E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

২৭ মার্চ, ১৯৭১

জিঞ্জিরায় মুক্তিযোদ্ধারা সমবেত হতে থাকেন

২০১৬ মার্চ ২৭ ০৬:৪০:৫১
জিঞ্জিরায় মুক্তিযোদ্ধারা সমবেত হতে থাকেন

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : সকালে সাময়িকভাবে কারফিউ তুলে নিয়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অবস্থানরত সকল বিদেশী সাংবাদিকদের কড়া সেনাপ্রহরায় সরাসরি বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। বিশেষ বিমানে তাঁদের ঢাকা ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। সেনাবাহিনীর দৃষ্টি এড়িয়ে দু’জন সাংবাদিক অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে ঢাকায় থেকে গিয়েছিলেন। তাঁরা হলেন ডেইলি টেলিগ্রাফের সাইমন ড্রিং এবং এ.্ফ.পির ফটোগ্রাফার মিশেল।

গোটা ঢাকা শহর জুড়ে পাকহানাদার বাহিনীর নির্মমতার শিকার হাজার হাজার নিরীহ বাঙালির প্রাণহীন দেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়।

বুড়িগঙ্গার ওপারে জিঞ্জিরায় মুক্তিযোদ্ধারা সমবেত হতে থাকেন।

কারফিউ প্রত্যাহারের সাথে সাথে ঢাকা শহর ছেড়ে দলে দলে নাগরিকরা অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে থাকে।

চট্টগ্রাম শহরের চারপাশসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারা পাকহানাদার বাহিনীরবিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন এবং হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রচন্ড লড়াই শুরু করেন।

দেওয়ানহাট থেকে পাকসেনাদের চারটি গাড়ি হালিশহরের দিকে এগোতে থাকলে ল্যান্সনায়েক আবদুর রাজ্জাক অতর্কিতে পাকসেনাদের ওপর আক্রমণ করে বেশ কয়েকজনকে হত্যা করেন এবং গাড়িটি ধ্বংস করে দেন।ইপিআর সৈনিকরা এখান থেকে বেশ কিছু অস্ত্র এবং গোলাবারুদ উদ্ধার করেন।

সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র হতে মেজর জিয়াউর রহমান ইংরেজিতে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। মেজর জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আমাদের মহান জাতীয় নেতা এবং বাংলাদেশের সর্বাধিনায়ক শেখ মজিবর রহমান-এর পক্ষে আমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি। আমি আরো ঘোষণা করছি যে,শেখ মুজিবর রহমান আমাদের বাংলাদেশের সাত কোটি জনগনের নির্বচিত প্রতিনিধিদের একমাত্র নেতা। আমি তাই আমাদের মহান নেতা শেখ মুজিবর রহমানের পক্ষ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশ বিশেষভাবে পরাশক্তিসমূহের কাছে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী পরিচালিত গণহত্যা বন্ধ করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিতে। সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠি দ্বারা আইনসম্মত নির্ধারিত প্রতিনিধিদের বিচ্ছিন্নতাবাদী আখ্যা দেয়া একটি নির্মম কৌতুক এবং এমন এক স্ববিরোধিতা যা কারো দৃষ্টি এড়াতে পারে না। আমাদের নতুন রাষ্ট্রের অনুসৃত নীতিমালা হচ্ছে প্রথমত নিরক্ষেতা। দ্বিতীয়ত শান্তি এবং তৃতীয়ত সবার প্রতি বন্ধুত্ব,কারো প্রতি বিদ্বেষ নয়। আল্লাহ্ আমাদের সহায় হোন। জয় বাংলা ।

ভারতীয় লোকসভায় ভাষণদানকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশ প্রতিরোধ যুদ্ধ সর্ম্পকে বলেন,পূর্ববঙ্গের সমগ্র জনগন এক-বাক্যে গণতান্ত্রিক কর্মপন্থা গ্রহণ করেছে। একে আমরা অভিনন্দন জানাই। ইন্দিরা গান্ধী বলেন,ভারত সরকার পূর্ববঙ্গের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে সজাগ রয়েছে এবং যথাসময়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

তথ্যসূত্র: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
(ওএস/অ/মার্চ ২৭, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test