E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

১৪ অক্টোবর, ১৯৭১

মুক্তিবাহিনী পাকবাহিনীর পরশুরাম ঘাঁটি আক্রমণ করে

২০১৬ অক্টোবর ১৪ ১০:০৬:০১
মুক্তিবাহিনী পাকবাহিনীর পরশুরাম ঘাঁটি আক্রমণ করে

উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : কমান্ডার নওয়াজেশ উদ্দিনের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদল ভ’রঙ্গমারী ও জয়মনির হাটে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে ব্যাপক সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

পরিকল্পনা অনুসারে সুবেদার আবদুল ওয়াহাব তাঁর বাহিনী নিয়ে মিত্রবাহিনীর আটিলারি সমর্থনে পাকঘাঁটির সম্মুখভাগ এবং প্রয় ২০০ যোদ্ধা নিয়ে সুবেদার মাযহারুল হক জয়মনির হাট পাকঘাঁটি আক্রমণ করে। যুদ্ধ শুরু হলে পাকিস্তানিরা চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। ভ’রঙ্গমারী ও জয়মনিরহাট মুক্তিবাহিনীর নিয়ন্ত্রনে চলে আসে। মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানি আর্টিলারির একজন ক্যাপ্টেন ও ২৫তম পাঞ্জাবের ৮ জন সৈন্য বন্দি করে এবং পাকসেনাদের কাছ থেকে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ দখল করে।

৮নং সেক্টরের বনগাঁও সাব-সেক্টর অন্তর্গত সাদিপুর নামক স্থানে মুক্তিবাহিনী পাকবাহিনীর এক প্লাটুন সৈন্যের ওপর আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণে পাকবাহিনীর ৩ জন সৈন্য নিহত হয়।

ফেনী জেলায় মুক্তিবাহিনীর এক কোম্পানী যোদ্ধা মর্টারসহ পাকবাহিনীর পরশুরাম ঘাঁটি আক্রমণ করে। ফেনী থেকে পাকসেনারা কামানের সাহায্যে মুক্তিবাহিনীর অবস্থানের ওপর প্রচন্ড আক্রমণ চালাতে থাকে। মুক্তিবাহিনীর গোলন্দাজ বাহিনীও পাকসেনাদের ফেনী অবস্থানের ওপর পাল্টা আক্রমণ চালায়। দু‘ঘন্টা স্থায়ী এই যুদ্ধে পাকবাহিনীর ১০ জন সৈন্য নিহত ও ১৬ জন আহত হয়।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বেলগাঁও-এ এক জনসভায় বলেন, ভারত পাকিস্থানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করবে না। তবে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ভারত প্রস্তুত। তিনি বলেন, বাংলাদেশের উদ্বাস্তুরা অবশ্যই নিরাপদে ও মর্যাদার সাথে স্বদেশ ফিরে যাবেন। বাংলাদেশ সঙ্কট নিরসনকল্পে যে কোনো রাজনৈতিক সমাধান আওয়ামী লীগের কাছে অবশ্যই গ্রহণযোগ্য হতে হবে।

পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্টোর মন্তবের প্রেক্ষিতে প্রস্তাবিত শাসনতন্ত্রের অন্যতম প্রণেতা ও প্রেসিডেন্টের আইন বিষয়ক উপদেষ্টা বিচারপতি এ.আর. কর্নেলিয়াস পদত্যাগ পত্র পেশ করেন।

পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর অস্থায়ী আমীর মিয়া তোফায়েল প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, পাকিস্তানের দুর্যোগে এবং যে কোনো ধরনের হামলা মোকাবেলায় জামায়াত কর্মীরা সেনাবাহিনীর পাশে থেকে কাজ করবে।

শান্তি কমিটির দালালদের সহায়তায় পাকহানাদাররা পাবনার নাজিরপুর গ্রাম আক্রমণ করে। ২০০/২৫০ জনের একটি হানাদার দল পুরো গ্রাম ঘেরাও করে গ্রামের সবাইকে একত্রিত করে যুবক ও মুক্তিযোদ্ধা হতে পারে এ রকমের সবাইকে একটি খালের পারে নিয়ে গিয়ে গলা কেটে ও বেয়নেট চার্জ করে খালের মধ্যে ফেলে দেয়। হানাদারদের এই নির্মম অত্যাচারের ৫৭ জন নিরীহ মানুষ শহীদ হন। হত্যাযজ্ঞের পর হানাদাররা নাজিরপুর গ্রামের প্রায় ৫শ’ বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়।

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।

(ওএস/এএস/অক্টোবর ১৪, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test