E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

এসি ব্যবহারে সতর্কতা

২০১৪ সেপ্টেম্বর ০৬ ১৮:১১:১৫
এসি ব্যবহারে সতর্কতা

নিউজ ডেস্ক : মধ্যবিত্ত পরিবারে আজকাল দ্রুত এসি মেশিন ঢুকছে৷ বিভিন্ন সংস্থা সাধারণ মানুষের আয়ত্তের মধ্যে নিয়ে এসেছে নানা ধরনের বাতানুকূল যন্ত্র৷ কিন্তু আশ্চর্যের হল, আর পাঁচটা জিনিসের মতো এসি মেশিন কেনার ক্ষেত্রেও আমরা বেশির ভাগেরাই সচেতন ক্রেতা নই৷

এসি কেনার সময় কী কী মাথায় রাখা উচিত

১. কোন ঘরের জন্য কত টনের এসি লাগানো উচিত, সেই নির্বাচনটা খুব জরুরি৷ অধিকাংশ ক্রেতাই দোকানে গিয়ে ঘরের মাপ বলেন৷ দোকানদার তা শুনে মেশিন বিক্রি করেন৷ কিন্ত্ত মাথায় রাখতে হবে, ঘরের আয়তন যা-ই হোক না, এয়ারস্পেস কতটা, সেটাই আসল ব্যাপার৷ বেশির ভাগ মানুষই খেয়াল রাখেন না, আসবাবপত্রে কতটা এয়ারস্পেস চলে যায়৷ ফলে অনেকেই বেশি টনের এসি মেশিন কিনে ফেলেন৷ ঘরে আসবাবপত্র যত বেশি হবে, এয়ারস্পেস ততই কমবে, আর এসি-র মাত্রার পরিমাণও কমবে তার অনুপাতে৷

২. ঘরে কতটা সূর্যালোক ঢোকে, সেটাও একটা ফ্যাক্টর৷ অর্থাত্‍ ঘর যদি সারাদিন তেতে থাকে, তা হলে তা ঠান্ডা করতে এসি-র উপরে চাপ পড়বে তুলনামূলক ভাবে বেশি।

দুর্ঘটনা এড়াতে কী করবেন

১. খেয়াল রাখতে হবে, দুপুর দুটো থেকে রাত আটটা এই ছ’ ঘণ্টা খুব ঝুঁকিপূর্ণ৷ এই সময়টা এসি-র প্রয়োজন যেমন বেশি থাকে, তেমন বিদ্যুতের চাহিদাও থাকে তুঙ্গে৷ এই সময় বৈদ্যুতিক কারণে এসিতে নানা দুর্ঘটনা ঘটে যায়।

২. এসি-তে যা দুর্ঘটনা ঘটে, তার ৮০ শতাংশই যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য৷ এর পিছনে ব্যবহারকারীদেরও দায় আছে৷ এসি-র যে এয়ার ফিল্টার থাকে, তা যেমন সহজেই পরিষ্কার করা যায়, কিন্ত্ত কেউ সাধারণত করে না৷ অনেকের এসি-র উপরে পর্দা ঝুলে থাকে৷ অনেক সময়েই দেখা যায়, এসি থেকে আগুন পর্দায় ছড়িয়ে পড়ে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।

৩. অনেকেই দামি এসি-র সঙ্গে খুব সাধারণ সরঞ্জাম ব্যবহার করেন৷ এমনকি এক্সটেনশন কর্ড থেকেও এসি-র সংযোগ টানতে দেখা যায় অনেককে৷ অনেকে আবার কার্পেটের তলা দিয়ে এসি-র লাইন নিয়ে যান৷ এগুলো একেবারেই করা উচিত নয়৷ আর একটা কথা মাথায় রাখা মাস্ট: দুর্ঘটনা এড়াতে এসির বিদ্যুত্‍ সংযোগ নেওয়া উচিত একেবারে মেইন সুইচ বোর্ড থেকে।

৪. এমসিবি (মিনিয়েচার সার্কিট ব্রেকার) ব্যবহারেও যথেষ্ট অনীহা লক্ষ করা যায়৷ এমসিবি লাগানো থাকলে অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনা প্রায় নির্মূল করা সম্ভব।

৫. ঘর ঠান্ডা করা নিয়েও ভ্রান্তি আছে সাধারণ মানুষের মধ্যে৷ অনেকেই তাপমাত্রা যথেষ্ট কমিয়ে কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমোন৷ অনেকে আবার ঘর ঠান্ডা করতে আগেভাগে ফাঁকা ঘরে এসি চালিয়ে রেখে দেন৷ দুটোর একটারও তো কোনও দরকার নেই৷ এতে যেমন বিদ্যুতের অপচয় হয়, তেমন দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও বাড়ে।

৬. সবশেষে একটা কথা বলা উচিত৷ এসি-র রেগুলার মেনটেনেন্স করান, ইঞ্জিনিয়ারকে (পাড়ার মিস্ত্রি নয়) দিয়ে ওয়্যারিং চেক করান৷ দুর্ঘটনা থেকে অনেকটাই নিরাপদ থাকবেন।

এসিতে আগুন না লাগার জন্য কী কী সতর্কতা নেওয়া যেতে পারে?
☛ এসি মেশিনে রিমোট/স্যুইচ ব্যবহার করে অন-অফ করা, চলন্ত অবস্থায় মেন সকেট/স্যুইচ দিয়ে অন-অফ না করা
☛ যে তার ব্যবহার করা হবে ওয়্যারিং-এর জন্য তাতে জোড়া না থাকাই ভালো
☛ ম্যানুয়াল দেখে তাতে যে আউটার ওয়্যারিং ও মেন পয়েন্ট থেকে যে দৈর্ঘ্যের তারের কথা বলা আছে, তার থেকে বেশি লম্বা তার ব্যবহার না করা
☛ কোনও ভাবেই যেন যন্ত্রে সরাসরি জল না পড়ে
☛ বাড়িতে একাধিক বাতানুকূল যন্ত্র থাকলে প্রত্যেকের জন্য ডেডিকেটেড সাকির্ট ও মিনিয়েচার সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার করা
☛ এসি মেশিনের কাছাকাছি অন্য কোনও ইলেকট্রনিক গ্যাজেট, দাহ্য বস্তু, রান্নার গ্যাস-স্টোভ না রাখা
☛ নিয়মিত ব্যবধানে এসির ভেন্টিলেশন, সব ডাক্ট, পিউরিফায়ার, গ্যাস পাইপ পরিষ্কার করা

কত বিদ্যুত্‍‌ টানে এসি
● ২৪ ঘণ্টা চললে ২০ কিউবিক ফিট এসিতে পোড়ে গড়ে ১৪০০ ওয়াট
● ১৬ কিউবিক ফিট এসিতে পোড়ে গড়ে ১২০০ ওয়াট
● ১-১.৫ টনের এসি গড়ে ১০০০-২০০০ ওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন হয়
● বাড়িতে ব্যবহৃত অন্য হাই-ওয়াটেজ গ্যাজেট
● গিজার: ১৫০০-৪৫০০ ওয়াট
● ওয়াশিং মেশিন ড্রায়ার: ৩৪০০ ওয়াট
● ওভেন: ৩০০০ ওয়াট
● হেয়ার ড্রায়ার, ডিশওয়াশার, মাইক্রোওয়েভ, হটপ্লেট: ১২০০ -১৫০০ ওয়াট

(ওএস/অ/সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test