E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

৬ এপ্রিল, ১৯৭১

পাক বর্বররা সিলেটের কলাপাড়ায় এক গণ-নিধনযজ্ঞ পরিচালনা করে

২০২০ এপ্রিল ০৬ ১১:৩৭:৪৪
পাক বর্বররা সিলেটের কলাপাড়ায় এক গণ-নিধনযজ্ঞ পরিচালনা করে

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রামের দোহাজারীতে মুক্তিবাহিনীর সাথে পাকসেনাদের প্রচন্ড সংঘর্ষ হয়। সংঘের্ষ মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে টিকে থাকতে না পেরে পাকসেনারা পিছু হটে যায়।

সিলেটের করিমগঞ্জ সীমান্তে মুক্তিবাহিনী ও পাকসেনাদের মধ্যে প্রচন্ড লড়াই শেষে পাকসেনারা পশ্চাদপসরণ করে বলে ঢাকায় সামরিক কর্তৃপক্ষ পরোক্ষভাবে স্বীকার করেন।

সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট পদগর্নি রক্তক্ষয় বন্ধের আহ্বান জানিয়ে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টকে চিঠি দিলে জবাবে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া বলেন, ‘পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কাউকে হস্তক্ষেপ করতে দেওয়া হবে না।

পাকসেনারা অতর্কিতে চাঁদপুর, পুরানবাজারে বিমান থেকে বোমাবর্ষণ করে। এটাই ছিল চাঁদপুরে পাকবাহিনীর প্রথম বিমান আক্রমণ। এ হামলায় কোন প্রাণহানি ঘটেনি।

গোলাম আজম, হামিদুল হক চৌধুরীসহ একটি দল পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক আইন প্রশাসক ‘বেলুচিস্তানের কসাই’ নামে টিক্কা খানের সাথে দেখা করেন।

পাক বর্বররা সিলেট শহরতলীর কলাপাড়ায় এক গণ-নিধনযজ্ঞ পরিচালনা করে। ফলে ২৫ জন নিরীহ বাঙালি মৃত্যুবরণ করেন।

বেঙ্গল রেজিমেন্ট সদস্য ও ভাঙ্গার লোকজনসহ সুবেদার এ.কে.এম.ফরিদউদ্দিন আহমদ পাঁচদোনার শীলমন্দি নামক গ্রামে প্রতিরোধ গড়ে তোলন। অন্য দিকে পাকসেনারা ডেমরায় একত্র হয়ে মুক্তিবাহিনীর উপর আক্রমণের জন্য প্র্রস্তুতি নেয়।

পাসেনারা সৈয়দপুর সোনিবাস থেকে দিনাজপুরের দিকে অগ্রসর হলে একসময় মুক্তিযোদ্ধাদের রাইফেলের আয়ত্বের মধ্যে চলে আসে এবং তুমুল গুলি বিনিময় হয়। দুই-তিন ঘন্টা স্থায়ী এ যুদ্ধে পাকসেনারা ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি স্বীকার করে সেনানিবাসে ফিরে যায়।

সন্ধ্যা ৬-৭টার দিকে মুক্তিযোদ্ধারা রাজশাহী শহর আক্রমণ করে। পাকবাহিনীর প্রবল গোলাবর্ষণ ও স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের গুলিবর্ষণের মুখে অদম্য সাহসী মুক্তিযোদ্ধারা সম্মুখে অগ্রসর হয় এবং শত্রুর ব্যুহ ভেদ করে শহরে ঢুকে। প্রায় চার ঘন্টা লড়াইয়ের পর রাজশাহী শত্রু মুক্ত হয় এবং মুক্তিযোদ্ধারা রাজশাহীর চতুর্দিকে প্রতিরক্ষা ব্যুহ গড়ে তোলে। এ যুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ‘রাজশাহী যুদ্ধ’ নামে খ্যাত।

গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ শিরোনাম-‘আলোচনা ভেঙ্গে যায়নি। ইয়াহিয়া চাননি মুজিব ক্ষমতায় আসুক। তাই তিনি বন্দুক নিয়ে নামলেন।’

আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের সার-সংক্ষেপ:
বাংলাদেশ পূর্ব রণাঙ্গন: পূর্ব রণাঙ্গনে মুক্তিফৌজ ৪৮০ কি.মি. দীর্ঘ ঢাকা-শ্রীহট্ট রেলপথটি নানা জায়গায় বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে, ফলে শ্রীহট্ট শহরে অবরুদ্ধ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে ঢাকা থেকে অস্ত্রশস্ত্র ও রসদ পাঠানো অসম্ভব করে তুলেছে।

ময়মনসিংহ মুক্তিফৌজের হাতে। সংলগ্ন নতুন জেলা টাঙ্গাইলের অবস্থাও তাই। মুক্তিফৌজ কুমিল্লা শহরও দখল করছে। পাকফৌজ শহর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে।
বাংলাদেশ-পশ্চিম রণাঙ্গন: পশ্চিম রণাঙ্গনের কুষ্টিয়ায় প্রচন্ড লড়াই চলে। যশোরের চাচড়ার মোড় পুনর্দখলের জন্য জোর লড়াই শুরু হতে চলেছে। খুলনায়ও উভয় পক্ষে মরণপণ সংগ্রাম চলছে।

বাংলাদেশ-উত্তর রণাঙ্গন: উত্তর রণাঙ্গনে মুক্তিফৌজ একটি সাফল্য অর্জন করেছে-তারা হানাদার বাহিনীরহাত থেকে রংপুর শহরটি ছিনিয়ে নিয়েছে, তিস্তা সেতু উড়িয়ে দিয়েছে, লালমনির হাট বিমান ক্ষেত্র অকেজো করে দিয়েছে। সামরিক দিক থেকে এ সাফল্যের তুলনা নেই। রাজশাহীতেও জোর লড়াই চলছে। বগুড়া ও পাবনা জেলা হানাদার মুক্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ-দক্ষিণ রণাঙ্গন: চট্টগ্রামে আবার প্রচন্ড লড়াই শুরু হয়েছে মুক্তিফৌজ ও হানাদার ফৌজের মধ্যে। পাক বিমান বোমা ফেলেছে চট্টগ্রাম শহরে। নোয়াখালি জেলার নানা অঞ্চলেও উভয় পক্ষ মুখোমুখি। বরিশাল জেলার লড়াই হঠাৎ প্রচন্ড আকার ধারণ করেছে।

তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
(ওএস/এএস/এপ্রিল ০৬, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test