E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

০৪ এপ্রিল, ১৯৭১

বন্দরে ব্যাপক গণহত্যা চালায় পাকিস্তানী সৈন্যরা

২০২০ এপ্রিল ০৪ ১৩:১৪:৪১
বন্দরে ব্যাপক গণহত্যা চালায় পাকিস্তানী সৈন্যরা

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জের বন্দরে পাকিস্তানী সৈন্য ও তাদের এ দেশীয় দোসররা শতাধিক মুক্তিপাগল বাঙালিকে হত্যা করে। বন্দরের সিরাজউদ্দৌলা ক্লাব মাঠে ব্রাশ ফায়ার করার পর নৃশংস কায়দায় তাদেরকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়।

ঢাকায় পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টি প্রধান নূরুল আমিনের নেতৃত্বে ১২ সদস্য একটি প্রতিনিধি দল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় প্রশাসক জল্লাদ জেনারেল টিক্কা খানের সাথে সাক্ষাৎ করে। প্রতিনিধি দলের সদস্য মৌলবী ফরিদ আহমদ, অধ্যাপক গোলাম আজম, খাজা খয়রুদ্দিন, শফিকুল ইসলাম, মওলানা নুরুজ্জামান প্রমুখ জেনারেল টিক্কাকে পূর্ণ সমর্থন জানায় ও সহযোগিতার আশ্বাস দেয়। তারা সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নাগরিক কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেয়।

পাকিস্তান বাহিনী অপ্রত্যাশিতভাবে ফেনী শহরের উপর বিমান আক্রমণ চালায়। এই বিমান হামলায় শহরের বহু বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয় ও অনেক নিরীহ মানুষ প্রাণ হারায়।

ঠাকুরগাঁও ৯ নম্বর উইং-এর সুবেদার মেজর কাজিমউদ্দিন, ক্যাপ্টেন নজরুল, তৃতীয় বেঙ্গলের ক্যাপ্টেন আশরাফ, মেজর মকসুল হুসেন চৌধুরী, এএমসি’র অবসরপ্রাপ্ত মেজর টি হোসেন, সুবেদার মেজর ওসমান গণি প্রমুখের উপস্থিতিতে ভাতগাঁও সেতুর নিকট এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুবেদার এ মজিদ একটি কোম্পানি নিয়ে নীলফামারিতে, ক্যাপ্টেন আশরাফ তৃতীয় বেঙ্গলের একটি কোম্পানি, সুবেদার হাফিজ ইপিআর বাহিনীর দুটি কোম্পানি এবং হাবিলদার নাজিম দুটি এন্টি-ট্যাংক গান নিয়ে ভুষিরবদর নামক স্থানে ডিফেন্স নেয়। নায়েব সুবেদার কায়সার ও হাবিলদার জায়দুল হোসেনের নেতৃত্বে একটি কোম্পানি বদরগঞ্জ নামক স্থনে ডিফেন্স নেয়। ক্যাপ্টেন আশরাফ সার্বিকভাবে ফিল্ড কমান্ডার মনোনীত হন।

বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইপিআর, আনসার, মুজাহিদ নিয়ে একটি যৌথ কমান্ড গঠিত হয়। পাকসেনাদের একটি রেজিমেন্ট বাঙালি দালালেদের সহায়তায় হারাগাছ নামক এলাকা হয়ে তিস্তা নদী অতিক্রম করে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে এবং হত্যা লুন্ঠন চালিয়ে ত্রাসের সৃষ্টি করে।

রাতে মুক্তিযোদ্ধাদের ‘এ’ কোম্পানি কালুরঘাটে,‘বি’ কোম্পানি রাজারহাটে, ‘ডি’ কোম্পানি সাপটিবাড়ি বাজারে সুবেদার আরব আলীর কমান্ডে এবং ‘সি’ কোম্পানি বোরহানউদ্দিনের কমান্ডে কালিগঞ্জ থানা এলাকাতে ডিফেন্স নেয়। সার্বিক কমান্ডের দায়িত্বে ছিলেন ক্যাপ্টেন নওয়াজেশউদ্দিন।

মেজর জলিল খুলনা বেতার কেন্দ্র দখলের লক্ষ্যে পিরোজপুর হয়ে বাগেরহাট অভিমুখে রওনা হন। সিলেট শহরের টিবি হাসপাতালে অবস্থানরত পাখঘাঁটির ওপর মুক্তিযোদ্ধারা এক বড় রকমের আক্রমণ চালায়। সংঘর্ষে ব্যাপক ক্ষতি স্বীকার করে পাকবাহিনী ঘাঁটি ছেড়ে শালুটিকর বিমানবন্দরের দিকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল এমএজি ওসমানী মুক্তিযোদ্ধাদের তেলিয়াপাড়া হেডকোয়ার্টারে অনুষ্ঠিত বাঙালি সামরিক অফিসারদের সভায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে মনোনীত হন। ক্যাপ্টেন মতিয়ুর রহমানের নেতৃত্বে এক কোম্পানি নিয়মিত সৈনিকসহ ইপিআর সৈনিকেরা নরসিংদী এলাকায়, ক্যাপ্টেন নাসিমের নেতৃত্বে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল-এর আলফা কোম্পানি মুজাহিদ সহযোগে আশুগঞ্জে, লেফটেন্যান্ট মোশেদের নেতৃত্বে এক প্লাটুন নিয়মিত সৈনিকসহ ইপিআর সৈন্যরা লালপুরে, ইপিআর ও মুজাহিদদের মিশ্রণে এক কোম্পানি একজন জেসিও (জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার) নিয়ন্ত্রণে আজবপুরে, ক্যাপ্টেন আইনুদ্দিনের নেতৃত্বে চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল-এর ডেল্টা কোম্পানির সাথে ইপিআর সৈন্যরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবস্থান নেয়।

ইপিআর ক্যাপ্টেন মতিনের কমান্ডে একটি কোম্পানি সরাইলে, ক্যাপ্টেন আজিমের নেতৃত্বে দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল- এর চার্লি কোম্পানি শেরপুর-শাদীপুরে, দ্বিতীয ইস্ট বেঙ্গল-এর ডেল্টা কোম্পানি মেজর মঈন-এর কমান্ডে তেলিয়াপাড়ায় অবস্থান নেয়।

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

(ওএস/এএস/এপ্রিল ০৪, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

১৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test