E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

৫ মে, ১৯৭১

ননিয়া নামক স্থানে পাক সেনাদের পৈশাচিক নির্যাতনে ২৬ জন মানুষ নিহত হয়

২০১৯ মে ০৫ ০০:০৮:১১
ননিয়া নামক স্থানে পাক সেনাদের পৈশাচিক নির্যাতনে ২৬ জন মানুষ নিহত হয়

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : মেজর জলিল বরিশাল পুনরায় মুক্ত করার উদ্দেশ্যে এ.পি নূরুল ইসলাম মঞ্জুর ও লে. নাসেরকে সাথে নিয়ে দুটি লঞ্চে ৪০ জন যোদ্ধা ও প্রচুর অস্ত্রশস্ত্রসহ ভারতের শমসেরনগর থেকে বাংলাদেশের দিকে যাত্রা করেন। কপোতাক্ষ নদীর তীরে গাবুরা নামক চরের কাছে লঞ্চ দুটি পৌঁছলে পাকিস্তানি সৈন্যরা গানবোট দিয়ে আক্রমণ করে। এই আকস্মিক আক্রমণে এম.পি মহিউদ্দিন ও এ্যাডভোকেট সর্দার জালালসহ ২৬ জন যোদ্ধা পাকসেনাদের হাতে বন্দি হন এবং অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদসহ লঞ্চ দুটি ধ্বংস হয়।

চট্টগ্রামের রামগড় সীমান্তে মুক্তিবাহিনীর সাথে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর তীব্র সংঘর্ষ ঘটে।

মুক্তিযোদ্ধাদের সমর্থক পিরোজপুরের এসপিও আবদুর রাজ্জাক, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মিজনিুর রহমান ও এসডিপিও ফয়জুর রহমানকে দালালদের সহযোগিতায় পাকসেনারা গ্রেফতার করে।

সিলেটের ননিয়া নামক এলাকায় পাক বর্বরদের পৈশাচিক নির্যাতনে ২৬ জন নিরীহ মানুষ নিহত হয়।

জাতিসংঘের উদ্বাস্তু সংক্রান্ত হাই কমিশনার পিন্স সদরুদ্দিন আগা খান জেনেভায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ভারতে পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা উদ্বাস্তুদের সাহায্য ও সহযোগিতার জন্য ভারত সরকার জাতিসংঘের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক সদস্যার কারণে দেশত্যাগীদের নিয়ে ভারতে যে সমস্যার উদ্ভব হয়েছে তা মানবিক। ভারতের রাজ্যগুলোতে অসংখ্য উদ্বাস্তু মানবেতর জীবনযাপন করছে। আমরা এর স্থায়ী সমাধান প্রত্যাশী। তিনি আরো বলেন, আমরা চাই, পূর্ব পাকিস্তানে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হোক-যাতে নতুন করে শরণার্থী ভারতে না আসে এবং দেশত্যাগীরা স্বদেশে ফিরে যায়।

বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হীথ কমন্সসভায় বলেন, বৃটিশ সরকারের ধারণা ভারতে পূর্ব পাকিস্তানের আশ্রয় পার্থীদের সমস্যা ক্রমে দুরূহ হয়ে পড়ছে। আশ্রয়-পার্থীদের সংখ্যা প্রতিদিন ২০ হাজার করে বাড়ছে। আমি মনে করি, ঢাকার বর্তমান পরিস্থিতি দেখার জন্য সেখানে একটি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দল পাঠানো প্রয়োজন।

‘নিউইয়র্ক টাইমস’ পত্রিকায় এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রদূত চেস্টার বোলস্ বলেন, কার বিরুদ্ধে এবং কি কারণে আমাদের দেয়া অস্ত্র ব্যবহার করা হবে তা না জেনে বন্ধুভাবাপন্ন সরকারগুলোকে অস্ত্রশস্ত্র দেয়া নির্বুদ্ধিতা। আমার মনে হয়, অবিলম্বে দুটি ব্যবস্থা নেয়া দরকার, এক. মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম অপব্যবহারের জন্য আমাদের উচিত পাকিস্তান সরকারকে কড়া প্রতিবাদ জানানো এবং সাহায্যদান অবিলম্বে বন্ধ করে দেয়া। দুই. আমাদের উচিত নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডেকে এশিয়ার শান্তি ক্ষুন্ন হবার বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া। এটা খুবই স্পষ্ট এশিয়ার শান্তি ক্ষুন্ন হবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের লড়াই সেখানকার ‘ঘরোয়া বিষয়’ নয়। একটি সশস্ত্র সংখ্যালঘু কর্তৃক বিশাল সংখ্যাগুরুকে দাবিয়ে রাখার চেষ্টায় যে ‘আভ্যন্তরীণ সমস্যা’ সৃষ্টি হয়েছে তা মীমাংসার জন্য জপাতিসংঘের একটি বিশেষ ধরনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

ঢাকার ধামরাই থানার স্বাধীনতা-বিরোধীরা মোজাম্মেল হককে সভাপতি এবং শমসের আলীকে সেক্রেটারি করে ১০৮ সদস্য বিশিষ্ট শান্তি কমিটি গঠন করে।

প্যান মালয়েশিয়া ইসলামিক পার্টি জাতিসয়ঘ সেক্রেটারি উ থান্টের কাছে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে ভারতীয হস্তক্ষেপের নিন্দা করে স্মারকলিপি পেশ করে।

তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

(ওএস/এএস/পিএস/অ/মে ০৫, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test