখ টির মারাত্মক প্রতিক্রিয়া কি ? কিন্তু আস্থে আস্থে অসুখ টি যখন স্থায়িত্ততা লাভ করে তখন অনেকের বেলায় ১৫/২০ বছর আগেই উক্ত ব্যাক্তিকে মৃত্যু বরণ করতে দেখা যায় ।

এ ছাড়া পুস্টি , ভিটামিন – খনিজ পদার্থের অভাবে মস্তস্কের স্নায়ু কোষ সমূহ সঠিক ভাবে কাজ করতে ব্যাথ হতে পারে বিধায় – দারিদ্র্য সিমানায় বসবাসরত যে কোন বয়সের পুরুষ/ মহিলা বা শিশুরা ও সিজোফ্রেনিয়ায় ভোগতে পারে একটু বেশী । সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখানো হয়েছে যারা মাত্রাতিরিক্ত নিয়াসিন বা ভিটামিন বি৩ অভাব থাকে তাদের বেলায় সিজোফ্রেনিয়াতে ভোগার সম্বাভনা একটু বেশী ।

৩- বিভিন্ন ঔষধ অথবা ড্রাগস নেশাকারীদের বেলায় হতে পারে ঃ-
যারা দীর্ঘ দিন ধরে প্রস্রাব বৃদ্ধি কারক ঔষধ সেবন করেন তাদের বেশী হয়ে থাকে । ৪৫-৫৫ শতাংশ আক্রান্ত হতে পারেন । মেদভুড়ি জাতীর স্থূলতায় ভোগেন এমন সব পুরুষ বা মহিলারা আক্রান্ত হওয়ার সম্বাভনা একটু বেশী ( তাদের আবার ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের হারও বেশী থাকায় প্রস্রাব ব্রিদ্ধিকারক ঔষধ সেবন করতেই হয় তখন পুরাতন রোগিরা ৬০% বেশী সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্বাভনা আছেই )
এ ছাড়া যারা বিভিন্ন ড্রাগস অথবা মদের নেশায় আসক্ত – বিশেষ করে পুরাতন নেশাকারীরা ৯০% বেলায় এই অসুখটি হবেই – তার কারন হিসাবে দেখানো হয়েছে – দীর্ঘ দিন নেশা করার ফলে মস্থিস্কের নিউরন সমূহ শুঁকিয়ে যেতে থাকে তখন নিউরোট্রান্সমিটার স্নায়ু সমূহ কে নির্দিষ্ট পরিমাণ যে অনুভূতি জাতীয় স্পন্দন দেওয়ার কথা সেখানে ঠিক মত স্পন্দন পৌছাতে পারেনা বরং ক্ষতিকারক বজ্র কেমিক্যাল পদার্থই বেশী নিঃসরণ করে —– কোন কোন ক্ষেত্রে এও দেখেছি – যারা নতুন ভাবে ড্রাগে আসক্ত, তারা ড্রাগের নেশা ছাড়ার জন্য প্রথম ৯০ দিনের ভিতর এ রকম আত্ম ভোলা হয়ে পড়েন – অবশ্য সঠিক চিকিৎসা দিতে পারলে পরবর্তীতে তা ৭০% বেলায় ঠিক হয়ে যায় । সর্বোপরি ড্রাগে আসক্তদের মধ্যে ৫-১০ শতাংশ আত্মহত্যা করেই মারা যায় । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অক্ষমতা জনিত অসুখের প্রথম ১০টি কারণের একটি হচ্ছে সিজোফ্রেনিয়া জাতীয় অসুখ ।

গর্ভবতী মায়েদের বেলায় ঃ- বিজ্ঞানীরা মনে করেন কোন কোন গর্ভবতী মায়ের বেলায় ও সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন যদি শরীরে অতিরিক্ত টক্সিসিটি থাকে – অবশ্য সাথে পুস্টহিনতা, ভাইরাস এবং পরিবেষ গত কারন কে দায়ী করা হয়ে থাকে – তবে এখানে নির্দিষ্ট কারন এখন ও অজানা—
রোগজীবাণু দ্বারা মস্তিস্কের সংক্রমণ ঘটলে হতে পারে — যেমনঃ ভাইরাসজনিত ইনফেকশন বা ভাইরাল সংক্রমণের কারনে হতে দেখা যায় -বিশেষ করে শিশুদের বেলায় শীত কালে ফ্লু বা ঐ জাতীয় ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে । তা ছাড়া সেক্স ট্রান্সমিশন জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে ও হতে পারে ।
যে কোন কারনে মস্তিষ্কে সরা সরি আঘাতের ফলে ও সিজোফ্রেনিয়া হতে পারে ।
সিজোফ্রেনিয়ার লক্ষণ সমূহ কে আচরণের উপর ভিত্তি করে মোট চার ভাগে ভাগ করা যায়ঃ
১- Positive symptoms(পজিটিভ লক্ষণ) ২- Negative symptoms ( নেগেটিভ লক্ষণ ) ৩- Cognitive symptoms ( হঠাৎ বুদ্ধিমানের মত আচরণ ) ৪- Emotional symptoms ( আবেগ জনিত লক্ষণ ) — ( ১ এবং ২ নাম্বার লক্ষণ সমূহ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ _)
১- Positive symptoms(পজিটিভ লক্ষণ সমুহ ) ঃ– ( পজিটিভ লক্ষণ কে আবার তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে ) –
ক- অনুভূতি সমূহ বাইরের কিছুর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে মনে হবে অর্থাৎ চিন্তা পদ্ধতিতে গণ্ডগোল ও নিজের সম্পর্কে অস্তিত্ববোধ বা নিজস্ব অনুভূতিবোধ বিকৃত হয়ে যেতে পারে। ( lose touch” with reality ) সে সময় অনেকের অসংলগ্ন কথাবার্তা– অস্বাভাবিক আচরণ সহ ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার অভাব এবং ক্ষেত্র বিশেষে ভাঙচুর ও সহিংস আচরণ পরিলক্ষিত হয় ।
অর্থাৎ ! ( সংগৃহীত )

অবাস্তব-উদ্ভট চিন্তা-ভাবনা – সিজোফ্রেনিয়া আক্রান্ত রোগীর মধ্যে অস্বাভাবিক ও অবাস্তব চিন্তা-ভাবনা বাসা বাঁধে। অহেতুক সে মানুষকে সন্দেহের চোখে দেখে। রাস্তা দিয়ে মানুষ যাচ্ছে মনে হচ্ছে তার দিকে বিশেষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, তাকে দেখে হাসছে, সমালোচনা করছে।

অনেক সিজোফ্রেনিয়া রোগীর মধ্যে ভ্রান্ত বিশ্বাসের প্রকাশভঙ্গি বিভিন্নভাবে প্রকাশ পেতে পারে। এটা রোগীর বয়স, ধর্মীয় চেতনারোধ, শিক্ষাগত যোগ্যতা, সামাজিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে । যেমন-আশপাশের লোকজন তার ক্ষতি করছে, খাবারে ও পানিতে বিষ মিশিয়ে তাকে হত্যা করার চেষ্টা করছে, তাকে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করছে ইত্যাদি মনে হতে পারে । তার মনের গোপন কথা সে কাউকে না বললেও আশপাশের লোকজন সেগুলো জেনে যায় ইত্যাদি ।

আচার-ব্যবহারে অসংলগ্নতাঃ– সিজোফ্রেনিয়া আক্রান্ত রোগীর মধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ দেখা দেয়। অনেক সাধারণ বিষয় সে সহজভাবে নিতে পারে না। হঠাৎ হঠাৎ সে প্রবল উত্তেজিত হয়ে উঠে। অকারণে উত্তেজিত হয়ে সে কাউকে মারতে উদ্যত হয়। বকাবকি ও গালিগালাজ সব সময় করার অভ্যাস হয়ে উঠে । যে কোনো সামাজিকতায় নিজেকে জড়াতে ঘোর আপত্তি বা বাঁধা থাকে । একা ঘরের মধ্যে সীমাবন্ধ জীবনযাপন করতে পছন্দ করে। কেউ আবার পরিবার-পরিজন থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য দিনের পর দিন একা একা বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়ায়। কেউ ভালো-মন্দ জিজ্ঞেস করলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে । জিনিষপত্র ভাঙচুর করে। কাগজপত্র বা কাপড়-চোপড় কেটে কুটি কুটি করে। হঠাৎ করে কাপড় বা অন্য কিছুতে আগুন ধরিয়ে দেয়া সহ অবস্থা গুরতর হলে রোগীর লজ্জা-শরম লোপ পায়। গায়ের কাপড় চোপড় সবার সামনে খুলে ফেলতে সে দ্বিধা করে না। যেখানে সেখানে মল-মূত্র ত্যাগ করে এবং তা ঘাটাঘাটি করে। এই পর্যায়ের রোগিরা ৪০% আত্মহত্যার কথা ভাবে ও আত্মহত্যার চেষ্টা করে।

( অবশ্য উপরের লক্ষণগুলো যদি ৬ মাসের অধিক সময় থাকে, তখনই তাকে সিজোফ্রেনিয়া আক্রান্ত রোগী হিসেবে মনে করতে হবে এবং তখন উপজোক্ত চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা করালে অবশ্যই একজন সিজোফ্রেনিয়া রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে তেমন বেগ পেতে হয়না – তবে মনে রাখতে হবে চিকিৎসা শুরু করার পর যেন তা বিরতি দেওয়া না হয় – নতুবা সাময়িক ভাল হলেও পরবর্তী তে আক্রমণাত্মক হয়েই পড়ে কিছু কিছু রোগী )

খ — হ্যালুসিনেশন!
( হ্যালুসিনেশনের ধরন যদি ও খুব মজার যা বাস্থব নয় কিন্তু রোগির বেলায় অত্তান্ত মারাত্মক ) (hearing, seeing, smelling or feeling things which are not there – hallucinations-
মনে রাখবেন শুধু একক ভাবে হ্যালুসিনেশনের লক্ষণ কে সিজোফ্রেনিয়া রোগী বলা হয় না – যতক্ষণ সাথে অন্যান্য আর ৫ টি লক্ষণ দেখা না দিবে – তবে হ্যালুসিনেশন সিজোফ্রেনিয়ার প্রধান একটি বড় লক্ষণ – যেমন ঃ- মানসিক রোগীরা তাদের কানে নানান ধরনের গায়েবি কথাবার্তা শোনার কথা বলে থাকেন। ইহা ও এক ধরণের হ্যালুসিনেশন। আমরা অনেক সময় ঘুম থেকে জাগার সময় আশপাশের কেউ যেন নাম ধরে ডাকছে এমন মনে করে থাকি। এটিও হ্যালুসিনেশন। তবে – হ্যালুসিনেশন সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থাতেও ঘটতে পারে যাকে স্বাভাবিক হ্যালুসিনেশন বলা হয় বা তেমন ক্ষতিকারক হয়না, যতক্ষণ পর্যন্ত ভয় ও ক্রুধ জাতীয় আবেগ বেশী না আসে ।

( আমাদের পঞ্চইন্দ্রিয়ের একটা সাধারণ ধর্ম হলো, এরা এক এক ইন্দ্রিয় এক এক অনুভূতি জাগায়। শ্রবণেন্দ্রিয় শব্দের অনুভূতি জাগায়, ত্বক সপর্শানুভূতি জাগায়, জিহ্বা স্বাদের অনুভূতি জাগায়, নাকগন্ধের অনুভূতি জাগায়, চোখ দর্শনের অনুভূতি জাগায় তাই একেক অঙ্গে একেক রকমের ছায়া দেখা দিতে পারে = হ্যালুসিনেশনে )

যেমন ঃ- ( অডিটরি হ্যালুসিনেশন’ঃ- কিছু শুনা – বা অলীক শ্রবণ – ) ঃ- সিজোফেন্সনিয়া রোগীদের অনুভূতি বা ইন্দ্রিয় স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি শাণিত ও তীক্ষîরূপ ধারণ করে। যেসব তথ্য পঞ্চইন্দ্রিয়ের সাহায্যে মস্তিষ্কে পৌঁছায়, মস্তিষ্কে এক্ষেত্রে সেসব তথ্যকে সঠিকভাবে বিশ্লেষণ-ব্যাখ্যা করতে পারে না। তাই এসব তথ্যের তাড়নায় ব্যক্তি যে সাড়া দেয় তা থাকে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও অসংলগ্ন কিছু কথা বার্তা সিজোফ্রেনিয় আক্রান্ত ব্যাক্তিরা শুনতে পান । সেই সাথে অনেকে অদ্ভুত শব্দ বা ভাষায় কথা ও বলতে থাকেন ইত্যাদি ।

চোখের হ্যালুসিনেশন বা ভিজ্যুয়াল হ্যালুসিনেশন ঃ- রোগী চোখের সামনে কোনো বস্তু দেখতে পায়। এতেও আবার আকারের পরিবর্তন ঘটতে পারে। কোনো বস্তুকে তার স্বাভাবিক আকারের চেয়েও ছোট অবয়বে দেখতে পারে। আবার অনেক বেশি বিবর্তিত হতে পারে। রোগী এ ক্ষেত্রে তার সামনে দৈত্যের কথা বলতে পারে।

ত্বকের হ্যালুসিনেশন ঃ- রোগী বলতে পারে তার ত্বকের ওপর দিয়ে বা নিচ দিয়ে শুয়ো পোকা চলাচল করছে। অপর একদল বলে থাকে কেউ যেন প্রতিদিন তার সঙ্গে সঙ্গম করে যাচ্ছে। তার শরীরের মাঝে কেউ যেন ইলেকট্রিক শক দিচ্ছে। এগুলো ত্বকের হ্যালুসিনেশন।

জিহ্বা আর নাসিকার হ্যালুসিনেশন ঃ- মনোরোগ গবেষকরা এ দুটোকে এক সাথে উল্লেখ করে থাকেন। কারণ এ দুটো নাকি এক সাথে ঘটে থাকে। জিহ্বার হ্যালুসিনেশনে রোগী কোনো এক অজানা জায়গা হতে খাবারের স্বাদ পেয়ে থাকে। নাসিকার হ্যালুসিনেশনে আশপাশের কেউ কোনো গন্ধ শুঁকছে না অথচ রোগী প্রতিনিয়ত বলে যাচ্ছে তার নাকে যেন কোথা হতে এক উৎকট গন্ধ আসছে। ইত্যাদি —
ঠিক সে রকম – অনেক ধরণের হ্যালুসিনেশন আছেঃ- রানিং কমেন্টারি ( গায়েবী শব্দ ) – এক্সট্রা ক্যাম্পেইন অডিটরি হ্যালুসিনেশন ( বাংলাদেশে বসে ইউকের কোনো আত্মীয় কথা বলতেছে তা শোনা যা কোনোভাবেই একজেক্টলি বলা সম্ভব না হলে ও কখনও কখনও মানসিক রোগে এ অসম্ভব সম্ভব হয়ে যায় মানসিক ভাইট্রাল শক্তির কারনে !!!! তবে বাস্থবতার সাথে এসবের মিল থাকেনা ) । শ্রবণেন্দ্রিয় হ্যালুসিনেশন ( কেউ কিছু করতে থাকলে সেখান থেকে গায়েবী আওয়াজ শুনা ) – রিফ্লেক্স হ্যালুসিনেশন ( ইহা ড্রাগ আসক্তদের বেলায় বেশী দেখা যায়- যেমন এরা গান শুধু কানেই শোনে না, তা চোখেও দেখতে পায়। মানে কানের শ্রবণ উদ্দীপনাতে ভিজ্যুয়াল হ্যালুসিনেশন শুরু হয়ে যায় ) । অটোসকোপিক হ্যালুসিনেশন ( এতে ব্যক্তি নিজেকে তার সামনে দেখতে পায় ) । কমান্ড হ্যালুসিনেশন ( যখন কানে গায়েবি আওয়াজ আসতে থাকে তখন সে মনের এসব অনুভূতি বুঝে উঠতে পারে না। এ কারণে অনেকটা বিহ্বল হয়ে চারপাশে তাকাতে থাকে। অনেকে সারাক্ষণ বক বক করে। ) ইত্যাদি ———

গ – অযৌক্তিক, ভিত্তিহীন কিছুকে বিশ্বাস করা বা irrational and unfounded beliefs (delusions).
অস্বাভাবিক বিশ্বাস থাকতে পারে। এতে তারা তাদের বিশ্বাসগুলোতে সব সময় অবিচল থাকে – ¬ বিশ্বাসগুলো ব্যক্তির সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও কালচারাল বা সংস্কৃতিগত এবং শিক্ষার সম্পূর্ণ পরিপন্থী, তথাপি রোগী এতে বিশ্বাস স্খাপন করে বেশী । যারা সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত তারা লাল-সবুজ ট্রাফিক সিগন্যালকে আদেশ বা নির্দেশ মনে করতে পারে। অনেক সিজোফ্রেনিয়ারা বিশ্বাস করে তাদের বিরুদ্ধে অন্যরা সমালোচনা বা ষড়যন্ত্র করে চলেছে। মনে করে কেউ তাদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা লেলিয়ে দিয়ে দূর থেকে তার কাজকর্মকে দেখছে। সিজোফ্রেনিয়ানদের বেলায় এ ভ্রান্ত বিশ্বাস বা ধারণাটি যাদের প্রবলমাত্রায় থাকে, একে বলে প্যারানয়েড । অনেকে আবার বলে থাকে যে, তাদের চিন্তা-চেতনা ও মনের কথাগুলো কেউ চুরি করে নিয়ে রেডিও, টেলিভিশন বা সিনেমায় প্রচার করছে – যদিও এইসব বিভ্রম শুনতে আনন্দ দায়ক কিন্তু বাস্থবে খুব ভয়ানক হতে পারে । অর্থাৎ বাইরের কোনো শক্তি তাদের চিন্তা-ভাবনাকে নিয়ন্ত্রণ করছে মনে হবে ।

২- Negative symptoms(নেগেটিভ লক্ষণ blunted emotion.)
নেগেটিভ লক্ষণ সমূহের মধ্যে – ক্লান্তি – একাগ্রতায় থাকতে ভালবাসা – শক্তি ও প্রেরণার অভাব- ( যা কোন কোন সময় ড্রাগসের আশক্ততার সাথে সরাসরি সম্পর্ক যোক্ত থাকতে পারে ) –নেগেটিভ লক্ষণের মধ্যে প্রতি ১০ জনে একজনে সুইসাইড অথবা নিজে নিজে নিজের চরম শারীরিক ক্ষতি করার চিন্তা ভাবনা করে থাকে ।

বাস্থবে যা দেখতে পাওয়া যায় ঃ-
চিন্তায় গণ্ডগোল বা অসংলগ্ন চিন্তাধারা সহ নিজ সম্পর্কে নিজস্ব ভাবনায় মগ্ন থাকা -এবং প্রেষণার অভাব বা অ্যাপাথি দেখা দেয় । অর্থাৎ নিজ সম্পর্কে নিজস্ব অনুভূতির বিলুপ্তি ঘটে। কিছু ক্ষেত্রে তারা মনে করে বা চিন্তা করে তাদের দেহ বা শরীর নিজ থেকে আলাদা বা ব্যক্তি থেকে আলাদা। তাদের নিজের ভেতরের শক্তি হারিয়ে ফেলে, জীবন সম্পর্কে উৎসাহ-উদ্দীপনা হারিয়ে ফেলে। এটিকে আমরা অনেকে অলসতা বা খামখেয়ালি বলে ভুল করে থাকি। অনেক সময় কেবলি ঘুমাতে চায়। খাওয়া-দাওয়ার সময় উঠে অগোছালোভাবে খাওয়া-দাওয়া করে। নিজের প্রতি কোনো যত্ন তারা কখনো নেয় না। দেখা যায় যে, এদের কাপড়-চোপড়ে ঝোলের দাগ, দাড়ি-মোচ গজিয়ে একেবারে দরবেশ হয়ে গেছে। আঙুলের নখ অনেক বড় হয়ে তাতে ময়লা জমেছে। সোজা কথায় জীবন সম্পর্কে কোনো উৎসাহবোধ তাদের থাকে না। ( বিশেষ করে ব্যাক্তিগত চরম অপমান বা আঘাতের ফলে বেশী দেখা দিয়ে থাকে )

কখন আত্মহত্যার ঝুঁকি বেশী দেখা দিতে পারে ? ঃ-
সিজোফ্রেনিয়ান রোগীদের শতকরা ১০ ভাগ কোনো না কোনো উপায়ে নিজেদের ক্ষতি করে থাকে। রোগীর আচরণ দেখে কীভাবে বুঝবেন সে আত্মহত্যা করতে পারে !!!!
সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ব্যাক্তি ঘনঘন আত্মহত্যার কথা বলবে- বা আত্মহত্যার পরিকল্পনার কথা বলবে – আত্মসম্মানবোধ বা নিজের সম্পর্কে হীনম্মন্যতা থাকে – ভবিষ্যৎ সম্পর্কে যদি আশাহত অনুভূতির কথা সব সময় বলে – সেই সাথে অন্যান্য মারাত্মক নেগেটিভ চিন্তা ভাবনা সহ হ্যালুসিনেশনের লক্ষণ সহ ও অযৌক্তিক, ভিত্তিহীন কিছুকে বিশ্বাস করতে থাকবে । বিশেষ করে অবশ্যই গায়েবি আওয়াজ শুনা বা কোনো অলীক প্রত্যক্ষণ দেখতে পাবে যা তাকে আত্মহত্যা করতে উৎসাহ যোগায় ।

৩- Cognitive symptoms ) ঃ- ( জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান মনে করা যা সে নিজেই জানেনা )
এ ধরণের সিজোফ্রেনিয়ায় ভোগার পর অনেকের বিচিত্র সব অনুভূতি দেখা যায়। কখনো মনে করে, পৃখিবীতে সে-ই সবচেয়ে জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান। তাই কেউ কোনো পরামর্শ বা উপদেশ দিতে গেলে সে মারমুখি হয়ে উঠে। এদের আবেগজনিত প্রকাশ ও সত্যিকার পরিস্থিতি অনেকাংশে খাপ খায় না। সে সময় অনেকে দাবী করেন , গায়েবী আওয়াজ শুনতে পান যখন আশপাশে কোন লোকজন থাকেনা তখন কথা শুনতে পান । কখনো ফিসফিস আওয়াজ বা পাখির ডাকের মতো শব্দও শুনতে পান । এসব শোনা থেকে রক্ষা পেতে অনেকে কানে তুলে বা আঙ্গুল দিয়ে বসে থাকেন । কখনো কখনো রোগীকে একা একাই কথা বলতে দেখা যায়। কেউ কেউ নাকে বিশেষ কিছুর গন্ধ পায়। ঘুমের মধ্যে অনেক রোগী হাঁটিহাটি করে, তার স্মরণ শক্তি লোপ পায়। একটু আগে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনা সে মনে করতে পারে না। আকাশ-কুসুম কল্পনাকে অনেক রোগী বাস্তবের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে। সামান্য অনেক বিষয় তার মধ্যে মারাত্মক প্রতিক্রিয়াশীল অনুভূতি তৈরি করে । সিজোফ্রেনিয়া আক্রান্ত কোনো কোনো রোগী মনে করে, তার অলৌকিক বা অতীন্দ্রিয় ক্ষমতা আছে। সে স্বপ্নের মধ্য দিয়ে ওপর থেকে বিশেষ ক্ষমতা লাভ করছে । অনেক রোগীই বলে থাকে আমার সঙ্গে জ্বীন-পরীর যোগাযোগ আছে ইত্যাদি ।

৪- Emotional symptoms ( আবেগহীন অনুভূতি জাতীয় লক্ষণ )
সিজোফ্রেনিয়ায় আবেগ, অনুভূতিতে কিছু পরিবর্তন আসে অথচ চোখ-মুখে আবেগের তেমন কোনো প্রকাশ স্পষ্ট নয়। কেমন যেন মেঘাচ্ছন্ন ভাব। তাদের শরীরের নানা অংশের নড়াচড়াও সীমাবদ্ধ থাকে। অনেক ক্ষেত্রেই আবেগ এতটাই অবদমিত থাকে যে, বিশেষ পরিস্খিতিতে পর্যন্ত তারা আবেগশূন্যতায় ভোগে। তবে তার মানে কিন্তু এই নয় যে, ব্যক্তির আবেগ অনুভবের ক্ষমতা একেবারেই নেই। অনেক ক্ষেত্রে সিজোফ্রেনিয়ান আক্রান্ত ব্যাক্তিরা ভেতরে ভেতরে তীব্র আবেগ অনুভব করে। কিন্তু তা বাইরে প্রকাশ করলেই যত সমস্যা। সিজোফ্রেনিয়ায় প্রাবল্য যত বাড়ে আবেগহীনতাও তত সামনের দিকে অগ্রসর হয় ইহাই নিয়ম ।
যেমন যেখানে হাসা দরকার সেখানে এরা কেঁদে ফেলে এবং উল্টোটা করে । অনেক ক্ষেত্রেই তাদের আবেগ এতটাই অবদমিত থাকে যে, বিশেষ পরিস্থিতিতে পর্যন্ত তারা আবেগশূন্যতায় ভোগে। সেই সাথে দীর্ঘমেয়াদি বিষণíতা দেখা যায় – সেখানে মাঝারি থেকে তীব্র অবসন্নতা বা দু:খবোধ থাকতে পারে। এ সময় রোগী নিজেকে খুব অসহায় ও আশাহত মনে করে।

তবে মনে রাখবেন বিষণ্ণতা জনিত উপসর্গসমূহ অত্যন্ত বেদনাদায়ক, এগুলো কথার মাঝে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে অথবা কেউ কেউ আত্মহত্যা বা সুইসাইড পর্যন্ত করে ফেলতে পারে। এ সময় মস্তিষ্কে যে জৈব রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে দ্রুত সে জন্য রোগীকে ওষুধ অবশ্যই সেবন করানো খুব জরুরী ।

অন্য দিকে যারা অনেক দিন যাবৎ ভোগেন তারা ক্রমশ সমাজ থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিজস্ব মনের ছোট গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ ভুবনে থাকতে পছন্দ করে। এটি অবসন্নতা বা বিষণ্ণ ভাবের জন্য হতে পারে অথবা একা থাকাটাই নিরাপদ¬ এ রকম ভ্রান্ত ধারণার কারণেও হতে পারে। সমাজে বসবাসের জন্য যে সব আচরণগত অভ্যাস থাকার দরকার । সিজোফ্রেনিয়ায় ভুগলে তা যে কেউ ভুলে যান ।

সিজোফ্রেনিয়ায় – টি এন এইজ দের বেলায় ও সমান লক্ষণ দেখা দিতে পারে এবং যা পূর্ণ ভাবে আক্রান্ত হতে ৬/১০ বছর পর্যন্ত লেগে যায় । সে জন্য ছোট বাচ্চারা যদি ঘুমের মধ্যে ভয় পায় বা ভয় পেয়ে ঘুম থেকে উঠে তাদের বেলায় অবশ্যই সতর্ক থাকা উচিৎ যাতে প্রতি রাত অভ্যাসে পরিণত না হয় —

পরীক্ষা নিরীক্ষা ঃ
সিজোফ্রেনিয়ায় রোগ নির্ণয়ের জন্য কোনো প্যাথলজিক্যাল ডায়াগনোসিস বা ল্যাবটেস্ট নেই। শধু মাত্র ব্রেইন ইমেজিঙ্গের মাধ্যমে কালার পরিবতনের কিছু দৃশ্য ছাড়া আর কিছুই বুজা যায়না ।

ফিজিওলজিক্যাল দৃষ্টিতে ঃ- সাধারণত স্বাস্থ্যবান মানুষের ক্ষেন্দ্রিয় মস্থিস্কের ভিতরের গহব্বর সমূহ যে সব জৈব-রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে ভর্তি থাকে ইহা দেখতে ধূসর বর্ণের হয়ে থাকে কিন্তু যারা সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাদের বেলায় এই ধূসর বর্ণ পরিবর্তন হয়ে দেখতে একেবারে সাদা দেখায় যা জৈব-রাসায়নিক পদার্থের অভাবে হয়ে থাকে ( তবে এর সঠিক বিকল্প ব্যাবস্তা এখন ও আবিষ্কার হয়নি – এবং যদি কোন দিন আবিষ্কার হয় তা হলে মানুষ কোন দিনই আর পাগল হবেনা ! বা পাগল হলে ও ভাল হয়ে যাওয়ার কথা ,তারপর ও ইহা নিশ্চিত করে বলা অসম্বভ ) – এছাড়া, মস্থিস্কের ভিতরের আর কয়েকটি পরিবর্তন ও লক্ষণ ধরা পরে মানুষ মরার পর তার মস্তস্কের ভিতর ধরা পরে ।

তবে একজন বিশেষজ্ঞ প্রয়োজনে উক্ত রোগির অন্য কোন ধরণের সমস্যা আছে কিনা – বিশেষ করে রোগীর ড্রাগে আসক্তি আছে কি না? রোগী অ্যালকোহল, ফেনসিডিল, মারিজুয়ানা, হেরোইন, মরফিন বা অন্য কোনো মাদকে আসক্ত কি না? রোগীর এপিলেপসি বা মৃগীরোগ আছে কি না ব্রেন টিউমার বা মস্তিষ্কে টিউমার আছে কি না- থাইরয়েড গ্রন্থির গণ্ডগোল বা অন্য কোনো বিপাকীয় সমস্যা আছে কি না (হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে শর্করার নিম্নমাত্রা) ইত্যাদির জন্য আনুশাঙ্গিক পরীক্ষা করার কথা বলতে পারেন ।

চিকিৎসা :
সিজোফ্রেনিয়ায় চিকিৎসা একটু দীর্ঘমেয়াদি। রোগীকে মেডিকেশন বা ওষুধ নিয়মিত সেবন করাতে হয়। অনেকের বেলায় সহায়তাকারী বা সমর্থনমূলক কাউন্সিলিং করা হয়। অবশ্য অনেক রোগীর ক্ষেত্রে পুনর্বাসন চিকিৎসার অংশ হয়ে দাঁড়ায়। রোগীকে বাসায় রেখে বা হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করাবেন কি না তা মূলত রোগটির তীব্রতা ও আর্থিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে। তাই সিজোফ্রেনিয়া রোগীর সম্পূর্ণ চিকিৎসা ব্যবস্খাপনা রোগীর আত্মীয়-স্বজনকে বা পরিবারের সদস্যকে ভালোভাবে বুঝা খুবি বেশী প্রয়োজন ।
মেডিকেশন বা ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা ( আমার ব্যাক্তিগত মতে সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত রোগি তার নিজে নিজে ঔষধ সেবন করা মোঠেই নিরাপদ নয় — )

যেসব সিজোফ্রেনিয়ার রোগী অসুখটির সুনির্দিষ্ট উপসর্গে ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে নিউরোলেপটিক বা অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধ খুবই কার্যকরী। —

এগুলো সেবনের কয়েক দিন বা কয়েক সপ্তাহের ভেতর রোগীর সুনির্দিষ্ট উপসর্গ যেমন গায়েবি আওয়াজ, অলীক প্রত্যক্ষণ, ভ্রান্ত বিশ্বাস ইত্যাদি কমতে শুরু করে। কতক রোগীর বেলায় এগুলো কমতে মাসাধিককাল লাগতে পারে। যাদের সিজোফেন্সনিয়াতে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বারবার থাকে তাদের ক্ষেত্রে তীব্র উপসর্গগুলো দূরীকরণে নিউরোলেপটিকস ব্যবহার করা হয়। তবে ক্রনিক অবস্খা বা আবেগহীনতা ইত্যাদি উপসর্গগুলো সারাতে সময় একটু বেশি লাগে।

সিজোফেন্সনিয়ার ক্ষেত্রে স্নায়ুতন্ত্রে ডোপামিন নামক নিউরোট্রান্সমিটারের ঘনত্ব অনেক বেড়ে যায়। এটি স্নায়ুতন্ত্রে বিভিন্ন কোষের মাঝে যোগাযোগের ক্ষেত্রে রাসায়নিক দূত হিসেবে কাজ করে। তাই দেখা যায় যে, সিজোফেন্সনিকদের মস্তিষ্কে ডোপামিন রিসেপ্টরের সংখ্যা অনেক বেশি থাকে এবং এদের মস্তিষ্কে সাধারণের তুলনায় অসংলগ্ন বা অসামঞ্জস্য সংকেত বহন করে থাকে। এগুলো পরবর্তীতে রোগীর আচরণে পরিষ্কার রূপ নেয় এবং বিভিন্ন ধরনের সাইকোটিক উপসর্গ দেখা দেয়। বিধায় সিজোফেন্সনিয়ার চিকিৎসায় যেমন নিউরোলেপটিক ব্যবহৃত হয়ে থাকে সেগুলো ডোপামিনের লেভেলকে কমাতে সাহায্য করে। তবে কোন রোগীর ক্ষেত্রে কী ধরনের ওষুধ ব্যবহার করতে হবে তা নরভর করে রোগির অবস্থার উপর – সে জন্য মানসিক বিশেষজ্ঞ পারেন সঠিক সব কিছুর নিখুত ব্যাবস্থা বলে দিতে ।

নিউরোলেপটিক ওষুধগুলো ট্যাবলেট বা তরলাকারে বা ইনজেকশনের মাধ্যমেও প্রয়োগ করা যেতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা বেশির ভাগ রোগীকে মুখে সেবনযোগ্য ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করার অতা বলে থাকেন তবে রোগীর তীব্র উপসর্গ থাকলে ইনজেকশন ব্যবহার করা হয়ে থাকে । মনে রাখবেন – এই সব ঔষধের মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে বিধায় বিশেষ সতর্কতার সাথে ঔষধ সমূহ ব্যাবহার করতে হবে । দেখা যায় অনেক ক্ষেত্রে রোগীকে কয়েকদিন ওষুধ খেয়ে হঠাৎ করে ওষুধ বন্ধ করে দেন – তা একেবারেই ঠিক নয় । এতে হিতে বিপরীত ফল বয়ে আনবে বা ৮০% বেলায় সাইকোটিক এপিসোড বা ক্রাইসিস ( ঘোর পাগলের মত আচরণ ) হয়ে যেতে পারে ।

সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্তদের অন্যান্য প্রচলিত কিছু চিকিৎসা- একজন বিশেষজ্ঞ যে ভাবে করে থাকেন ( ধারনা দেওয়ার জন্য সংযোক্ত করে দিলাম )

ইলেকট্রোকনভালসিভ থেরাপি (ইসিটি)¬এটিতে মূলত রোগীকে অ্যানেসথেসিয়ার মাধ্যমে অজ্ঞান করে মাথায় কতগুলো ইলেক্ট্রোড স্খাপন করে উচ্চমাত্রার ভোল্টেজ দিয়ে রোগীকে শক দেয়া হয়। এই সময় রোগীর মুখের মাংসপেশিতে খিঁচুনি হয়ে থাকে। সিজোফেন্সনিয়ার কতক রোগী এই থেরাপিতে বেশ উপকৃত হয়ে থাকে। ইসিটি মূলত প্রয়োগ করা হয় তীব্র বিষণíতার রোগীদের ক্ষেত্রে। অবশ্য ম্যানিক ডিপ্রেসভ সাইকোসিস বা যাদের মন-মেজাজের খুব বেশি পরিবর্তন হয়ে থাকে তাদের ক্ষেত্রেও এটি নির্দেশিত।

পুষ্টি দিয়ে চিকিৎসা : অনেক সময় সিজোফেন্সনিয়া রোগীর ভিটামিন ‘বি’-এর অভাব থাকে। ডা. এইচ অসমন এই সম্পর্কে একটি থিওরি দিয়েছিলেন যাকে মেগাভিটামিন থিওরি বলে। এতে মূলত নিয়াসিন বা ভিটামিন বি৩ রোগীকে প্রচুর পরিমাণে সেবন করানো হয়। বর্তমানে এটি তেমন প্রয়োগ করা হয় না। ইত্যাদি ————-
যাদের পরিবারে সিজোফ্রেনিয়া (কোন কিছু মনে না রাখতে পারা বা স্মৃতিভ্রষ্ট ) ইতিহাস আছে – তাদের জন্য নিচের বিষয় সমূহ জানা অত্যান্ত গুরুত্ব পূর্ণ বলে আমি মনে করি কারন এই অসুখটিতে রোগির চাইতে রোগির গার্জিয়ান কেই বেশী সতর্ক থাকতে হয় – বা যারা সমাজ সেবায় সবসময় আগ্রহী তাদের জন্য ভাল কিছু শিখার আছে বলে মনে করি । সেই সাথে মানসিক ব্যাধির তুলনায় বেশি কুসংস্কার ও অপচিকিৎসার শিকার হয় সিজোফ্রেনিয়া রোগীরা সে দিকে সকলের সুদৃষ্টি থাকবে বলে আমার বিশ্বাস ——

এখানে উল্লেখ করতেই হয় যে অনেক সময় আমরা জীন ভুতের আচর মনে করে বিভিন্ন প্রথাগত চিকিৎসার জন্য ব্যাস্ত হয়ে যাই – মুলত যদিই বা জীন ভুতের কারনে মানুষ ভয় পায় বা তা ব্রেইনের থ্যালামাসের বিশেষ কিছু অংশে স্ক্রাচ করে রাখে যায় । যার কারনে মস্থিস্কের অনুভূতিশীল স্নায়ু সমূহে যোগাযোগ ব্যাবস্থার উলঠ পালঠ করে ফেলে এবং সে সময় যারা বেশী ভয় পায় তাদের বেশী ক্ষতি হয় বা অনেকের সৃতি শক্তি সাময়িক লোপ পাওয়া স্বাভাবিক ( পাগল ) – তা সত্য হলেও সেই জীন বা ভুত আক্রান্ত ব্যাক্তির সাথে থাকার কথা নয় বা অনেকে মনে করেন ভয় দেখিয়ে ওরা চলে যায় – এই বিষয়ে সবাই একমত না হলে চিকিৎসা বিষয়ে উক্ত রোগীকে পিঠিয়ে বা অত্যাচার করে জীন ভুত ছাড়াতে গিয়ে যে অমানবিক কার্যকলাপ করা হয়, তা না করার জন্য সবাই একমত ।

(সেক্রেট অব মেডিক্যাল সাইন্স এন্ড রিসার্চ অনুসারে ) পিঠিয়ে বা বেত্রাঘাত করলে মস্থিস্ক থেকে এ সব চলে যায় বা এর প্রচলিত প্রথা ও আছে আছে বহু আগ থেকেই তাও জানি, বা বেত্রাঘাত করার ফলে মস্থিস্কের গ্লোটামিন এবং ডোপামিন এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থের মাত্রা কমতে থাকে ( তবে ক্রমাগত নয়, আংশিক কিছুটা সত্য ) । কিছুদিন আগে প্রমান সহ দেখানো হয়েছে বা কিছুটা সত্য মনে করা হলে ও- আমরা রোগীকে সারা শরীরে বেত্রাঘাত করে ভুত জীন তাড়ানোর যে কৌশল অবলম্বন করি – তা কিন্তু একেবারে সঠিক নয় বা ভুল বলা হয়েছে ।

সদ্য এক রিসার্চে দেখানো হয়েছে মানব দেহের মোট ১৭ টি পয়েন্ট আছে ( যা সামরিক ডিটেনশন সেন্টারে ব্যাবহার করা হয়ে থাকে ) এবং এই সব পয়েন্টে সামান্য আঘাত করলেই ০.১ সেকেন্ডেই সরাসরি স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কের থ্যালামাস আঘাত করে বা খুভ বেশী ব্যাথা অনুভব করে – তখন ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের নিঃসরণ দ্রুত কমতে থাকে ( এই পদ্ধতি কোন অবস্থায় সাধারণ জনগণ ব্যাবহার করা বৈধ নয় ) – অতচ ভুত জীন তাড়ানোর নামে আমরা আঘাত করি রোগির মাংসপেশিতে এবং মাংসপেশির আঘাত জনিত স্পন্দন নির্দিষ্ট পয়েন্ট হয়ে মস্থিস্কের থ্যালামাসে অনুভব পৌঁছিতে ০.৪ সেকেন্ড সময় লাগে । সে কারনে রোগীকে কেউ কেউ অমানবিক বেত্রাঘাত বা ঐ জাতীয় কিছু করা কোন অবস্থায় ঠিকনা বরং একধরণের মারাত্মক অপরাধ । এ ছাড়া যদি ভুক্তভোগীর শরীর দুর্বল বা অন্য যে কোন ধরণের অসুখ হয় তা হলে কি হবে তা আমার বলার প্রয়োজন নাই । তবে মনে রাখবেন ইহা মানসিক রোগ ফিজিক্যাল অসুখ নয় – তাই মানসিক ভাবেই এর চিকিৎসা করা সবচেয়ে ভাল ।

আমরা অনেকেই জানিনা বাস্থবে তার বিপরীতে কিছু এন্টি সাইকোটিক ঔষধ সেবন করালে সমান ফলদায়ক এবং সে জন্য জখম বা আঘাত করার প্রয়োজন হয়না – যা প্রমাণ করেই দেখানো হয়েছে বরং এই সব অমানবিক অত্যাচারের চাইতে ঔষধ সমূহ বেশী কার্যকর – তা হলে কেন একজন মানুষের শরীরে আঘাত জাতীয় কিছু করে অমানবিক মারপিঠ ও জখম করে অমানবিক আচরণ করবেন ! তা আমার বোধগম্য নয় — অন্য এক রিসার্চে দেখানো হয়েছে -প্রথা ভিত্তিক : তাবিজ কবজ জাতীয় কিছু সাইকোটিক চিকিৎসা, কিছু কিছু মানসিক রোগির ক্ষেত্রে ফলদায়ক যদি সে উপলব্দি করতে সমর্থ হয় ( তবে কারও কারও বেলায় মন্দ ফল দেখা যায় যদি সে নেগেটিভ ভিজুয়েল হ্যালুসিনেশন মনে করে ) — যাই হউক এ সব বিষয়ে অনেক কিছু জানা থাকলে ও আমার আর অগ্রসর হওয়া উচিৎ নয় । তবে অনুরুধ থাকবে সকলের কাছে মানসিক বিকার গ্রস্ত রোগীকে সর্ব প্রথম ভাল মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞকে দেখিয়ে তিনির পরামর্ষে সঠিক ব্যাবস্থা গ্রহন করার এবং সর্ত একটা উক্ত রোগীদের বেলায় ঘন ঘন চিকিৎসক পরিবর্তন না করার ।



লেখক :মিউজিক থেরাপিষ্ট

পাঠকের মতামত:

০৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test