E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বরিশালে বসে শ্রম কেনাবেচার হাট!

২০২২ জানুয়ারি ২৩ ১৭:০১:২৩
বরিশালে বসে শ্রম কেনাবেচার হাট!

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : দেশে একদিকে চলছে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক অন্যদিকে কুয়াশাচ্ছন্ন ভোর। খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া সকালে মানুষের দেখা পাওয়া যায়না। গত কয়েকদিন থেকে বরিশালে যেমন কুয়াশা তেমন হাড় কাঁপানো শীত।

এমন শীতে চাহিদা কমছে কৃষি শ্রমিকের। ফলে কুয়াশা আর শীতে মন্দা যাচ্ছে শ্রমিক কেনা বেচার হাট। রবিবার ভোর থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত এ অবস্থা দেখা গেছে, নগরীর সাগরদী পোলের নিচে বসা শ্রম কেনাবেচার হাটে। তীব্র শীতে সূর্যের দেখা না পেলেও শীতে কাঁপতে কাঁপতে আয়ের সন্ধ্যানে রাস্তার পাশে বসে থাকতে দেখা গেছে একদল শ্রমজীবী মানুষকে। শুধু সাগরদী পোলের নিচেই নয়; এভাবেই শ্রম কেনাবেচার স্থান নগরীর রূপাতলী সড়ক, মরকখোলার পুল, চকের পোল, কাশিপুর বাজার, কালিজিরা বাজার, টরকী বন্দরসহ বিভিন্নস্থানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন ভোরে শ্রম বিক্রির শ্রমিকরা হাতে কাস্তে-কোদাল, বেলচা, বাঁশের ঝুঁড়ি, দড়ি, পানি রাখার ড্রাম, হাতুরীসহ অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে বসে থাকেন শ্রমবিক্রির জন্য। যাদের শ্রমিকের প্রয়োজন হয়, তারা এসবস্থানে এসে তাদের চাহিদা মোতাবেক দাম কষে নিয়ে যান শ্রমিকদের।

নগরীর পলাশপুর এলাকার দিনমজুর শাহিন হাওলাদার বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে আমি নিয়মিতভাবে চকের পোল এলাকার শ্রমিক হাটে আসি। যখন যে কাজ পাই, সেটাই করি। তিনি আরও বলেন, একদিন কাজ না করলে ছেলে-মেয়েরা না খেয়ে থাকে। বড় মেয়ে কলেজে পড়াশুনা করে, আর ছোট মেয়ে এলাকার সরকারী একটি স্কুলে সপ্তম শ্রেনীতে অধ্যায়নরত। দুই মেয়ের পড়াশুনার জন্য প্রতিমাসে তাদের পিছনে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা ব্যয় হয়। এরপর পরিবারের সদস্যদের খাবার খরচ। তাই অসুস্থ্য থাকলেও কাজ না করে থাকা যাবেনা।

কালিজিরা ব্রীজের নিচে শ্রমিক কেনাবেচার হাটে আসা আলী হোসেন বলেন, সংসারে আমার এক মেয়ে আর স্ত্রী ছাড়া কেউ নেই। তাদের মুখে আহার তুলে দেওয়ার জন্য দিনমজুরী করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। একদিন কাজ না হলে বাড়ির সবাইকে না খেয়ে থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, শীত মৌসুমে কৃষি জমিসহ অন্যান্য জমিতে কাজের জন্য বেশ চাহিদা থাকে। ফলে অন্যকোন কাজ না পেয়ে ঠান্ডার মধ্যেও ধানের বীজ রোপন করে যাচ্ছি।

হাড় কাপানো শীতের কারণে শ্রমিকের বাজার মন্দা যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অধিকাংশ শ্রমজীবীরা। এসব শ্রমিকের আগে দৈনিক পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া হতো ছয়শ’ টাকা। বর্তমানে কাজ না থাকায় তা চারশ’ টাকায় এসে পৌঁছেছে। তবুও কাজ পাচ্ছেন না অধিকাংশ শ্রমিক। প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত নগরী এসব পয়েন্টগুলোতে জমজমাট থাকে শ্রমিকের বেচাকেনা।

(টিবি/এসপি/জানুয়ারি ২৩, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test