E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বিটিআরসিকে ১০০০ কোটি টাকা দিলো গ্রামীণফোন

২০২০ ফেব্রুয়ারি ২৩ ১৭:০৯:৫৬
বিটিআরসিকে ১০০০ কোটি টাকা দিলো গ্রামীণফোন

স্টাফ রিপোর্টার : আপিল বিভাগের নির্দেশে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) নিরীক্ষা আপত্তির বকেয়ার মধ্যে এক হাজার কোটি টাকা দিয়েছে দেশের টেলিকমিউনিকেশন খাতের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন।

রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রমনায় বিটিআরসির চেয়ারম্যানের কাছে সংস্থার কার্যালয়ে গ্রামীণফোনের পরিচালক ও হেড অব রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাতসহ কর্মকর্তারা এ সংক্রান্ত পে-অর্ডার হস্তান্তর করেন।

গত শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিটিআরসিকে হাজার কোটি টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায় গ্রামীণফোন।

এর আগে বিটিআরসির নিরীক্ষা দাবির পাওনা এক হাজার কোটি টাকা আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দিতে গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।

গত বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এ নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।

এক হাজার কোটি টাকার পে-অর্ডার গ্রহণের পর বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, অনেক দিন ধরে মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়েছিল। আজ সংবিধান রক্ষা হলো, সুপ্রিম কোর্টের আদেশ রক্ষা হলো। এ সরকার তার প্রাপ্য অর্থের কিছু হলেও পেলো, যা জনগণের টাকা।

টাকা দেওয়ার জন্য গ্রামীণফোনকে ধন্যবাদ জানিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, দেরি হলেও ব্যাপারটি বুঝতে পেরেছে, টাকাটা দেওয়াই যখন লাগবে, দিয়ে দিয়েছে তারা।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, গ্রামীণফোনকে কখনো মনে করিনি অপজিট পার্টি বা শত্রু। তাদের অপারেটর মনে করতাম, রেগুলেটর হিসেবে তাদের যা পাওনা তা সবসময় দিতে প্রস্তুত ছিলাম। কিছু কিছু কাজ বন্ধ রয়েছে আইনগত কারণে। নিজেদের কোনো ইচ্ছা বা অভিপ্রায় ছিল না যে গ্রামীণফোনের কোনোরকম ক্ষতি হোক। হয়তো কোনো ব্যাপারে আন্ডারস্ট্যান্ডিং সমস্যা হয়েছিল, তারা মনে করেছিল কোর্টে গিয়ে হয়তো কিছু কম পাবে, অনেক পরিমাণ টাকা বিলম্ব করতে পারলে ব্যবসায়িক লাভ হবে। গ্রামীণফোন শেষে হলেও মিস-আন্ডারস্ট্যান্ডিং থেকে প্রোপ্রার আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ে এসেছে, এটি আমাদের জন্য খুব সুখের খবর।

ভবিষ্যতে যেকোনো বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, সমস্যা হলে রেগুলেটরকে জানাবেন, রেগুলেটরের সঙ্গে আলোচনা না করলে লাভ হয় না, সময় কিছু নষ্ট হয়। আমরা সব করি দেশ ও জাতির জন্য, আমাদের কোনো ব্যক্তিগত পাওনা নেই।

নিরীক্ষা আপত্তির টাকা বকেয়া থাকায় অপারেটরটির এনওসি বন্ধ রেখেছিল বিটিআরসি।

এনওসি প্রত্যাহারের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসি প্রধান বলেন, আদালত যে নির্দেশ দেবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনের বাইরে আমরা যাবো না।

গত ২৪ নভেম্বর আপিল বিভাগ প্রায় ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা পাওনার মধ্যে বিটিআরসিকে তিন মাসের মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা দিতে গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এ আদেশ রিভিউ চেয়ে আবেদন করে গ্রামীণফোন। আপিল বিভাগ এক হাজার কোটি টাকা দিতে নির্দেশ দেয়।

বকেয়া টাকা পরিশোধ নিয়ে সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) আদালতে শুনানি রয়েছে। টাকা পরিশোধের বিষয়টি আদালতকে জানালো আদালতের নির্দেশে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলো জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান।

অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের পরিচালক ও হেড অব রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাত বলেন, দেশের আইনি ব্যবস্থার প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী ১০০০ কোটি টাকা জমা দিলাম।

তবে অডিট নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, আমার বলে আসছি অডিটের বিষয়ে আমাদের একটু আপত্তি আছে, সেই পজিশনটা স্টিল অব্যাহত রাখছি।

‘আমরা মনে করি এই বিরোধটা রয়ে গিয়েছে, তা আলোচনার মাধ্যমে লিগ্যাল প্রসেসের মাধ্যমে সমাধান হবে। আমরা একটা কাঠামোগত অবস্থানে আসবো বলে বিশ্বাস করি।’

সাদাত বলেন, আমরা সবসময় আলোচনা অব্যাহত রেখেছি। আমরা মনে করি আলোচনা অব্যাহত রাখতে পারলে সবপক্ষ মিলে একটা সুন্দর সমাধানে আসতে পারবো। চলমান কিছু সমস্যায় ব্যবসা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যথাযথ কর্তৃপক্ষের সহযোগীতায় কাস্টমারদের কাঙ্ক্ষিত মান দিতে পারবো বলে বিশ্বাস করি।

পে-অর্ডার হস্তান্তর অনিষ্ঠানে বিটিআরসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test