E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

০৩ জুন, ১৯৭১

পাকসেনারা ঝালকাঠিতে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ পরিচালনা করে

২০১৮ জুন ০২ ২৩:০১:৩৩
পাকসেনারা ঝালকাঠিতে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ পরিচালনা করে

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : পুলিশ লাঠিয়াল ও পাকসেনাসহ প্রায় ৩০০ সদস্যের পাকবাহিনীর একটি দল ১২টি নৌকাযোগে কোটালীপাড়া ও পয়সার হাটের খাল দিয়ে গোপালগঞ্জে মুক্তিবাহিনীর কোটালীপাড়া ঘাঁটি আক্রমণে এগিয়ে আসে। পথে হেমায়েত বাহিনী খালের দু’পাশ থেকে পাকবাহিনীর ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে পাকবাহিনী ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে এবং পাকবাহিনীর সমর্থক ২৪ জন লাঠিয়াল ও পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ধরা পড়ে। অপর পক্ষে হেমায়েত বাহিনীর বীরযোদ্ধা ইব্রাহিম শহীদ হন।

পাকসেনারা ঝালকাঠিতে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ পরিচালনা করে। বর্বররা সি.আই শাহ আলম, ওসি সেকেন্দারের নির্দেশে সুধীর দত্তসহ ১১ জনকে পৌরসভা সম্মুখস্থ বধ্যভূমিতে নিয়ে গিয়ে গুলি করে এবং নিহতদের লাশ নদীতে ফেলে দেয়।

লালবাজার সাব-সেক্টরের অধীনে সুবেদার আব্দুল মতিন পাটোয়ারীর নেতৃত্বাধীন মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর পাকবাহিনী আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে পাকসেনারা প্রথম পর্যায়ে ঘাঁটি দখল করে নেয়। পরে চারদিক থেকে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ রচনা করে। এই প্রতিরোধ সংঘর্ষে ২৮ জন পাকসেনা নিহত ও ২০ জন আহত হয়। এই সংঘর্ষের পর মুক্তিবাহিনী পুনরায় তাঁদের ঘাঁটি দখল করে নেয়।

ঢাকায় সরকারি হ্যান্ডআউটে বলা হয়, কোনো ব্যক্তি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের গোপন স্থানের সন্ধান দিলে অথবা উদ্ধার করে দিলে তাকে উপযুক্ত পুরস্কার দেয়া হবে।

মহিলা শিল্পপতি লায়লা খালেদের নেতৃত্বে শিল্পপতিদের একটি প্রতিনিধি দল সামরিক গভর্নর জেনারেল টিক্কা খানের সাথে সাক্ষাৎ করেন।

বাঙালিদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধী মনোভাব সৃষ্টি এবং ঘাতক ও দালালদের সক্রিয় করতে খান আব্দুল কাইয়ুম খানের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা আসার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। এই প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- জাতীয় পরিষদ সদস্য মোহাম্মদ ইউসুফ খান, হানিফ মোহাম্মদ খান, রফিক শাহ, সিন্ধু মুসলিম লীগের সম্পাদক এ.এ কোরেশী ও করাচী মুসলিম লীগের যুগ্ম-সম্পাদক জিয়া আব্বাস।

ঢাকায় সামরিক আইন প্রশাসক লে. জেনারেল টিক্কা খান ১৪৯ নং সামরিক আদেশ জারি করেন। এ আদেশে বলা হয়, পনের দিনের মধ্যে শিক্ষকরা কাজে যোগদান না করলে তাদেরকে চাকুরিচ্যুত এবং সামরিক আদালতে বিচার করা হবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৩ জন শিক্ষক এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, দেশপ্রেমিক পাকিস্তানি শিক্ষকরা প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের কাছ থেকে বিনয় ও সহনুভূতিশীল আচরণ পাচ্ছেন। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় পাকিস্তানের ঘরোয়া ব্যাপারে ভারতের নির্লজ্জ হস্তক্ষেপের নিন্দা করছি। আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের পেছনে প্রদেশের জনগণের কোনো সমর্থন ছিল না এবং নেই।

মওলানা মুফতি দীন মোহাম্মদ খান, মওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ, মওলানা সিদ্দিক আহমদ, মওলানা মোহাম্মদ ইউনুস, মওলানা মোস্তফা আল-মাদানী, মওলানা আনিসুর রহমান, আলহাজ্জ্ব আব্দুল ওয়াহাব, মওলানা আশ্রাফ আলী, মওলানা আমিনুল হক, ও মওলানা নূর আহমদ এক যুক্ত বিবৃতিতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের (মুক্তিবাহিনী) মোকাবেলা করার জন্য পূর্ব পাকিস্তানের ইসলাম প্রিয় লোকদের সামরিক ট্রেনিং দানের ব্যবস্থা করা এবং দেশপ্রেমিক অনুগত নাগরিকদের নিয়ে ‘মুজাহিদ বাহিনী’ গড়ে তোলার জন্য পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহবান জানান।

তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
(ওএস/এএস/জুন ০৩, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test