E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

২৮ জুলাই, ১৯৭১

দিনাজপুরে সামরিক শাসক রাত ১০টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত কারফিউ ঘোষণা করে

২০১৮ জুলাই ২৮ ১২:২১:১৩
দিনাজপুরে সামরিক শাসক রাত ১০টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত কারফিউ ঘোষণা করে

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : কুমিল্লায় পাকসেনাদের একটি শক্তিশালী দল বিজনা ব্রিজ পরিদর্শনে এলে মুক্তিবাহিনীর কামান গর্জে ওঠে। মুক্তিযোদ্ধাদের গুলির মুখে পাকসেনারা অবস্থান পরিত্যাগ করে কায়েম গ্রামের দিকে পলায়ন করে। এই অভিযানে পাকবাহিনীর ৩ জন সৈন্য নিহত ও ৭ জন আহত হয়।

হোমনা থানার সাঘুটিয়া লঞ্চঘাটে সুবেদার গিয়াসের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা পাকহানাদারদের একটি টহলদার লঞ্চকে এ্যামবুশ করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে একঘন্টা ব্যাপী প্রচন্ড সংঘর্ষ হয়। পরে পাকসেনারা লঞ্চ নিয়ে পলায়ন করে। এ সংঘর্ষে পাকবাহিনী বেশ ক্ষতির শিকার হয়।

ক্যাপ্টেন হুদার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদল ইছামতির তীরে পাকবাহিনীর উস্কা ঘাঁটির কাছে একটি খুঁটিতে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করে চারপার্শ্বে এন্টি পারসনাল মাইন পুঁতে নিকটবর্তী ধানক্ষেতে ওৎপাতে। পাকবাহিনীর কয়েকজন সৈন্য পাশ দিয়ে যাবার সময় পতাকাটি দেখতে পেয়ে তেলে-বেগুনে জ¦লে ওঠে এবং পতাকাটি নামানোর জন্য অগ্রসর হয়। এতে প্রচন্ড বিস্ফোরণ ঘটে এবং পাকসেনাদের সবাই নিহত হয়।পরে ক্যাপ্টেন হুদা পাকসেনাদের পরিত্যক্ত অস্ত্র উদ্ধার করে দলের সবাইকে নিয়ে নিরাপদে নিজ ঘাঁটিতে ফিরে আসেন।

৬নং সেক্টরে পাকিস্তান সেনাবাহিনী মুক্তিবাহিনীর সুবেদার হাফিজের কোম্পানীর প্রধানপাড়া, ডাঙ্গাপাড়া ও নুনিয়াপাড়া অবস্থানের ওপর আকস্মিক আক্রমণ চালায়। আক্রমণ শেষে পাকসেনারা চাওই নদীর তীরে তাদের মূল ঘাঁটিতে ফিরে যায়। পাকহানাদারদের এ আক্রমণে মুক্তিবাহিনীর বেশ ক্ষতি হয়।

সিনেটর জে. ডাবলিউ. ফুলব্রাইট মার্কিন সিনেটে বলেন, যতদিন পর্যন্ত পাকিস্তানের উভয় অংশের মধ্যে একটি সন্তোষজনক রাজনৈতিক সমঝোতা হচ্ছে এবং ভারতে অবস্থানরত শরণার্থীদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির উদ্যোগ গৃহীত না হবে ততোদিন পর্যন্ত পাকিস্তানে মার্কিন অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ রাখা উচিত।

বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্যার অ্যালেক ডগলাস হিউম লন্ডনে বলেন, পাকিস্তানের পূর্ব অংশের জনসাধারণ যে ধরনের রাজনৈতিক সমাধানের ব্যাপারে উদগ্রীব তা একমাত্র পাকিস্তান সরকারই করেতে পারেন।

তিনি বলেন, পাকিস্তানের সাহায্য পাঠানোর আগে পূর্ব পাকিস্তানে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কাঠামোর প্রতিষ্ঠা অবশ্যই প্রয়োজন।

সামরিক প্রশাসন দিনাজপুর জনসংযোগ বিভাগের মাধ্যমে ঘোষণা করে : যারা বাড়ি-ঘর ত্যাগ করেছে, তারা যদি আর একদিনের মধ্যে তাদের নিজ নিজ বাড়ীতে ফিরে না আসে তবে মালিকানা বাজেয়াপ্ত করা হবে।

দিনাজপুরে সামরিক শাসক পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত প্রত্যেহ রাত ১০টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত কারফিউ ঘোষণা করে। এই সময়ের মধ্যে কাউকে ঘরের বাইরে কিংবা রাস্তায় পাওয়া গেলে গুলি করার হুমকি দেয়া হয়।

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
(ওএস/এএস/জুলাই ২৮, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test