E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ইফতারে রাখুন ডাবের পানি

২০১৭ জুন ০৯ ১২:১৬:০২
ইফতারে রাখুন ডাবের পানি

স্বাস্থ্য ডেস্ক : তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও দিনের দৈর্ঘ্য বাড়ছেই। তাই সারা দিন সংযমের পর ইফতারে চাই পুষ্টি ও স্বাস্থ্যকর খাবার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইফতারে ভাজাপোড়া ভুলে গিয়ে ফলমূলে মনোযোগী হওয়া দরকার। ইফতারে ডাব রাখলে কী উপকার, তা জেনে নিন
 

পুষ্টিগুণ

এক কাপ ডাবের পানিতে রয়েছে ৯ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, তিন গ্রাম ফাইবার এবং দুই গ্রাম প্রোটিন। এ ছাড়া প্রতিদিন প্রয়োজন এমন খনিজের বেশ খানিকটা মেলে এই সামান্য পরিমাণ পানি থেকেই। ভিটামিন ‘সি’ মিলবে প্রতিদিনের চাহিদার ১০ শতাংশ, ম্যাগনেসিয়াম ১৫ শতাংশ, ম্যাংগানিজ ১৭ শতাংশ, পটাসিয়াম ১৭ শতাংশ, সোডিয়াম ১১ শতাংশ আর ক্যালসিয়াম ৬ শতাংশ।

পানিশূন্যতায়

তৃষ্ণা মেটানোতে পানির পর ডাবের তুলনাই চলে না। ইলেকট্রোলাইট উপাদানের মিশ্রণের কারণেই এটি সেরা তৃষ্ণা নিবারক। ডায়রিয়া, তীব্র বমি বা প্রচণ্ড ঘামের পর ডাবের পানি দেহের পানিশূন্যতা পূরণ করে। ২০১২ সালে জার্নাল অব দ্য ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অব স্পোর্টস নিউট্রিশনের এক গবেষণায় বলা হয়, যেকোনো ব্যায়াম ও খেলাধুলার পর সতেজ হতে চাই ডাবের পানি। কাজেই সারা দিন রোজার পর পানির অভাব দূর করতে একটি বা দুটি ডাব এক অসাধারণ সমাধান।

রক্তচাপ

যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য ডাবের ভিটামিন ‘সি’, পটাসিয়াম আর ম্যাগনেসিয়াম জাদুর মতো কাজ করে। দেহে সোডিয়ামের বিরূপ প্রতিক্রিয়া সামাল দিয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনে এই পানি। ২০০৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে বলা হয়, হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণে খুবই ভালো ডাবের পানি।

হার্টের টনিক

হৃদযন্ত্রের নিরাপত্তায় উপকারী এই পানি। লো-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন বা ক্ষতিকর এলডিএল কোলেস্টেরল কমিয়ে আনতে কার্যকর। পাশাপাশি বৃদ্ধি করে হাই-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন বা উপকরী এইচডিএল কোলেস্টেরল। ফলে কমে আসে হৃদরোগের ঝুঁকি। এ ছাড়া ডাবের পানিতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিপ্লেটলেট উপাদান। এগুলো রক্তপ্রবাহকে সুষ্ঠু রাখে। ধমনির পথ সংকুচিত হতে দেয় না। কাজেই কমে আসে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি।

ওজন কমাতে

যাঁরা দেহের বাড়তি ওজন ঝরাতে তৎপর, তাঁরা ডাবের পানিতে ভরসা আনতে পারেন। পাকস্থলী একে সহজে গ্রহণ করে। হালকা ও সতেজ অনুভূতি আনা এই পানীয়তে আছে বিভিন্ন ধরনের উেসচক। এগুলো হজমে সহায়ক এবং বিপাকক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। প্রচুর পটাসিয়াম থাকায় দেহে লবণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে সহজে পানির ঘাটতি হয় না। আবার দেহে প্রবহমান বিভিন্ন বিষাক্ত উপাদান দূর করতেও কার্যকর এক পানীয় এটি। বিভিন্ন গবেষণায় জানানো হয়, সপ্তাহে তিন-চারবার ডাবের পানি নিয়মিত খেলে ওজন নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।

মাথা ব্যথায়

সাধারণ মাথা ব্যথা ছাড়াও মাইগ্রেনের ব্যথা তীব্র হতে পারে পানির অভাবে। ডাব ইলেকট্রোলাইট সরবরাহের মাধ্যমে যেমন পানির চাহিদা মেটায়, তেমনি মাথা ব্যথাও সারিয়ে তোলে। এ পানির ম্যাগনেসিয়াম মাইগ্রেনের ঝুঁকি কমায়। কারণ মাইগ্রেনে ভোগা মানুষদের দেহে এই খনিজের অভাব দেখা যায়।

পিএইচ মাত্রা

মানসিক চাপের সঙ্গে বিষাক্ত, এসিড উৎপাদনকারী এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারে দেহের পিএইচের মাত্রা ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। ফলে দেহ পর্যাপ্ত ভিটামিন ও খনিজ গ্রহণ করতে পারে না। এ অবস্থা থেকে মুক্তির পথ দেখায় ডাব। এসিডিক পিএইচ অনেক সময়ই লিভার, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা নষ্টে দায়ী থাকে।

গ্লুকোজ সামলাতে

ডাবে আছে অ্যামাইনো এসিড আর ভক্ষণযোগ্য ফাইবার। এগুলো ইনসুলিনকে কার্যকর করে তোলে এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রাখে। ২০১২ সালে ফুড অ্যান্ড ফাংশনের গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এর পানি অনেকটা থেরাপির কাজ করে। ডাব বা নারকেলের পানি রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা হ্রাসে সহায়ক।

মূত্রবর্ধক

নিয়মিত ডাবের পানি খেলে প্রাকৃতিকভাবে মূত্রের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। ফলে দেহের ক্ষতিকার উপাদানগুলো বেরিয়ে আসে। এর উচ্চমাত্রার পটাসিয়াম মূত্রের ক্ষারীয় অংশ দূর করার সঙ্গে কয়েক ধরনের কিডনির পাথরকে দ্রবীভূত করে। ফলে কিডনি রক্ষা পায়। কার্যকারিতা বাড়াতে এক কাপ ডাবের পানিতে এক চিমটি লবণ গুলিয়ে নিন। ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী উপাদানও রয়েছে এতে। ফলে মূত্রথলির সংক্রমণ রোধ হয়।

(ওএস/এসপি/জুন ০৯, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test