E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

১৩ ডিসেম্বর নীলফামারী হানাদারমুক্ত দিবস 

‘জয় বাংলা’ শ্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে তৎকালীন মহকুমা শহর

২০২২ ডিসেম্বর ১২ ১৭:৫২:৫০
‘জয় বাংলা’ শ্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে তৎকালীন মহকুমা শহর

ওয়াজেদুর রহমান কনক, নীলফামারী : দীর্ঘ ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে ৭১ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ হাজার হাজার বাঙালির আত্মত্যাগের বিনিময়ে নীলফামারী শহর ১৯৭১ সালের এইদিনে পাক-হানাদার মুক্ত হয়েছিল। আজও তার বেদনা বহুল স্মৃতি বহন করে নীলফামারী সরকারি কলেজের বধ্যভূমি।

জানা যায়, কলেজের পুরনো একটি কুয়ার মধ্যে অগণিত মানুষের লাশ সেখানে ফেলে দিয়েছিল স্থানীয় পাকবাহিনীর দোসর আলবদর, আল শামস ও রাজাকারের দল। পরবর্তীতে দেশ স্বাধীনের পর কুয়াটি সংরক্ষণ করে সেখানে তৈরি করা হয়েছে স্মৃতিস্তম্ভ।

জেলার নাম জানা ১৮ জন মুক্তিযোদ্ধা জীবন দিয়েছিলেন ওই মুক্তিসংগ্রামে। তারা হলেন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা লোকমান হোসেন নোকো, শহীদ ক্যাপ্টেন বাসার (সদর), শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী হোসেন (সদর), শহীদ আহমেদুল হক প্রধান (ডোমার), শহীদ মোজাম্মেল হক (ডোমার), শহীদ জাহেরুল ইসলাম চিলাহাটি (ডোমার), শহীদ আঞ্জারুল হক ধীরাজ চিকন মাটি (ডোমার), শহীদ মিজানুর রহমান চিকন মাটি (ডোমার), শহীদ বাবু সুভাষ সিংহ (ডিমলা), শহীদ সামসুল কিবরিয়া খগাখড়িবাড়ী (ডিমলা), শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ রায় পূর্ব বালাগ্রাম (জলঢাকা), শহীদ আমজাদ মিস্ত্রী চাঁদখানা (কিশোরগঞ্জ), শহীদ আব্দুর রশিদ মাগুড়া (কিশোরগঞ্জ), শহীদ আব্দুল বারেক মাগুড়া (কিশোরগঞ্জ), শহীদ শাহ্বুদ্দিন সিট রাজিব (কিশোরগঞ্জ), শহীদ আব্দুল মজিদ কাশিরাম বেলপুকুর (সৈয়দপুর), শহীদ জয়নাল আবেদীন বোতলাগাড়ী (সৈয়দপুর), শহীদ মির্জা হাবিবুর রহমান বেগ ঘুঘুমারী (জলঢাকা)। বাকি ৫৩ জন শহীদের নাম এখনো জানা যায়নি।

এদিন, মুক্তিযোদ্ধারা প্রথম জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে একটি বাঁশের খুঁটিতে উত্তোলন করেন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের লাল সবুজের জাতীয় পতাকা। বর্তমানে সেখানে স্মৃতি অম্লান চত্বর তৈরি করা হয়েছে।

জেলার ছয় থানা নিয়ে নীলফামারী ছিল একটি মহকুমা শহর। সেদিন প্রাণপনে মুক্তিযোদ্বারা নিজের জীবনকে বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তি সংগ্রামে।

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের আহ্বানে সাড়া দিয়ে নীলফামারীর অগণিত কৃষক, শ্রমিক ছাত্র-জনতা মুক্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগ্রাম শুরু করে। ভারতে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর ৬নং সেক্টরের অধীন মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের বিভিন্ন ক্যাম্পে গেরিলা আক্রমণের মাধ্যমে পরাস্ত করতে শুরু করে। নীলফামারী ৬নং সেক্টরের কমান্ডার ছিলেন খাদেমুল বাশার। তার নেতৃত্বে জেলা শহর ১২ ডিসেম্বর রাতে শত্রু মুক্ত হতে থাকে। তিনি আরও বলেন, ৯ মাস হানাদাররা নিরস্ত্র বাঙালি নিধনে মেতে উঠেছিল। যুদ্ধক্ষেত্রে অনেক মুক্তিযোদ্ধা আহত হন ও অনেকেই শহীদ হন।

নীলফামারী শহর হানাদার মুক্ত হওয়ায় বিজয়ের উল্লাসে মেতে উঠে মুক্তিকামী সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ।দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে নীলফামারী জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনার আয়োজন করেছে। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর।

(ওকে/এসপি/ডিসেম্বর ১২, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test