E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

১৭ জুলাই, ১৯৭১

রাজশাহীতে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে পাকবাহিনীর ২২ জন সৈন্য নিহত হয়

২০১৪ জুলাই ১৭ ০০:২০:০১
রাজশাহীতে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে পাকবাহিনীর ২২ জন সৈন্য নিহত হয়

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : শালদা নদীর রেলওয়ে স্টেশনের এক হাজার দক্ষিণে মনোরা রেলওয়ে ব্রিজ পর্যন্ত পাকবাহিনীর সৈন্যরা অগ্রসর হয়ে ব্রিজের চতুর্দিকে বাঙ্কার তৈরীর প্রত্তুতি নেয়। এ সময় ৪র্থ বেঙ্গলের ‘এ’ কোম্পানীর একটি প্লাটুন মর্টারসহ পাকসেনাদের ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে পাকসেনারা সম্পূর্ণভাবে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় এবং অনেক পাকসৈন্য হতাহত হয়।
মুক্তিযোদ্ধাদের গুলির মুখে পাকসেনারা উপায়ান্তর না দেখে তাদের শালদা নদী ঘাঁটিতে ফিরে যায়।

কুমিল্লা-চাঁদপুর রাস্তার আশীকাটি গ্রামের নিকট মুক্তিবাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা পাকবাহিনীর একটি কনভয়ের ওপর গ্রেনেড আক্রমণ চালায়। এই আকমণে ৮ জন পাকসেনা নিহত ও অনেক আহত হয়।

নিয়মিত ও গণবাহিনীর একটি সম্মিলিত কোম্পানী হাজীগঞ্জের কাছে পাকবাহিনীর নরসিংপুর ঘাঁটি আক্রমণ করে। এই আক্রমণে পাকহানাদার বাহিনীর ১৩ জন সৈন্য নিহত ও অনেক সৈন্য আহত হয়। আক্রমণ শেষে মুক্তিযোদ্ধা দল নিরাপদে নিজ অবস্থানে ফিরে আসে।

লেঃ হুমায়ুন কবিরের এক প্লাটুন যোদ্ধা একদল পাকসেনাকে লাটুমুড়া থেকে চন্দ্রপুর যাওয়ার পথে এ্যামবুশ করে। এই এ্যামবুশে পাকবাহিনীর ৪ জন নিহত ও একজন আহত হয় এবং বাকী সৈন্য প্রাণ বাঁচাতে লাটুমুড়ার দিকে পালিয়ে যায়।

কুমিল্লা-দাউদকান্দি সড়কে পুটিয়া গ্রামের সামনে পাকবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন একটি ওয়াপদা ট্রাক হাবিলদার গিয়াসের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের পুঁতে রাখা এন্টি-ট্যাংক মাইনের ওপর বিস্ফোরিত হয়। ফলে ট্রাকটি ধ্বংস হয় এবং ট্রাকে অবস্থানরত একজন পাকসৈন্য, দু‘জন রাজাকার ও ড্রাইভারসহ সবাই নিহত হয়। পরে পাকসেনাদের আর একটি জীপ ও ট্রাক এন্টি-ট্যাংক মাইনের বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়। এতে ৫ জন পাকসৈন্য, ১ জন পাক মেজর ও ৬ জন রাজাকার নিহত হয়। এই সংবাদ পেয়ে কুমিল্লা থেকে পাকসেনারা ৩০টি গাড়ীতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। সামনের গাড়ী থেকে পাকসৈন্যরা নেমে আস্তে আস্তে ঘটনাস্থলের দিকে অগ্রসর হলে এন্টিপার্সোনাল মাইন বিস্ফোরণে ৬/৭ জন সৈন্য নিহত ও অনেক আহত হয়।

রামগঞ্জের উত্তরে নরিমপুর হতে এক কোম্পানী পাক রেঞ্জার্স ও রাজাকার দল মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের দিকে অগ্রসর হলে হাবিলদার জাকির হোসেনের নেতৃত্বে এক প্লাটুন যোদ্ধা তাদের ওপর আক্রমণ চালায়। কিছুক্ষন যুদ্ধের পর পাকসেনারা দু‘জন রাজাকারের লাশ ফেলে পালিয়ে যায়।

রাজশাহী জেলার শাহপাড়ে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর একটি টহলদার দলের ওপর আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে পাকবাহিনীর ২২ জন সৈন্য নিহত হয়।

গফরগাঁও থানার দেইল পাড় গ্রামে মুক্তিবাহিনী ও পাকসেনাদের মধ্যে প্রচন্ড সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে পাকবাহিনীর ১৭ জন নিহত ও ২৭ জন আহত হয়।

পাকিস্তানের ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান লেঃ জেনারেল এ.এম.কে. নিয়াজী টাঙ্গাইল শেরপুর ও হালুয়াঘাটের সেনাবাহিনীর ঘাঁটিসমূহ পরিদর্শন করে। শেরপুর ও হালুয়াঘাটে নিয়াজী রাজাকারের সশস্ত্র ট্রেনিং দেখেন এবং তাদেরকে সেনাবাহিনীর পাশে থেকে কাজ করার নির্দেশ দেন।

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক ও সামরিক সাহায্য বন্ধের সুপারিশ গৃহীত হয়।

তথসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।

(ওএস/অ/জুলাই ১৭, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test